
ছবি: সংগৃহীত
ঝিনাইদহের মহেশপুরে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এক অভিনব অভিযানে সোয়া তিন কোটি টাকার চারটি সোনার বারসহ দুই যুবককে আটক করেছে। বিজিবির কাছে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, আটককৃত সোনাগুলো ভারত দেশে পাচারের উদ্দেশ্যে বহন করা হচ্ছিল। ঘটনাটি জেলার নিরাপত্তা ও তল্লাশির ইতিহাসে উল্লেখযোগ্য হিসাবে ধরা হচ্ছে।
শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর আড়াইটার দিকে মহেশপুরের কাকিলাদাড়ী এলাকায় হাজী ডিলাক্স এক্সপ্রেস যাত্রীবাহী বাসে অভিযান চালিয়ে সোনা উদ্ধার করা হয়। এরপর সোনার পাচারে সরাসরি জড়িত সন্দেহে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার খোদ্দরার সৌরভ বিশ্বাস (২৫) এবং তার সহযোগী কোটচাঁদপুর উপজেলার কাগমারী গ্রামের রণজিৎ বিশ্বাস (২৫)-কে আটক করে বিজিবি। অভিযানের সময় একটি মোটরসাইকেল ও একটি মোবাইল ফোনও জব্দ করা হয়।
মহেশপুর ৫৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রফিকুল ইসলাম বলেন, “গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বাসে অভিযান চালানো হয়। সোনার বারগুলো উদ্ধার করা হয়েছে এবং আটককৃতদের সহিত জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তাদের দেওয়া তথ্যের মাধ্যমে রণজিৎ বিশ্বাসকে আটক করা হয়।” তিনি আরও জানান, উদ্ধারকৃত সোনা সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হয়েছে।
বিজিবির অভিযান এবং আটককৃতদের থানায় হস্তান্তরের বিষয়টি মহেশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, “আটক দুই যুবককে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। বিজিবি মামলার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রেখেছে। মামলা দায়েরের পর যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বিজিবির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আটককৃত যুবকরা দীর্ঘদিন ধরে সোনা পাচারে জড়িত ছিল বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। এটি কেবল মহেশপুর সীমান্ত এলাকা নয়, বরং সমগ্র ঝিনাইদহ জেলাতে সীমান্তপালিত অপরাধ দমন অভিযানকে আরও শক্তিশালী করার প্রমাণ।
উল্লেখযোগ্য যে, সাম্প্রতিক সময়ে সোনার পাচার এবং সীমান্ত ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডের ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় বিজিবি বিশেষ নজরদারি চালাচ্ছে। মহেশপুর অঞ্চলে নিরাপত্তা ও প্রতিরোধ কার্যক্রমকে আরও তীব্র করার অংশ হিসেবে এই অভিযানটি ইতিবাচক দৃষ্টান্ত হিসেবে ধরা হচ্ছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, সীমান্ত অঞ্চলে সোনা পাচার রোধের পাশাপাশি, এমন অভিযানের ফলে সাধারণ জনগণের মধ্যে নিরাপত্তা সচেতনতা বৃদ্ধি পাবে এবং অবৈধ লেনদেন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হবে। বিজিবি আশা করছে, আটক দুইজনের মাধ্যমে আরও বড় পাচারের চক্র চিহ্নিত করা সম্ভব হবে।
এই ঘটনার পর মহেশপুর ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় সীমান্ত রক্ষাকারী সংস্থাগুলো সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। বিজিবি জানিয়েছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় এবং অবৈধ সোনা পাচারের ধারা রোধে তারা ভবিষ্যতেও নিয়মিত অভিযান চালাবে।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, আটক দুই যুবককে থানায় হস্তান্তর করার পর মামলার প্রস্তুতি সম্পন্ন হলে দ্রুত আইনগত প্রক্রিয়া অনুসারে তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ