
ছবি: সংগৃহীত
আগামী ৩ আগস্টকে ঘিরে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) বাংলাদেশকে এক ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণের মুখে দেখতে পাচ্ছে। দিনটি শুধু একটি রাজনৈতিক কর্মসূচির উপলক্ষ নয়, বরং একটি বৃহৎ জাতীয় প্রত্যাশার প্রতিফলন হিসেবে দেখছে দলটি। এই উপলক্ষে দেশজুড়ে এনসিপির নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন দলটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন।
শুক্রবার (১ আগস্ট) দলের প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ মিরাজ মিয়া স্বাক্ষরিত এক আনুষ্ঠানিক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই বার্তা পৌঁছে দেওয়া হয় সারাদেশে এনসিপির জেলা, উপজেলা ও তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের কাছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত জুলাই মাসজুড়ে এনসিপি সারা দেশে 'দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা' কর্মসূচি পালন করে। এই পদযাত্রা দেশের নানা প্রান্তে, শহর থেকে গ্রাম, রাস্তা থেকে হাট-বাজার পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। নেতাকর্মীরা সরাসরি সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলেছেন, শ্রমজীবী, কৃষক, দিনমজুর, ছাত্র-ছাত্রী, গৃহিণী ও পেশাজীবীদের দুঃখ-কষ্ট, আশা-আকাঙ্ক্ষা ও প্রস্তাবনা শুনেছেন। সেই ধারাবাহিকতায় ৩ আগস্ট, শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এই সকল কথার প্রতিফলন ঘটবে—ঘোষিত হবে জনগণের বাস্তব চাহিদা ও ভাবনার ভিত্তিতে গঠিত ‘জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদ’-এর বাস্তবায়নমূলক নতুন কর্মসূচি।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, "২০২৪ সালের ৩ আগস্ট, রোববার, শহীদ মিনারে আসছেন এক দফার ঘোষক নাহিদ ইসলাম। বিগত জুলাইয়ের পুরো মাসজুড়ে যেসব চিন্তা, মতামত ও প্রত্যাশা সংগ্রহ করা হয়েছে—তার ভিত্তিতেই তিনি তুলে ধরবেন আগামী বাংলাদেশের রূপরেখা, রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি এবং জুলাই ঘোষণাপত্র ও জাতীয় সনদের প্রেক্ষাপট।"
বিজ্ঞপ্তিতে ৩ আগস্টকে ‘নতুন বাংলাদেশের সূচনাদিন’ বলে উল্লেখ করে বলা হয়েছে, “এই দিনটি হতে যাচ্ছে বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি বাঁকবদলের সময়। এই দিনে মানুষ জানতে পারবে একটি বিকল্প রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি ও ভবিষ্যতের কাঠামো সম্পর্কে, যা গড়ে উঠছে সরাসরি জনগণের কথার ওপর ভিত্তি করে।”
এই কর্মসূচি বাস্তবায়নে দলীয় কাঠামোকে সক্রিয়ভাবে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ৬৪টি জেলা, প্রতিটি উপজেলা ও অঞ্চলভিত্তিক সমন্বয় কমিটিকে স্থানীয় তত্ত্বাবধায়ক ও সাংগঠনিক নেতাদের সঙ্গে সমন্বয় করে এই কর্মসূচি সফলভাবে সম্পন্ন করার আহ্বান জানানো হয়েছে। দলীয় সদস্য সচিব আখতার হোসেন স্পষ্টভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন, যেন এই দিনকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে, জনগণের প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটিয়ে, ঐক্যবদ্ধভাবে একটি কার্যকর রাজনৈতিক বার্তা দেশবাসীর সামনে উপস্থাপন করা হয়।
এনসিপির ভাষ্য অনুযায়ী, ৩ আগস্টের কর্মসূচি হচ্ছে শুধু একটি বক্তৃতা বা মিছিল নয়—বরং এটি একটি নতুন রাজনৈতিক অঙ্গীকার, যার ভেতর দিয়ে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা রচিত হতে পারে।
বিজ্ঞপ্তির শেষাংশে বলা হয়, “আগামী ৩ আগস্ট বাংলাদেশের জন্য নতুন কিছু আসছে। দেখা হচ্ছে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের সন্ধিক্ষণে। এই কর্মসূচি যেন শুধু এনসিপির নয়, বরং সারা দেশের মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিচ্ছবি হয়, সেই চেষ্টাই আমাদের।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ৩ আগস্টের এই কর্মসূচি নিঃসন্দেহে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন হয়ে উঠতে যাচ্ছে এনসিপির জন্য। একই সঙ্গে, রাজনৈতিকভাবে সচেতন নাগরিকদের দৃষ্টি থাকবে শহীদ মিনার অভিমুখে—যেখানে উঠে আসতে পারে একটি নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতার সূচনা।
বাংলাবার্তা/এমএইচ