
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ পুলিশের সার্বিক দক্ষতা ও পেশাগত উৎকর্ষ বৃদ্ধির অংশ হিসেবে শতাধিক সাব ইন্সপেক্টর (এসআই) পদোন্নতি পেয়ে ইন্সপেক্টর পদে উন্নীত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের রিক্রুটমেন্ট অ্যান্ড ক্যারিয়ার প্লানিং-২ শাখা থেকে এ বিষয়ে তিনটি পৃথক প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এসব প্রজ্ঞাপন স্বাক্ষর করেছেন বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম।
এই পদোন্নতির মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের কর্মস্পৃহা যেমন বাড়বে, তেমনি মাঠপর্যায়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় নেতৃত্বদানের সক্ষমতাও বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, তিনটি পৃথক ক্যাটাগরিতে সর্বমোট ১১০ জন পুলিশ সদস্যকে ইন্সপেক্টর পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে—
সাব ইন্সপেক্টর অব পুলিশ (নিরস্ত্র) পদ থেকে ইন্সপেক্টর অব পুলিশ (নিরস্ত্র) পদে পদোন্নতি পেয়েছেন ৬০ জন।
সাব ইন্সপেক্টর অব পুলিশ (সশস্ত্র) পদ থেকে স্থানাপন্ন ইন্সপেক্টর অব পুলিশ (সশস্ত্র) পদে পদোন্নতি পেয়েছেন ৪৫ জন।
ট্রাফিক বিভাগে দায়িত্বরত পুলিশ সার্জেন্ট পদে কর্মরত ৫ জনকে স্থানাপন্ন ইন্সপেক্টর অব পুলিশ (শহর ও যানবাহন) পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে।
এই পদোন্নতিগুলো বাংলাদেশ পুলিশের অভ্যন্তরীণ কাঠামোগত উন্নয়নের একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে এক পদে কর্মরত অনেক পুলিশ সদস্যের জন্য এটি একটি স্বস্তির খবর হয়ে এসেছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, পদোন্নতি পাওয়া কর্মকর্তাদের বিষয়ে পরবর্তী প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের এআইজি (পার্সোনাল ম্যানেজমেন্ট-২) বরাবর প্রয়োজনীয় কপি প্রেরণ করা হয়েছে। এতে সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোকে দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে, যাতে পদোন্নতিপ্রাপ্ত সদস্যরা তাদের নতুন পদমর্যাদার দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে পারেন।
পুলিশ প্রশাসনের অভ্যন্তরে এই পদোন্নতিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন অনেক সিনিয়র কর্মকর্তা। দীর্ঘদিন ধরে একই পদে কর্মরত থেকে দায়িত্ব পালন করা পুলিশ সদস্যদের পেশাগত উন্নয়নের সুযোগ সৃষ্টির ক্ষেত্রে এটি বড় এক অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পদ হলো ইন্সপেক্টর। থানার কার্যক্রম পরিচালনা, তদন্ত তদারকি এবং গোয়েন্দা কার্যক্রমে ইন্সপেক্টরদের দায়িত্ব অনেক বেশি। সেক্ষেত্রে দক্ষ ও অভিজ্ঞ এসআইদের এই পদোন্নতি বাহিনীর সক্ষমতা ও জবাবদিহিতার কাঠামোকে আরও মজবুত করবে।
নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, পদোন্নতির এই ধারা অব্যাহত রাখলে মাঠ পর্যায়ে কাজ করা পুলিশ সদস্যদের পেশাদারিত্ব ও নৈতিকতা আরও দৃঢ় হবে। এতে করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় জনগণের আস্থা বৃদ্ধির পাশাপাশি বাহিনীর প্রতি ইতিবাচক মনোভাব গড়ে উঠবে।
উল্লেখ্য, গত কয়েক বছরে বাংলাদেশ পুলিশ প্রশাসনে একাধিক ধাপে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। তবে এই সংখ্যাটি তুলনামূলক বড় পরিসরে হওয়ায় এটি আরও বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে।
এই পদোন্নতি শুধু পদোন্নতিপ্রাপ্তদের জন্য নয়, গোটা পুলিশ বাহিনীর জন্যই একটি প্রেরণাদায়ী মুহূর্ত। এটি প্রমাণ করে, কঠোর পরিশ্রম, নিষ্ঠা ও দায়িত্বশীলতার মূল্যায়ন কখনও বিফলে যায় না। আশাকরা যায়, এই ধারা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে এবং আরও দক্ষ নেতৃত্ব গড়ে উঠবে দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায়।
বাংলাবার্তা/এমএইচ