
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ ক্রিকেটের দিক থেকে নতুন এক কিংবদন্তি গড়ে তুলতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ তাইজুল ইসলাম। দেশকে নিয়ে থাকা তার স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষা একদিকে যেমন উচ্চ, অন্যদিকে তার চোখে স্পষ্ট প্রতিযোগিতার ছাপ। দেশের টেস্ট ক্রিকেটে সাকিব আল হাসানের গড়া অলরাউন্ডার রেকর্ড ভাঙতে না পারলেও তাকে ছুঁয়ে যাওয়ার পথে এগিয়ে যাচ্ছেন তাইজুল। তার কণ্ঠে উঠে এসেছে জাতীয় দলের প্রতি নিবেদিত প্রতিজ্ঞা ও দীর্ঘকাল খেলার আশা।
কলম্বোর প্রথম টেস্টে শ্রীলংকার বিপক্ষে তাইজুল ইসলাম তার স্পিন দক্ষতায় শিহরণ সৃষ্টি করেছেন। প্রথম ইনিংসে পাঁচ উইকেট শিকার করে তিনি প্রমাণ করলেন যে, বাংলাদেশের বাঁহাতি স্পিন বোলিংয়ে রয়েছে বিশাল সম্ভাবনা। এই পাঁচ উইকেটের মাধ্যমে তাইজুল সাকিব আল হাসানের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দুই বাঁহাতি স্পিনার হিসেবে বিদেশের মাঠে টেস্টে পাঁচবার ইনিংসে পাঁচ উইকেট নেওয়ার কীর্তি অর্জন করলেন। এই তালিকায় প্রথম দুজন হিসেবে তাদের নাম উঠেছে, যেখানে তাইজুল সাকিবকে ছাড়িয়ে যেতে অপেক্ষা করছেন।
তাইজুলের জন্য এই অর্জন কেবলই শুরু। কলম্বোতে মিডিয়াকে তিনি জানান, “আমার একটাই লক্ষ্য, যত দিন বাংলাদেশ ক্রিকেটের হয়ে খেলব, দেশের জন্য ভালো কিছু করতে পারি। জাতীয় প্রতিনিধিত্ব করা আমার গর্বের বিষয়।” স্পষ্ট ভাষায় তাইজুল বোঝাতে চেয়েছেন, তিনি শুধু ব্যক্তিগত সফলতায় থেমে থাকবেন না, দলের সেবাতেও নিবেদিত থাকবেন।
সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনা নিয়ে তাইজুল বলেন, “আমরা পেশাদার ক্রিকেটার। সাকিব ভাইয়ের মতো কিংবদন্তিদের ছাড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ তো সবসময়ই থাকে। পারলে ভালো, না পারলেও নিজেকে ন্যায়বিচার করা উচিত। সাকিব ভাই আমাদের ক্রিকেটের জন্য এক বিশাল নাম এবং মাইলফলক।” তিনি নিজের লক্ষ্য নিয়ে দৃষ্টান্তমূলক বক্তব্য রেখেছেন যে, বড় ক্রিকেটারদের ছুঁয়ে যাওয়ার সঙ্গে নিজেকে আরও উন্নত করার চেষ্টা অব্যাহত রাখবেন।
তবে খেলায় সবসময় জয়-পরাজয় থাকে। কলম্বোর টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ ২১১ রান পিছিয়ে থেকে শুরু করেও মাত্র ১১৫ রান তুলতে সক্ষম হয়েছে, আর সেই সময়ে ৬ উইকেট হারিয়েছে। তাইজুল ও টেলএন্ডারের ব্যাট হাতে সংগ্রহ প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠেছে। দলের অবস্থা বর্তমানে কঠিন এবং এই পরিস্থিতি মেনে নিয়েছেন তাইজুল নিজেও। “আমাদের খারাপ পারফরম্যান্সই এই ফলাফল ডেকে এনেছে,” তিনি বলেন। তিনি দলের অনুশীলন ও মানসিকতাকে আরও শক্তিশালী করার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন।
আগামীদিনে বাংলাদেশকে ৯৬ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দিতে হবে, যা স্পষ্টতই কঠিন। ক্রিজে আছেন মাত্র একজন ব্যাটার, লিটন দাস, বাকি সবাই টেলএন্ডারদের ওপর ভরসা করতে হচ্ছে। তাইজুল আশা প্রকাশ করেছেন, দলের বাকিরাও নিজেদের দায়িত্ব বুঝবে এবং লড়াই চালিয়ে যাবে।
তাইজুল ইসলামের এমন মনোবল ও উচ্চাকাঙ্ক্ষা বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য একটি শক্তিশালী বার্তা বহন করছে। দেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা তাঁর এই মনোভাব ও অবদানের প্রশংসা করছেন। এক সময় হয়তো নতুন এই কিংবদন্তিই বাংলাদেশ ক্রিকেটের ইতিহাসে সাকিব আল হাসানের পরবর্তী নাম হয়ে উঠবেন — যা দেশীয় ক্রিকেটের জন্য একটি গর্বের অধ্যায়।
বাংলাবার্তা/এমএইচ