
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে জল্পনা-কল্পনার শেষ নেই। দীর্ঘদিন লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির এ শীর্ষ নেতা খুব শিগগিরই দেশে ফিরবেন বলে দাবি করেছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন। তার ভাষ্য অনুযায়ী, মাত্র কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই দেশে ফিরে আসবেন তারেক রহমান, আর এই প্রত্যাবর্তন হবে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনের চূড়ান্ত লড়াইয়ে নেতৃত্ব দেওয়ার লক্ষ্যে।
বৃহস্পতিবার সকালে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ মন্তব্য করেন জাহিদ হোসেন। দিনটি ছিল বিশ্ব ফার্মাসিস্ট ডে। ডি-ফ্যাবের সদস্যদের নিয়ে তিনি জিয়াউর রহমানের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এর পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি স্পষ্ট করে জানান, বিএনপির নেতা-কর্মীরা যেমন দিন গুনছেন, আমজনতাও অপেক্ষায় আছেন—কবে দেশে ফিরবেন তারেক রহমান।
ডা. জাহিদ বলেন, “দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই দেশে ফিরবেন। তিনি কেবল দলের নেতা হিসেবেই নয়, বরং দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের শেষ লগ্নে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্যই ফিরবেন। দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের যে ধারা বিএনপি ধরে রেখেছে, তার সমাপ্তি ঘটবে তারেক রহমানের নেতৃত্বেই।”
এ সময় তিনি আরও জানান, বিএনপি অনেক আগেই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। প্রায় দেড় বছর আগে থেকেই দলীয় পর্যায়ে বিভিন্ন কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। মনোনয়ন প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তিনি স্পষ্ট করেন, “এখন পর্যন্ত কাউকে সবুজ সংকেত বা লাল সংকেত দেওয়া হয়নি। বিএনপির মনোনয়ন এখনো খোলা। খুব শিগগিরই প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা তৈরি করা হবে।”
ডা. জাহিদ আরও উল্লেখ করেন, “নির্বাচনী আসনের সংখ্যা অনুযায়ী বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীর সংখ্যা প্রায় ১০ গুণ। এর মধ্য থেকে বাছাই করা হবে কেবল যোগ্য, জনপ্রিয় ও গ্রহণযোগ্য প্রার্থীদের। যেসব প্রার্থী তাদের স্থানীয় জনগণের কাছে বেশি জনপ্রিয়, যাদের গ্রহণযোগ্যতা আছে এবং যেসব জরিপে তাদের শক্তিশালী অবস্থান পাওয়া গেছে, মূলত তাদেরই চূড়ান্তভাবে মনোনয়ন দেওয়া হবে।”
তিনি সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বলেন, বিদেশে অবস্থানরত রাজনৈতিক নেতাদের ওপর হামলা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। বরং এটি আওয়ামী লীগের প্রতিহিংসামূলক রাজনীতির অংশ। সম্প্রতি নিউইয়র্কে বিএনপি নেতাদের ওপর হামলার ঘটনাকে তিনি এর উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেন। তার ভাষায়, “এটি প্রমাণ করে আওয়ামী লীগ এখনও প্রতিহিংসার রাজনীতি ছাড়তে পারেনি। বিরোধী দলের কণ্ঠরোধ করাই তাদের একমাত্র লক্ষ্য।”
দীর্ঘ সময় ধরে বিএনপি যেভাবে আন্দোলন চালিয়ে আসছে, তারেক রহমানের দেশে ফেরা যদি সত্যিই বাস্তবে রূপ নেয়, তবে তা বাংলাদেশের রাজনীতিতে বড় ধরনের মোড় ঘোরানো ঘটনা হিসেবে দেখা হবে বলে রাজনৈতিক মহলে আলোচনা চলছে। অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন, তারেক রহমান দেশে ফিরলে বিএনপি আরও সাহসী হয়ে মাঠে নামবে এবং আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক উত্তাপ আরও বেড়ে যাবে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ