
ছবি: সংগৃহীত
মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের নতুন দিগন্ত উন্মোচনের লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে মিলিত হয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী দাতুক সেরি আনোয়ার ইব্রাহিম। সফরের দ্বিতীয় দিন আজ মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় (বাংলাদেশ সময় সকাল ৮টার কিছু আগে) মালয়েশিয়ার প্রশাসনিক রাজধানী পুত্রজায়ায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
পুত্রজায়ায় পৌঁছালে মালয়েশিয়ার সামরিক বাহিনীর আনুষ্ঠানিক কুচকাওয়াজের মাধ্যমে ড. ইউনূসকে লাল গালিচা সংবর্ধনা ও গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। উভয় দেশের জাতীয় সংগীত বাজিয়ে অতিথিকে সম্মান জানানো হয়। এরপর দুই নেতা একান্ত বৈঠকে মিলিত হন, যেখানে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান, প্রবাসী কল্যাণ, শিক্ষা ও প্রযুক্তি সহযোগিতাসহ নানা ইস্যুতে আলোচনা হয়।
আলোচনার পরপরই বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হয়। যদিও চুক্তির বিস্তারিত তাৎক্ষণিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি, ধারণা করা হচ্ছে প্রবাসী শ্রমিকদের সুরক্ষা ও প্রশিক্ষণ, বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং যৌথ বিনিয়োগ উদ্যোগে সহযোগিতা বাড়ানোই এ চুক্তির মূল উদ্দেশ্য।
বৈঠক শেষে দুই দেশের নেতা যৌথ সংবাদ সম্মেলনে যোগ দেন। এতে উভয় পক্ষই দীর্ঘদিনের সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কের কথা তুলে ধরে তা আরও জোরদারের প্রতিশ্রুতি দেন। ড. ইউনূস মালয়েশিয়ায় বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের অবদানকে বিশেষভাবে স্বীকৃতি দিয়ে বলেন, “আমাদের প্রবাসীরা দুই দেশের সম্পর্কের সেতুবন্ধন।”
এ সফরে ড. ইউনূস প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় অংশ নেবেন বলে জানা গেছে। এতে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, দক্ষতা উন্নয়ন, আইনগত সুরক্ষা ও সামাজিক সহযোগিতা বিষয়ে আলোচনার সুযোগ থাকবে।
প্রধান উপদেষ্টা গতকাল সোমবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টা ৫০ মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে কুয়ালালামপুরে পৌঁছান। বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাসুতিওন ইসমাইল। এ সময়ও তাকে লালগালিচা সংবর্ধনা ও গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়।
তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফর শেষে আগামীকাল বুধবার ড. ইউনূসের দেশে ফেরার কথা রয়েছে। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এই সফর বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে এবং ভবিষ্যতে আরও বহুমুখী সহযোগিতার পথ সুগম করবে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ