
ছবি: সংগৃহীত
২০২৫ সালের আগস্টে অস্ট্রেলিয়ার ডারউইনে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে একটি বিশেষ আন্তর্জাতিক চার দলীয় টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট টুর্নামেন্ট—‘টপ এন্ড টি-টোয়েন্টি সিরিজ’। এতে অংশ নিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ‘এ’ দল, যারা এশিয়ার আরও দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দলের সঙ্গে মাঠে নামবে অস্ট্রেলিয়ার কন্ডিশনে নিজেদের ঝালিয়ে নিতে। ইতোমধ্যে অংশগ্রহণকারী দল হিসেবে নিশ্চিত হয়েছে বাংলাদেশ ‘এ’, পাকিস্তান শাহীন্স এবং নেপাল জাতীয় দলের নাম। তবে চতুর্থ দলটি এখনো চূড়ান্ত করা হয়নি বলে জানিয়েছে আয়োজকরা।
সিরিজের সূচি অনুযায়ী, আগামী ১৪ আগস্ট মাঠে গড়াবে টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচ। এই উদ্বোধনী ম্যাচেই মুখোমুখি হবে দুই এশীয় প্রতিদ্বন্দ্বী—বাংলাদেশ ‘এ’ দল ও পাকিস্তান শাহীন্স। টুর্নামেন্টটি আয়োজন করছে অস্ট্রেলিয়ার নর্দার্ন টেরিটরি ক্রিকেট। তারা এর মধ্যেই বিসিবি ও পিসিবিকে আমন্ত্রণ জানিয়ে আয়োজনের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেছে।
এই টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী বলেন, "ডারউইনে আবার ফিরে আসতে পেরে আমরা খুবই আনন্দিত। অস্ট্রেলিয়ার কন্ডিশনে খেলা আমাদের তরুণ খেলোয়াড়দের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ অভিজ্ঞতা। আমরা ১৪ আগস্টের ম্যাচটিকে বিশেষভাবে দেখছি, কারণ এটি তরুণ প্রতিভাদের নিজেদের প্রমাণ করার একটি বড় মঞ্চ।"
গতবারের মতো এবারও আয়োজনটি হচ্ছে নর্দার্ন টেরিটরি ক্রিকেট বোর্ডের পৃষ্ঠপোষকতায়। উল্লেখযোগ্য যে, ২০২৪ সালের আসরেও বাংলাদেশ ‘এ’ দল এই টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েছিল। সেবার তারা ভালো পারফর্ম করেও ফাইনালে হেরে যায় অ্যাডিলেইড স্ট্রাইকার্স একাডেমির কাছে। এবার সেই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়েই আরও শক্তিশালীভাবে ফিরে আসার প্রত্যাশা করছে বিসিবি।
নর্দার্ন টেরিটরি ক্রিকেটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) গ্যাভিন ডোভি বলেন, “পিসিবি ও বিসিবিকে আবার ডারউইনে স্বাগত জানাতে পেরে আমরা গর্বিত। এই টুর্নামেন্ট কেবল খেলাধুলার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি নর্দার্ন টেরিটরি অঞ্চলের ভ্রমণ, জীবনযাপন, কাজ এবং শিক্ষার ক্ষেত্রেও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও আগ্রহ সৃষ্টি করার একটি বড় প্ল্যাটফর্ম। পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও নেপাল—বিশ্বের অন্যতম জনবহুল তিনটি দেশের সরাসরি সম্পৃক্ততা আমাদের এই আয়োজনকে আন্তর্জাতিকভাবে আরও তাৎপর্যপূর্ণ করে তুলছে।”
সিরিজটির বিশেষ দিক হচ্ছে এটি আন্তর্জাতিক পর্যায়ের হলেও মূলত ‘এ’ দল ও উদীয়মান ক্রিকেটারদের জন্য একটি বড় সুযোগ তৈরি করে দেয়। যেখানে তারা আন্তর্জাতিক মানের প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে খেলে নিজেদের ঝালিয়ে নিতে পারে এবং ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত হতে পারে। বিশেষ করে উপমহাদেশীয় দলের তরুণ ক্রিকেটারদের জন্য অস্ট্রেলিয়ান কন্ডিশনে খেলার অভিজ্ঞতা ভবিষ্যতের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে অনেক বড় ভূমিকা রাখে।
সাম্প্রতিক সময়ে বিসিবি বাংলাদেশ ‘এ’ দলকে নিয়মিত আন্তর্জাতিক পরিসরে ম্যাচ খেলার সুযোগ করে দিচ্ছে। এক্ষেত্রে টপ এন্ড সিরিজ একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হয়ে উঠতে পারে। টুর্নামেন্টের চূড়ান্ত সূচি ও ভেন্যু শিগগিরই ঘোষণা করা হবে এবং চতুর্থ দল হিসেবে কোন দল অংশ নেবে, সেটিও নিশ্চিত করা হবে শিগগিরই।
বিশ্লেষকদের মতে, এই ধরনের টুর্নামেন্টে অংশ নেওয়ার মাধ্যমে উদীয়মান খেলোয়াড়রা যেমন নিজেদের পরখ করার সুযোগ পায়, তেমনি ভবিষ্যতে জাতীয় দলে খেলার আগে আন্তর্জাতিক পরিবেশে নিজেদের তৈরি করে নেওয়ার অভিজ্ঞতাও অর্জন করতে পারে। বিশেষ করে বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এমন সুযোগ অত্যন্ত ইতিবাচক বার্তা বহন করে।
এবারের টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের সঙ্গে পাকিস্তান শাহীন্স ও নেপালের মতো প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলো থাকায় প্রতিটি ম্যাচই হবে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ও রোমাঞ্চকর। দর্শকরা উপভোগ করবেন একঝাঁক তরুণ প্রতিভাবান ক্রিকেটারের পারফরম্যান্স, যাদের অনেকেই ভবিষ্যতের আন্তর্জাতিক তারকা হয়ে উঠতে পারে।
সংক্ষেপে টপ এন্ড টি-টোয়েন্টি সিরিজ ২০২৫:
-
স্থান: ডারউইন, অস্ট্রেলিয়া
-
তারিখ: ১৪ আগস্ট থেকে (সম্পূর্ণ সূচি শিগগির ঘোষণা)
-
দলসমূহ: বাংলাদেশ ‘এ’, পাকিস্তান শাহীন্স, নেপাল জাতীয় দল, (চতুর্থ দল অঘোষিত)
-
উদ্বোধনী ম্যাচ: বাংলাদেশ ‘এ’ বনাম পাকিস্তান শাহীন্স
এই টুর্নামেন্ট শুধু একটি ক্রীড়া আয়োজন নয়, বরং এটি আন্তর্জাতিক বন্ধুত্ব ও সাংস্কৃতিক আদান-প্রদানের এক উজ্জ্বল নিদর্শন হিসেবেও বিবেচিত হচ্ছে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ