
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের সাম্প্রতিক পূর্বাভাস অনুযায়ী, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আগামী এক সপ্তাহ ব্যাপী বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের প্রবণতা অব্যাহত থাকবে। বিশেষ করে খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে, যা স্থানীয় জনজীবন ও কৃষি ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলতে পারে।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক জানান, আগামী কয়েকদিনের মধ্যে দেশের চারটি বিভাগে – খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট – ভারী থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে। একই সঙ্গে রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়া এবং হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হতে পারে।
আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, আগামীকাল বুধবার (৩০ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় বজ্রসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গাতেও এই অবস্থা বজায় থাকবে। বিশেষ করে খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও ভারী থেকে মাঝারি বর্ষণ হতে পারে।
পরবর্তী দিনগুলোতে একই ধরণের আবহাওয়ার পূর্বাভাস পাওয়া যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) সন্ধ্যা থেকে শুক্রবার (১ আগস্ট) ও শনিবার (২ আগস্ট) পর্যন্ত ঢাকাসহ ময়মনসিংহ, বরিশাল, চট্টগ্রাম, সিলেট, রংপুর, রাজশাহী ও খুলনার বেশ কিছু এলাকায় বজ্রসহ বৃষ্টি এবং মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে রংপুর, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণের আশঙ্কা রয়েছে।
পাঁচ দিনের মধ্যে সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য পরিবর্তিত হতে পারে। বুধবার ও বৃহস্পতিবার প্রায় অপরিবর্তিত থাকার পর শুক্রবার সামান্য বৃদ্ধি পাওয়া যেতে পারে, আর শনিবার আবার কিছুটা কমতে পারে। বাতাসে অস্থায়ী দমকা হাওয়ার প্রবণতা থাকবে, যা কখনো কখনো ভারী বৃষ্টির সঙ্গে যুক্ত হতে পারে।
মধ্যবিত্ত থেকে ভারী বৃষ্টিপাত এবং বজ্রঝড়ের কারণে সড়কপথে চলাচলে অসুবিধা ও বান্ধব এলাকার বন্যার সম্ভাবনা বাড়তে পারে। কৃষি খাতে বিশেষ সতর্কতা গ্রহণের পরামর্শ দেয়া হয়েছে, কারণ এই ধরনের ভারী বৃষ্টিপাত পোকামাকড় ও ফসলের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
স্থানীয় প্রশাসনকে জরুরি প্রস্তুতি গ্রহণ করে বন্যা প্রবণ এলাকা পর্যবেক্ষণ ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। জনসাধারণকেও বজ্রঝড়ের সময় নিরাপদ স্থানে থাকার এবং অতিরিক্ত সতর্ক থাকার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
অবসর এবং বিনোদনের জন্য বাইরে যাওয়া পরিকল্পনা থাকলে আবহাওয়া পরিস্থিতি মনোযোগ দিয়ে দেখার পরামর্শ আবহাওয়া অধিদপ্তরের। আগামী সপ্তাহ জুড়ে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা অব্যাহত থাকার কারণে পরিকল্পনাগুলো পরিবর্তন হতে পারে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আজকের থেকে আগামী শনিবার পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের প্রভাব পড়তে পারে।
সার্বিকভাবে, দেশের আবহাওয়া পরিসংখ্যান ও পূর্বাভাস বিশ্লেষণে স্পষ্ট যে, এই গ্রীষ্মের শেষ দিকে দেশে অস্থির আবহাওয়া প্রবণতা বৃদ্ধি পাবে। জনজীবন, কৃষি ও পরিবহণ ক্ষেত্রে প্রভাব পড়তে পারে, তাই সর্বোচ্চ সতর্কতা ও প্রস্তুতির প্রয়োজন রয়েছে। আবহাওয়া সংস্থার নিয়মিত আপডেট মনোযোগ দিয়ে অনুসরণ করাই বাঞ্ছনীয়।
বাংলাবার্তা/এমএইচ