
ছবি : বাংলাবার্তা
আজ বৃহস্পতিবার পবিত্র শবে মিরাজ। ফারসি শব্দ ‘শব’ অর্থ রাত। আর আরবি ‘মিরাজ’ অর্থ, ঊর্ধ্বগমন, আকাশপথে ভ্রমণ করা, সোপান ইত্যাদি। শবে মিরাজ অর্থ উর্ধ্বগমনের রাত।
ইসলাম ধর্মে বছরে যে কয়টি রাত ফজিলতপূর্ণ এর একটি শবে মিরাজ। ২৭ রজব এই রাতটি ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পালিত হয়। সে হিসেবে আজ বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত পবিত্র শবে মিরাজ। মুসলিমরা রাতটি বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে ইবাদত-বন্দেগির মধ্য দিয়ে পালন করেন।
২৭ রজবকে শবে মিরাজ বলা হয়। সাধারণ জনগণের মাঝে প্রসিদ্ধ যে, মিরাজের ঘটনা রজব মাসের ২৭ তারিখে সংঘটিত হয়েছিল। এটি ইতিহাসের একটি বর্ণনার ভিত্তিতে প্রসিদ্ধি লাভ করেছে যার সনদ সহিহ নয়। ২৭ রজব শবে মিরাজের ব্যাপারে হাদিস শরিফ কিংবা কোনো সাহাবির উক্তি দ্বারা প্রমাণিত নয়। তবে নির্ভরযোগ্য সূত্রে শুধু এটুকুই পাওয়া যায় যে, মিরাজের ঘটনা হিজরতের এক বা দেড় বছর আগে সংঘটিত হয়েছিল। নির্দিষ্ট মাস, দিন, তারিখের ব্যাপারে নির্ভরযোগ্য কোনো প্রমাণ নেই।
আলেমগণ বলেছেন, মিরাজের রাত নিঃসন্দেহে একটি বরকতময় রাত। তবে এই রাতে বিশেষ কোনো আমল উম্মতের জন্য আবশ্যক হয়নি তাই এর দিন-তারিখ সুনির্দিষ্টভাবে সংরক্ষিত থাকেনি। (আলমাওয়াহিবুল লাদুন্নিয়াহ ও শরহুল মাওয়াহিবিল লাদুন্নিয়্যাহ ৮/১৮-১৯) তাই এ রাতে বিশেষ আমল। বিশেষ পদ্ধতির নামাজ। রোজা রাখার কোনো বিধান নেই।
সম্মানিত চার মাসের একটি রজব মাস। তাই পুরো মাসই বরকতময়। বরকতময় এ মাসের প্রতিটি দিনই ইবাদত বন্দেগীতে যত্নবান হওয়া উচিত। রজবের ২৭ তারিখ বিশেষভাবে পালন করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
আরও পড়ুন : স্ত্রী স্বামীকে তালাক দেয়ার বিধান
মুমিন বান্দারা মহান আল্লাহর নির্দেশ অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করবে। মহান আল্লাহর নির্দেশ অনুযায়ী জীবন পরিচালনায় রয়েছে সাওয়াব। আর নিজের মনগড়া যতো ইবাদতই করা হয় না কেন- কোন সাওয়াব নেই। বরং উল্টো শাস্তি পেতে হবে।
আরবি বার মাসের মধ্যে রজব মাস সম্মানিত চার মাসের অন্তর্ভূক্ত। মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনে বলেন, ‘নিশ্চয় আসমানসমূহ ও জমিনের সৃষ্টির দিন থেকেই আল্লাহর বিধানে আল্লাহর কাছে গণনায় মাস বারটি, তার মধ্যে চারটি নিষিদ্ধ মাস, এটাই প্রতিষ্ঠিত দ্বীন। কাজেই এর মধ্যে তোমরা নিজেদের প্রতি জুলুম করো না।’ (সুরা তাওবাহ, আয়াত : ৩৬)
উপর্যুক্ত আয়াতে চারটি মাসকে বিশেষভাবে সম্মানিত করা হয়েছে। বিদায় হজের সময় মিনা প্রান্তরে প্রদত্ত খুতবায় প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্মানিত মাসগুলোকে চিহ্নিত করে বলেন, ‘তিনটি মাস হলো ধারাবাহিক—জিলকদ, জিলহজ ও মহররম, অন্যটি হলো রজব।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩১৯৭)
ইসলামী শরীয়তের পরিভাষায় মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা পর্যন্ত ভ্রমণকে ‘ইসরা’ বলা হয়। আর মসজিদুল আকসা থেকে সাত আসমান পেরিয়ে আরশে আজিম ভ্রমণকে ‘মিরাজ’ বলা হয়।
মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে কুরআন ও সুন্নাহ অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করার তাওফিক দান করুন।
বাংলাবার্তা/জেডএইচ