
ছবি: সংগৃহীত
গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর নতুন বিমান হামলায় অন্তত ৪৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ১১ জন শিশু রয়েছে এবং অনাহারে প্রাণ হারানো ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা কমপক্ষে ৫ জন বলে জানা গেছে। এই প্রাণহানির ঘটনা ফিলিস্তিন ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোর মধ্যে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
সোমবার আনাদোলু সংবাদ সংস্থার কাছে চিকিৎসকরা জানান, দক্ষিণ গাজার খান ইউনুস এলাকায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় এক ফিলিস্তিনি পরিবারের সাত সদস্য নিহত হয়েছেন। ওই পরিবারের সম্পূর্ণ সদস্যরা হামলার শিকার হয়েছেন যা গাজার চলমান সংঘাতের একটি হৃদয়বিদারক দিক তুলে ধরে।
তবে শুধু পরিবারের উপর নয়, একই Khan Yunus অঞ্চলে ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করা মানুষদের ওপরও গুলি চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এ ঘটনায় অন্তত দুই ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। এ হামলার সময় ত্রাণার্থীদের ওপর হামলা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন লঙ্ঘন হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
মধ্য গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় এক ফিলিস্তিনি শিশুর মরদেহ আল-আউদা হাসপাতালে পৌঁছে দেয়া হয়। হাসপাতালে আরও চারজন আহত অবস্থায় ভর্তি হয়েছেন, যার মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
গাজা সিটিতে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের জন্য স্থাপিত একটি তাঁবুতে হামলায় একই পরিবারের তিনজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ হামলা ফিলিস্তিনিদের মানবিক বিপর্যয়ের প্রতি দৃষ্টিপাত করে এবং তাদের অবর্ণনীয় কষ্টের বহিঃপ্রকাশ।
অপরদিকে, গাজা সিটির দক্ষিণ-পূর্বের জেইতুন এলাকায় ইসরায়েলি হামলায় নয়জন ফিলিস্তিনি নিহত হন, যাদের আটজন শিশু। এই তথ্যটি ফিলিস্তিনিদের শিশুদের ওপর চলমান সহিংসতার উদ্বেগজনক প্রমাণ হিসেবে আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।
এই হামলার ফলে গাজার নাগরিকদের জীবনযাত্রা মারাত্মকভাবে বিপর্যস্ত হয়েছে, বিশেষ করে শিশু, নারী ও বয়স্কদের জীবন ঝুঁকিতে পড়েছে। ফিলিস্তিনের বিভিন্ন হাসপাতালে আহত ও নিহতের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে এবং চিকিৎসা সেবা সীমিত থাকার কারণে পরিস্থিতি আরও জটিল হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ও জাতিসংঘ বিভিন্নবার এই সংঘাতের মধ্যে বেসামরিক জনগণের নিরাপত্তা ও অধিকার রক্ষার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছে। কিন্তু তীব্র হিংসা ও সামরিক অভিযান অব্যাহত থাকায় ফিলিস্তিনি নাগরিকরা প্রতিনিয়ত প্রাণের ভয়ে জীবন কাটাচ্ছেন।
গাজা সংকটের দ্রুত শান্তিপূর্ণ সমাধানের তাগিদ দিয়ে বিশ্ববাসী একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং মানবিক সহায়তার অবাধ প্রবাহের দাবি জানিয়ে আসছে।
তবে সামরিক সংঘাত অব্যাহত থাকায়, এ পর্যন্ত গাজার সাধারণ মানুষদের ওপর হিংসাত্মক অভিযান থামানো সম্ভব হয়নি, যা বিশ্ব সম্প্রদায়ের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে গাজার নাগরিকদের জীবন ও মৌলিক অধিকার রক্ষা করা, আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলা, এবং শান্তি প্রক্রিয়া চালু রাখার প্রয়োজনীয়তা একবারও এত জরুরি ছিল না যতটা এখন।
বাংলাবার্তা/এমএইচ