
ছবি: সংগৃহীত
সোশ্যাল মিডিয়ায় বর্তমানে তারকার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে নানা রকম মন্তব্য ও সমালোচনা খুবই সাধারণ ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। জনপ্রিয়তার কারণে যেকোনো অভিনেতা-অভিনেত্রীর পোস্টে অনায়াসে নেতিবাচক বা অপমানজনক মন্তব্য করা হয় অনেক সময়। অধিকাংশ তারকা এসব মন্তব্যের প্রতি নিরুত্তাপ থাকেন, অনেকে উপেক্ষা করে যান। কিন্তু মাঝে মাঝে কখনো কখনো তারা সরাসরি, পরিণত ও কটাক্ষমুক্ত জবাব দিয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে দেন, যা তুমুল প্রশংসিত হয়।
সম্প্রতি এমনই একটি ঘটনার নায়ক হয়েছেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরী। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে কানাডার মন্ট্রিয়েল শহরে তোলা কিছু প্রাণবন্ত ও হাসিখুশি ছবি শেয়ার করেন তিনি। ছবিগুলোতে দেখা যায় মেহজাবীন বেশ সুখী ও জীবন্ত মেজাজে। এ পোস্টে তাঁর ভক্তরা যেমন উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন, তেমনি কটূক্তি ও অপমানজনক মন্তব্যও কম হয়নি।
একজন নেটিজেন এই ছবি দেখে কটাক্ষ করে মন্তব্য করেন, ‘২ বছর পরে তোমার স্বামী তোমাকে ডিভোর্স দেবে, আমরা অপেক্ষায় আছি।’ এমন অপমানজনক এবং ব্যক্তিগত আক্রমণ সামাজিক মাধ্যমে নেহায়েতই অগ্রহণযোগ্য হলেও, এই ধরনের অবজ্ঞাসূচক মন্তব্য বর্তমানে যেকোনো তারকার জন্য নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এমন কটাক্ষের সামনে চুপ থেকে যায়নি মেহজাবীন। তিনি খুবই পরিপক্ব ও যুক্তিসঙ্গতভাবে জবাব দিয়েছেন, ‘অপেক্ষায় থাকেন। তবে আপনার ফিউচারের জন্য শুভ কামনা।’
এই জবাবে স্পষ্ট হয়ে উঠে তারকা মনের স্থিরতা ও শান্ত প্রতিক্রিয়া। কোনো ধরনের বাজে মন্তব্যকে উত্তেজনায় রূপ না দিয়ে শালীনতা ও সৌজন্য বজায় রেখে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তিনি। মেহজাবীনের এই ভদ্র ও পরিণত প্রতিক্রিয়াটি দ্রুতই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয় এবং ব্যাপক প্রশংসা কুড়ায়।
ভক্ত-অনুরাগীরা মেহজাবীনের এই অনুপ্রেরণামূলক প্রতিক্রিয়াকে প্রশংসা করেছেন। তারা তাঁর সাহসিকতা ও দৃঢ়তাকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং সেই সঙ্গে অপমানজনক মন্তব্যকারীকে তীব্র সমালোচনা করেছেন। অনেকেই লেখেন, সামাজিক মাধ্যমে এমন নেতিবাচকতা বন্ধ হওয়া উচিত এবং তারকারাও মানুষের মতোই সম্মান পেতে অধিকারী।
উল্লেখযোগ্য, মেহজাবীন চৌধুরী গত ফেব্রুয়ারি মাসে দীর্ঘ প্রায় এক দশক প্রেমের পর নির্মাতা আদনান আল রাজীবের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। এ সম্পর্কের বিবাহোত্তর আয়োজন ছিল দেশের বিনোদন ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অনেক সেলিব্রিটি ও ঘনিষ্ঠজনদের উপস্থিতিতে।
মেহজাবীন যিনি গত কয়েক বছরে পর্দায় ‘মালতী’ চরিত্রে দর্শকদের মন জয় করেছেন, তিনি ব্যক্তিগত জীবনেও দৃঢ়তা, স্বচ্ছতা ও পরিণতির প্রতীক হয়ে উঠেছেন। এই সাম্প্রতিক ঘটনা প্রমাণ করে যে, সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যক্তিগত আক্রমণের বিরুদ্ধে পরিপক্ব ও শান্ত প্রতিক্রিয়া দিয়ে নিজের মর্যাদা রক্ষা করা সম্ভব।
বর্তমান ডিজিটাল যুগে যেখানে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনের আঙ্গিকে ব্যাপক প্রভাব ফেলছে, সেখানে তারকা ব্যক্তিত্বদের উপর আক্রমণ এবং ব্যক্তিগত জীবনে নাক গলানো এক বিরাজমান সমস্যা। কিন্তু মেহজাবীনের মত তারকারা যখন পরিপক্ব ও জ্ঞানসঞ্চয়ী জবাব দিয়ে পরিস্থিতি সামলে নেন, তখন তা অন্যদের জন্য এক দৃষ্টান্ত ও শিক্ষা হয়ে দাঁড়ায়।
এমন ধরণের পরিপক্বতা ও মনের দৃঢ়তা তারকা এবং সাধারণ মানুষ—দুজনকেই সম্মান ও মর্যাদা রক্ষায় সহায়তা করে। মেহজাবীনের সাম্প্রতিক এই ঘটনাটি তাই সামাজিক মাধ্যমে শালীনতা ও শ্রদ্ধাশীল মনোভাবের বিকাশের ক্ষেত্রে এক ইতিবাচক উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ