
ছবি: সংগৃহীত
আগামী বছরের ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ঢালিউডের অন্যতম আলোচিত ও বড় বাজেটের একটি নতুন চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন ঢালিউড সুপারস্টার শাকিব খান। যদিও সিনেমাটির নাম, গল্প বা কাস্টিং– এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়নি, তবুও তা নিয়ে ইতিমধ্যেই বিনোদন অঙ্গনে শুরু হয়ে গেছে ব্যাপক আলোচনা। আর সেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে একটি প্রশ্ন—এই সিনেমার জন্য শাকিব খান কি ৩ কোটি টাকা পারিশ্রমিক নিচ্ছেন?
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে, শাকিব খান নাকি তার আসন্ন ঈদ সিনেমার জন্য তিন কোটি টাকা পারিশ্রমিক নিচ্ছেন। ঢালিউডের ইতিহাসে একক কোনো অভিনেতার জন্য এত পারিশ্রমিক নজিরবিহীন—এমন মন্তব্যও ঘুরে বেড়াচ্ছে ফেসবুক-টুইটারে।
তবে এই দাবিকে গুজব এবং ভিত্তিহীন বলে নাকচ করে দিয়েছেন সিনেমাটির পরিচালক আবু হায়াত মাহমুদ। তিনি বিষয়টি স্পষ্ট করে বলেন, “ফেসবুকে তো অনেক কিছুই ছড়ায়। যার যা খুশি লিখে দিলেই সেটা লিখে দেয়। কিন্তু সেটা আসল সত্য কি না, তা যাচাই করা দরকার। আমি দর্শকদের অনুরোধ করব—এমন গুজবে কান না দিতে।”
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পরিচালক আরও জানান, “এই মুহূর্তে আমরা ছবির বাজেট বা শাকিব খানের পারিশ্রমিক—এই বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলছি না। যতটুকু দরকার, প্রযোজক ও সংশ্লিষ্টরা ইতিমধ্যে জানিয়েছেন। বাকি সবকিছু সময়মতো জানানো হবে।”
নির্মাতা আবু হায়াত মাহমুদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, শাকিব খানের বিপরীতে এবার কি কলকাতার মধুমিতা সরকারকে দেখা যাবে? কারণ, ইতিপূর্বে শাকিব-মধুমিতা জুটির সম্ভাবনা নিয়ে গুঞ্জন ছড়িয়েছে। তবে এ প্রসঙ্গেও পরিচালক কোনো মন্তব্য করেননি।
তিনি বলেন, “চূড়ান্ত ঘোষণা না আসা পর্যন্ত এসব বিষয় নিয়ে কিছু বলতে চাই না। আমাদের টিম এখন সিনেমাটির প্রি-প্রোডাকশন নিয়ে ব্যস্ত। চুক্তি, প্রস্তুতি, পরিকল্পনা—সব চলছে। খুব শিগগিরই আমরা অফিশিয়ালি সব জানাব।”
ঢালিউড ঘনিষ্ঠ একাধিক সূত্র জানিয়েছে, বর্তমানে শাকিব খান বাংলাদেশের সবচেয়ে পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত নায়ক। কয়েক বছর আগেও যেখানে তার পারিশ্রমিক ছিল ৮০ লাখ থেকে ১ কোটি টাকার মধ্যে, এখন তা দেড় কোটি ছাড়িয়ে গেছে।
সর্বশেষ সিনেমার চুক্তিতে নাকি তিনি দুই কোটিরও বেশি পারিশ্রমিক নিচ্ছেন। এই অঙ্কই দেশের সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির জন্য একটি রেকর্ড।
তবে আলোচনার সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে—সাইনিং মানি। জানা গেছে, সিনেমায় কাজ শুরুর আগেই শাকিবের সাইনিং মানি হিসেবে দেয়া হয়েছে প্রায় ১ কোটি টাকা। এটি এখন পর্যন্ত ঢালিউডে কোনো অভিনেতাকে দেয়া সর্বোচ্চ সাইনিং মানির রেকর্ড বলেই দাবি করছেন সংশ্লিষ্টরা।
পরিচালক সূত্রে জানা গেছে, সিনেমাটির স্ক্রিপ্ট প্রায় চূড়ান্ত। বর্তমানে চলছে লোকেশন রেকি, কস্টিউম ডিজাইন ও লুক টেস্ট। শুটিং শুরু হবে আগামী অক্টোবর নাগাদ। এরপর ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে থাকবে টানা শুটিং। মুক্তির লক্ষ্য রাখা হয়েছে ২০২৬ সালের ঈদুল ফিতর।
নির্মাতা বলেন, “আমরা চাইছি, এই সিনেমা ঢালিউডে একটি নতুন উদাহরণ তৈরি করুক—বাজেট, নির্মাণশৈলী ও দর্শক আকর্ষণে।”
এই মুহূর্তে ঢালিউডে সবচেয়ে আলোচিত তারকা শাকিব খান। বয়স পেরোলেও তার তারকাখ্যাতি কমেনি বরং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তার জনপ্রিয়তা যেন আরও বিস্তৃত হয়েছে। প্রযোজক-পরিচালকদের কাছে তার বাজারমূল্য আগের চেয়ে বেড়েছে বহুগুণ।
তবে সমালোচকদের মতে, এত বিপুল পারিশ্রমিক নিশ্চিত করার পর নির্মাতা যদি গল্প, নির্মাণ ও গান-সংগীতের মান ঠিক রাখতে না পারেন, তাহলে বড় বাজেটও দর্শক টানবে না।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ‘শাকিব খানের ৩ কোটি টাকার পারিশ্রমিক’ খবরটি যে নিছক গুজব এবং বাস্তবতা থেকে অনেক দূরে, তা বলাই যায়। তবে এটা সত্যি যে, শাকিব বর্তমানে দেশের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত অভিনেতা, এবং তার নতুন সিনেমার জন্য তার পারিশ্রমিক নতুন এক উচ্চতায় পৌঁছেছে।
সবকিছু মিলিয়ে এই সিনেমাটি ঢালিউডে নতুন এক মাইলফলক হিসেবে তৈরি হতে পারে—যদি নির্মাণের প্রতিটি ধাপে থাকে পেশাদারিত্ব ও দর্শক-সংলগ্নতা। এখন দেখার বিষয়, আলোচনা ও গুঞ্জনের এই ঢেউ শেষ পর্যন্ত কীভাবে বাস্তব সিনেমার পর্দায় প্রতিফলিত হয় ৃ
বাংলাবার্তা/এমএইচ