
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামের আমির, বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. শফিকুর রহমান বর্তমানে হৃদরোগজনিত সমস্যার কারণে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তার হার্টে পাঁচটি ব্লক ধরা পড়েছে, যার মধ্যে তিনটি ব্লক অত্যন্ত গুরুতর। এই ব্লকগুলো অপসারণের জন্য চিকিৎসকরা বাইপাস সার্জারি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
শনিবার (২ আগস্ট) সকালে তাকে রাজধানীর হাসপাতালে নেওয়া হয়। এ সময় জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের এবং দলটির শীর্ষ নেতারা তার সঙ্গে হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন, তার চিকিৎসার অগ্রগতি নিয়ে নজর রাখছেন।
ডা. শফিকুর রহমানের অসুস্থতার খবর প্রথম জানা যায় গত ১৯ জুলাই, যখন তিনি রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জামায়াতের জাতীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দিচ্ছিলেন। হঠাৎ তিনি অসুস্থ বোধ করলে তাকে তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। প্রাথমিক পরীক্ষায় কোনো গুরুতর জটিলতা ধরা না পড়লেও চিকিৎসকরা ধারণা করেছিলেন তিনি ডিহাইড্রেশনে ভুগছেন।
এরপর তার শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় বিভিন্ন পরীক্ষানিরীক্ষা চালানো হয়। সেই পরীক্ষাগুলোর মাধ্যমে জানা যায় যে, তার হার্টে মোট পাঁচটি ব্লক রয়েছে। এর মধ্যে তিনটি ব্লক অত্যন্ত গুরুতর এবং দুটি ব্লক প্রায় ৫০ শতাংশ রোধকৃত। চিকিৎসকরা তিনটি গুরুতর ব্লক অপসারণে বাইপাস সার্জারির সুপারিশ করেন।
বাইপাস সার্জারির জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি চলছে। এ বিষয়ে জামায়াতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ডা. শফিকুর রহমান নিজের চিকিৎসা সম্পর্কে দায়িত্বশীল এবং দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থায় আস্থা রাখছেন। এর আগেও এক মেডিকেল বোর্ড তার বিদেশে চিকিৎসার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি ব্যক্তিগতভাবে দেশের বাইরে না গিয়ে নিজ দেশে চিকিৎসা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এর মূল উদ্দেশ্য দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনা।
জামায়াতের শীর্ষ নেতারা তার পাশে রয়েছেন এবং চিকিৎসা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা নিচ্ছেন। দলের তরফ থেকে প্রতি মুহূর্তে তার অবস্থা সম্পর্কে সর্বশেষ তথ্য প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন তারা।
ডা. শফিকুর রহমানের অসুস্থতা জামায়াত ইসলামের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ সংকেতও বয়ে আনতে পারে। দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতৃত্বের স্বাস্থ্যগত সমস্যা দলের অভ্যন্তরীন কর্মকাণ্ড ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় প্রভাব ফেলতে পারে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মন্তব্য করেছেন। দলের শীর্ষ নেতৃত্বের অবস্থার উন্নতি হওয়া দল ও সমর্থকদের জন্য ইতিবাচক বার্তা হবে।
বাংলাদেশে হৃদরোগের প্রকোপ দিন দিন বাড়ছে এবং এমন সঙ্কটজনক পরিস্থিতিতে দেশের চিকিৎসাব্যবস্থার সক্ষমতা পরীক্ষা হচ্ছিল। দেশের অভ্যন্তরে উচ্চমাত্রার হৃদরোগ চিকিৎসার জন্য উন্নত সরঞ্জাম ও দক্ষ চিকিৎসক রয়েছে, যা ডা. শফিকুর রহমানের মত উচ্চপর্যায়ের রোগীর ক্ষেত্রেও যথাযথ সেবা প্রদানে সক্ষম।
ডা. শফিকুর রহমানের এই সিদ্ধান্ত যে তিনি দেশের চিকিৎসায় আস্থা রাখেন, সেটি চিকিৎসাব্যবস্থার জন্যও একটি বড় ইতিবাচক বার্তা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
জামায়াত আমিরের চিকিৎসা সংক্রান্ত সব উন্নয়ন ও তার সার্জারির ফলাফল দ্রুত সময়ে জানানো হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। এই অবস্থায় রাজনৈতিক মহল ও সাধারণ জনগণ তার দ্রুত আরোগ্য কামনা করছেন।
বাংলাবার্তা/এমএইচ