
ছবি: সংগৃহীত
ভারতের কলকাতাভিত্তিক বাংলা দৈনিক ‘এই সময়’–এ প্রকাশিত একটি তথাকথিত সাক্ষাৎকার নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। দলটির দাবি, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কখনোই সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমটির সঙ্গে কোনো সাক্ষাৎকার দেননি। প্রকাশিত সংবাদটি পুরোপুরি ভিত্তিহীন, মনগড়া এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
বৃহস্পতিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক লিখিত বিবৃতিতে বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট তাইফুল ইসলাম টিপু বিষয়টি স্পষ্ট করেন। তিনি জানান, সম্প্রতি ভারতের জনপ্রিয় বাংলা দৈনিক এই সময়–এ “নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টিকে চান ফখরুল” শিরোনামে একটি সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়। সেখানে দাবি করা হয়, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ওই সংবাদপত্রকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। কিন্তু বাস্তবে তিনি কোনো বিদেশি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গেই সাম্প্রতিক সময়ে কোনো সাক্ষাৎকার দেননি।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সংবাদপত্রটির প্রকাশিত তথাকথিত সাক্ষাৎকারটি “ডাহা মিথ্যা ও মনগড়া”। এর মাধ্যমে জনগণকে বিভ্রান্ত করা এবং বিএনপির মহাসচিবসহ পুরো দলকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করা হয়েছে।
বিএনপি দাবি করেছে, এমন একটি সাক্ষাৎকার গঠন করে প্রচার করার উদ্দেশ্য হলো—
-
দল ও দলের মহাসচিবের ভাবমূর্তি নষ্ট করা,
-
জনগণের মনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা,
-
রাজনৈতিকভাবে বিএনপিকে দুর্বল করে উপস্থাপন করা।
তাদের মতে, এটি একটি সুস্পষ্ট রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অংশ। কারণ বিএনপি সব সময়ই বলে আসছে, নিরপেক্ষ নির্বাচনের পূর্বশর্ত হলো একটি নির্দলীয় সরকার গঠন, যেখানে নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসন নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করবে। অথচ ভুয়া সাক্ষাৎকারে এমনভাবে বক্তব্য সাজানো হয়েছে যাতে মনে হয় বিএনপির মহাসচিব সরকার ও একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে দেখতে আগ্রহী।
বিবৃতিতে বিএনপি আরও জানায়, “দেশের জনগণ এবং বিএনপির নেতাকর্মীরা কোনোভাবেই বিভ্রান্ত হবেন না। বিদেশি গণমাধ্যমে প্রচারিত অসত্য সংবাদে কাউকে প্রভাবিত হতে দেওয়া যাবে না।”
এ ধরনের সংবাদ প্রকাশের পর থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়। অনেকেই প্রকাশিত সাক্ষাৎকারের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে থাকেন। তবে বিএনপির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি আসার পর স্পষ্ট হয়, এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা প্রচারণা।
ঘটনাটি রাজনৈতিক মহলেও আলোচনার জন্ম দিয়েছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে এক ধরনের তথ্যযুদ্ধ শুরু হয়েছে। ভুয়া তথ্য, বিকৃত বক্তব্য বা মিথ্যা সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে বিভ্রান্তি তৈরির প্রবণতা বাড়ছে। বিএনপির এই বিবৃতি তারই একটি প্রতিক্রিয়া।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা যেমন অপরিহার্য, তেমনি সাংবাদিকতার ন্যূনতম নীতিমালা ও তথ্য যাচাইয়ের প্রক্রিয়াও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিদেশি গণমাধ্যমে বাংলাদেশের বড় রাজনৈতিক নেতার মিথ্যা সাক্ষাৎকার প্রকাশের ঘটনা কেবল দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কেই প্রশ্ন তোলে না, বরং দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে ভুল ব্যাখ্যার সুযোগ তৈরি করে।
বিএনপির দাবি অনুযায়ী, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কোনো সাক্ষাৎকার এই সময় পত্রিকায় দেওয়া হয়নি। তাই প্রকাশিত সংবাদটি পুরোপুরি অসত্য। দলের পক্ষ থেকে জনগণকে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। পাশাপাশি গণমাধ্যমকেও তথ্য যাচাই ছাড়া এ ধরনের সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য সতর্ক করা হয়েছে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ