
ছবি: সংগৃহীত
এএফসি অনূর্ধ্ব-২৩ এশিয়ান কাপের মূলপর্বে খেলার স্বপ্ন শেষ হয়ে গিয়েছিল আগেই। তবে বাছাইপর্বের শেষ ম্যাচে অন্তত গর্বের লড়াইয়ে মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ। মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) ভিয়েতনামের ভিয়েত ত্রি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ‘সি’ গ্রুপের ম্যাচে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখিয়ে সিঙ্গাপুরকে ৪-১ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে মোরসালিন-ফাহামেদুলরা। ১২ মিনিটের মধ্যে টানা তিন গোল করে বাংলাদেশ শুধু জয়ই নিশ্চিত করেনি, বরং নিজেদের সেরা খেলাটা উপহার দিয়ে টুর্নামেন্ট শেষ করেছে।
ম্যাচের শুরুতে সিঙ্গাপুরই এগিয়ে যায় আক্রমণে। প্রথমার্ধে তারা একাধিকবার বাংলাদেশের ডিফেন্স ভেদ করার চেষ্টা চালালেও গোলমুখে গিয়ে কার্যকর হতে পারেনি। বাংলাদেশের গোলরক্ষক ও রক্ষণভাগের দৃঢ়তা প্রথমার্ধে স্কোরলাইন শূন্য রাখে। সুযোগ পেলেও বাংলাদেশও আক্রমণে খুব বেশি কার্যকর হতে পারেনি। তাই বিরতিতে যেতে হয় গোলশূন্য অবস্থায়।
বিরতির পর মাঠে নামে ভিন্ন চেহারার বাংলাদেশ। খেলার গতি বাড়িয়ে আক্রমণ বাড়াতে থাকে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। ৭০তম মিনিটে অবশেষে ভাঙে গোলশূন্যতার অচলাবস্থা। প্রায় ২৫ গজ দূর থেকে দুর্দান্ত এক জোরালো শটে গোল করেন ফাহামেদুল ইসলাম। গোলের মাত্র দুই মিনিট পরই ব্যবধান দ্বিগুণ করেন আল আমিন। সতীর্থদের সুন্দর সমন্বয় থেকে পাওয়া বল তিনি জালে পাঠাতে ভুল করেননি।
বাংলাদেশের দাপুটে সময় শুরু হয় এখান থেকেই। ৮০তম মিনিটে কর্নার থেকে আক্রমণ গড়ে সিঙ্গাপুর। কিন্তু সেটি সফলভাবে ঠেকিয়ে দ্রুত পাল্টা আক্রমণে যায় বাংলাদেশ। দারুণ ক্রস থেকে বল পান মহসিন আহমেদ। তিনি ডি-বক্সের ভেতর থেকে কোনাকুনি শটে গোল করে ব্যবধান বাড়ান ৩-০ তে।
দুই মিনিট পরই নাম লেখান দলের সেরা তারকা শেখ মোরসালিন। মাঝমাঠ থেকে বল নিয়ে দারুণ দৌড়ে সিঙ্গাপুরের রক্ষণ ভেঙে ফেলেন তিনি। ডি-বক্সের সামনে একজন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে নিচু শটে গোল করেন তরুণ এই মিডফিল্ডার। ফলে ৮২ মিনিটে স্কোরলাইন দাঁড়ায় ৪-০ তে।
অতিরিক্ত সময়ে সিঙ্গাপুর অবশ্য একটি গোল শোধ দেয়। নাদিম রাহিমের গোলে ব্যবধান কিছুটা কমলেও সেটি ছিল কেবলই সান্ত্বনা। শেষ পর্যন্ত ৪-১ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের মূলপর্বের স্বপ্ন শেষ হয়ে যায় প্রথম দুই ম্যাচেই। গ্রুপের প্রথম ম্যাচে স্বাগতিক ভিয়েতনামের বিপক্ষে ২-০ গোলে হারে তারা। দ্বিতীয় ম্যাচে ইয়েমেনের বিপক্ষে লড়াই করে শেষ মুহূর্তে গোল হজম করে ১-০ ব্যবধানে হারে মোরসালিনরা। টানা দুই হারের ফলে গ্রুপ থেকে উত্তীর্ণ হওয়ার সুযোগ হাতছাড়া হয় বাংলাদেশের।
২০২৬ সালের জানুয়ারিতে সৌদি আরবে বসবে এএফসি অনূর্ধ্ব-২৩ এশিয়ান কাপের মূল আসর। টুর্নামেন্টে খেলবে ১১ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন দল এবং ১১ রানার্সআপের মধ্যে সেরা চারটি দল। তবে সেই তালিকায় জায়গা হয়নি বাংলাদেশের। তবুও শেষ ম্যাচে বড় জয় দলকে আত্মবিশ্বাস জোগাবে ভবিষ্যতের জন্য।
বাংলাদেশের ফুটবলপ্রেমীদের হতাশা থাকলেও শেষ ম্যাচে দলের দাপুটে জয় কিছুটা হলেও স্বস্তি দিয়েছে। বিশেষ করে দ্বিতীয়ার্ধে মাত্র ১২ মিনিটের ঝড়ে তিনটি গোল করার দৃশ্য সমর্থকদের মনে করিয়ে দিয়েছে দেশের তরুণ ফুটবলারদের সম্ভাবনার কথা।
বাংলাবার্তা/এমএইচ