
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পে আজ যাদের নাম উচ্চারিত হয় আস্থার সঙ্গে, তৌহিদুল আলম মিল্কী তাদের অন্যতম। তিনি শুধু একজন সফল উদ্যোক্তা নন, বরং অনেক ভ্রমণপিপাসুর কাছে হয়ে উঠেছেন প্রকৃত ‘ভ্রমণ বন্ধু’। কারণ, তিনি শুধু ভ্রমণের পরিকল্পনা দেন না, দেখান স্বপ্ন— আর সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার পথও খুঁজে দেন।
রাজধানীর একটি ছোট্ট ভবনে হাতে গোনা কিছু প্যাকেজ নিয়ে শুরু হয়েছিল মিল্কীর যাত্রা। কিন্তু স্বপ্ন ছিল অনেক বড়। আলোচিত হন মাত্র ৬৬ হাজার টাকায় মালয়েশিয়া–থাইল্যান্ড–সিঙ্গাপুর ভ্রমণের অসাধারণ অফার দিয়ে। আবার ৬১ হাজার টাকায় মালদ্বীপ কিংবা শ্রীলঙ্কার ট্যুর প্যাকেজ মানুষকে বিশ্বাস করায়— ভ্রমণ কেবল ধনীদের বিলাস নয়, বরং সঠিক পরিকল্পনায় সাধারণ মানুষের হাতের নাগালেই সম্ভব।
আজ তার প্রতিষ্ঠিত ব্র্যান্ড আকাশবাড়ি হলিডেজ দেশের অন্যতম জনপ্রিয় ও বিশ্বস্ত ভ্রমণ সংস্থা। ৬টি অফিস, প্রায় ২০০ জন কর্মী আর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রায় ২০ লাখ অনুসারী তার সাফল্যের সাক্ষ্য বহন করছে। শুধু ব্যবসাই নয়— কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করে তিনি অসংখ্য তরুণের মুখে হাসি ফুটিয়েছেন।
পর্যটনের বাইরেও মিল্কীর আরেকটি উদ্যোগ প্রশংসিত। বিদেশে পড়াশোনার স্বপ্ন দেখা শিক্ষার্থীদের সহায়তায় তিনি দাঁড়ান এক বিশ্বস্ত অভিভাবকের মতো। সামান্য খরচে ভিসা প্রসেসিং, ডকুমেন্টেশন, টিকিট বুকিংসহ সব ধরনের সমন্বয় করে দেন তিনি। যারা একা এসব প্রক্রিয়া সামলাতে ভয় পান, তাদের ভরসার নাম হয়ে উঠেছেন মিল্কী।
কক্সবাজারের টেকনাফে তার গড়া মিল্কী রিসোর্ট এখন আলোচিত একটি নাম। তিন তারকা মানের এই রিসোর্টে পর্যটকদের জন্য রয়েছে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা ও সমুদ্রের কাছাকাছি থাকার অভিজ্ঞতা। এতে বোঝা যায়, কেবল ট্যুর প্যাকেজ নয়— আবাসন খাতেও সমান মনোযোগী তিনি।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে মিল্কী ভীষণ আশাবাদী। তার মতে, শুধু প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নয়— রাতভর বিনোদন, সাংস্কৃতিক আয়োজন, বিচ পার্টি, সঙ্গীত-নৃত্যের অভিজ্ঞতা দিয়েই পর্যটন শিল্পকে নতুনভাবে সাজাতে হবে। এজন্য কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক মানের বিনোদনকেন্দ্র গড়ে তোলার লক্ষ্যে তিনি হাতে নিয়েছেন বিশেষ পর্যটন জোন, ঝুলন্ত ব্রিজ, কেবলকার ও নদীভিত্তিক প্রকল্পের পরিকল্পনা। প্রশাসনিক অনুমোদন ও অর্থায়নের চ্যালেঞ্জ থাকলেও তিনি সেগুলোকে নতুন সম্ভাবনার পথ হিসেবেই দেখেন।
ভ্রমণপ্রেমীরা তাকে ভালোবেসে ডাকে ‘ভ্রমণ বন্ধু’। কারণ তার উদ্দেশ্য কেবল ব্যবসা নয়— মানুষকে আনন্দ, বিশ্রাম আর সহজলভ্য ভ্রমণের অভিজ্ঞতা দেওয়া। বিশ্ব পর্যটন দিবসে তার সবচেয়ে বড় স্বপ্ন হলো— বাংলাদেশের সাধারণ পরিবারগুলোও সীমিত বাজেটে নিরাপদ ও আনন্দময় ভ্রমণ উপভোগ করুক।
তৌহিদুল আলম মিল্কী প্রমাণ করেছেন— পর্যটন শুধু স্বপ্ন নয়, তা বাস্তবও হতে পারে, যদি থাকে সাহস, সৃজনশীলতা আর মানুষের প্রতি আন্তরিকতা।
বাংলাবার্তা/এমএইচ