
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ, রক্তাক্ত জুলাই আন্দোলনের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশ হাইকমিশনে ‘জাস্টিস ফর জুলাই ইউকে’ নামক সংগঠন একটি প্রণোদনামূলক ও দীর্ঘমেয়াদী কর্মসূচির অংশ হিসেবে স্মারকলিপি প্রদান করেছে। এই স্মারকলিপিতে তারা ১৩ দফা দাবি এবং ‘জুলাই সনদ’ বাস্তবায়নসহ প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটাধিকার নিশ্চিতকরণের জন্য সুপারিশ তুলে ধরেন।
১৩ জুলাই, লন্ডনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বাংলাদেশ হাইকমিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারি মো. ওয়ারিসুল ইসলাম-এর সঙ্গে সংগঠনের শীর্ষ নেতারা দীর্ঘ আলোচনায় অংশ নেন। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ‘জাস্টিস ফর জুলাই ইউকে’র সভাপতি মুহাম্মদ আমিন উদ্দিন, সেক্রেটারি আবু তালহা, সহকারী সেক্রেটারি কামরুল ইসলাম নাসিম, অর্গানাইজিং সেক্রেটারি মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন গাজী, অর্থ সম্পাদক আব্দুল হাই সুফিয়ান, সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার সেক্রেটারি আবুল খায়ের, মিডিয়া ও পাবলিকেশন সেক্রেটারি জাফর ইমরান এবং সহকারী অর্থ সম্পাদক মিজানুর রহমান।
এই স্মারকলিপি বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জন্য পৃথক পৃথক কপি প্রদান করা হয়েছে, যাতে তা যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছে যায় বলে হাইকমিশনের পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
স্মারকলিপির মাধ্যমে ‘জাস্টিস ফর জুলাই ইউকে’ সংগঠন বাংলাদেশের রক্তক্ষয়ী ৩৬ জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও এর বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অধিকার ও মর্যাদা রক্ষায় বিভিন্ন প্রস্তাব এবং ১৩ দফা দাবি উপস্থাপন করে। তারা উল্লেখ করেন, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে প্রবাসী বাংলাদেশিরা এই আন্দোলনের সঠিক মূল্যায়ন ও শ্রদ্ধা পাওয়ার বিষয়ে উদ্বিগ্ন। আন্দোলনের বীরত্ব ও ইতিহাস সুরক্ষায় ‘জুলাই সনদ’ ঘোষণা অত্যন্ত জরুরি বলে তারা দাবি করেন।
সংগঠনের নেতারা বলেন, “আমরা যে স্বাধীনতা ও মুক্ত মত প্রকাশের সুযোগ পাচ্ছি, তা সবাই জানে এই জুলাই আন্দোলনের বীর সেনানীদের সাহসী লড়াইয়ের কারণেই সম্ভব হয়েছে। তাই তাদের অবদানকে সম্মান জানানো এবং আগামী প্রজন্মের কাছে ইতিহাস সংরক্ষণের জন্য ‘জুলাই সনদ’ বাস্তবায়ন জরুরি।”
তারা আরও জোর দিয়ে বলেন, “প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটাধিকার নিশ্চিতকরণ আমাদের অন্যতম মূল দাবি। বিদেশে বসবাসকারী নাগরিকরাও দেশের সুশাসন ও নির্বাচনে অংশগ্রহণের অধিকার রাখে এবং এটি তাদের নাগরিক দায়িত্ব ও অধিকার উভয়েরই অংশ।”
এই দীর্ঘমেয়াদী উদ্যোগ প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে মানবাধিকার সচেতনতা ও গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে নেওয়া হয়েছে। সংগঠনটি আশা প্রকাশ করে যে বাংলাদেশের সরকার দ্রুত ‘জুলাই সনদ’ ঘোষণা ও প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিতকরণের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেবে।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে প্রবাসী নাগরিকদের অবদান সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য ‘জাস্টিস ফর জুলাই ইউকে’ ভবিষ্যতেও বিভিন্ন কর্মসূচি পরিচালনা করবে বলে জানিয়েছে।
এই স্মারকলিপি ও বৈঠক প্রমাণ করে যে, প্রবাসী বাংলাদেশিরা তাদের দেশের গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষায় একাত্মতা ও সচেতনতার মাধ্যমে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
এইভাবে, যুক্তরাজ্যে ‘জাস্টিস ফর জুলাই ইউকে’ সংগঠন বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ ইতিহাস ও প্রবাসী অধিকার রক্ষায় সক্রিয় ভূমিকা রেখে সরকারের প্রতি তাদের দাবিগুলো জোরদার করেছে। এখন দেখার বিষয়, কত দ্রুত এই দাবি বাস্তবায়নে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়।
বাংলাবার্তা/এমএইচ