৪৭তম বিসিএস প্রিলিমিনারি ফল কবে প্রকাশ হবে

বাংলাদেশের সরকারি চাকরিতে আগ্রহী প্রার্থীদের জন্য বছরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হলো সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) পরিচালিত বিসিএস পরীক্ষা। ২০২৪ সালের ৪৭তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা গত ১৯ সেপ্টেম্বর দেশব্যাপী অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের ৮টি বিভাগীয় শহরের ২৫৬টি কেন্দ্রে এই পরীক্ষা নেওয়া হয়। এতে অংশ নেন মোট ৩,৭৪,৭৪৭ জন প্রার্থী, যা একদিকে যেমন বিসিএসের জনপ্রিয়তা প্রমাণ করে, অন্যদিকে এই বিপুলসংখ্যক প্রার্থীর জন্য ফলাফলের অপেক্ষা দীর্ঘসময় ধরে মানসিক চাপের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

৪৭তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার আয়োজন ছিল পেশাগত এবং প্রযুক্তিগত দিক থেকে অত্যন্ত সুসংগঠিত। পিএসসি সূত্র জানায়, পরীক্ষা কেন্দ্রগুলোতে শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বজায় রাখা হয়েছে, যাতে কোনো ধরনের অনিয়ম না ঘটে। পরীক্ষার প্রশ্নপত্র দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠানোর আগে নিরাপদে সংরক্ষণ ও পরিবহণ নিশ্চিত করা হয়।

পিএসসির রোডম্যাপ অনুযায়ী, প্রিলিমিনারি পরীক্ষার পরবর্তী ধাপ হলো ফলাফলের প্রকাশ। যদিও পিএসসি আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফলের চূড়ান্ত তারিখ ঘোষণা করেনি, তবে সূত্রের তথ্য অনুযায়ী ২৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ফল প্রকাশের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

পিএসসির এক কর্মকর্তা শনিবার রাতে জানিয়েছেন, “ঝুলে থাকা বিসিএস পরীক্ষাগুলো রোডম্যাপ অনুযায়ী শেষ করার পথে এগোচ্ছে কমিশন। ৪৪তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল পূর্বনির্ধারিত সময়ের আগেই প্রকাশ করা হয়েছিল। ৪৫তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার ফলও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রকাশ করা সম্ভব হয়েছে। ৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে এবং ফল প্রকাশের কাজ চলছে। এখন ৪৭তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে, তাই আমরা রোডম্যাপ অনুযায়ী ২৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রিলির ফল প্রকাশ করতে পারব।”

৪৭তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র তুলনামূলকভাবে কঠিন ছিল। কিছু প্রশ্ন নিয়ে প্রার্থীদের মধ্যে আপত্তিও দেখা দিয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে বিসিএস পরীক্ষার প্রশ্নপত্র পর্যবেক্ষণ করা শিক্ষক ও চাকরিপ্রার্থীরা বলছেন, এইবার কাটমার্ক হতে পারে ১১০-১১৫ নম্বর। অর্থাৎ প্রাথমিকভাবে লিখিত পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত হতে হলে প্রার্থীর কমপক্ষে ১১০ নম্বর পাওয়া জরুরি হতে পারে।

২০২৪ সালের ২৮ নভেম্বর পিএসসি ৪৭তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। এই বিসিএসের মোট শূন্য ক্যাডার পদের সংখ্যা ৩,৪৮৭। এছাড়া নন-ক্যাডার পদের সংখ্যা ২০১, যা মিলিয়ে মোট ৩,৬৮৮ জন প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়া হবে। এই সংখ্যা এবং বিসিএসের কঠিন পরীক্ষা প্রমাণ করছে যে, সরকারি চাকরির জন্য প্রতিযোগিতা কেবল বৃদ্ধি পাচ্ছে।

প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর প্রার্থীরা তাদের নির্বাচিত হওয়ার সম্ভাব্যতা এবং লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য প্রস্তুত হতে পারবেন। পিএসসি জানিয়েছে, ফলাফল প্রকাশের পর শিক্ষার্থীরা অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে ফলাফল যাচাই করতে পারবেন।

৪৭তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা এবং ফলাফলের রোডম্যাপ নিম্নরূপ:

বাংলাদেশে সরকারি চাকরির স্বপ্ন দেখেন এমন প্রার্থীদের জন্য ৪৭তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফলাফল আশা এবং উত্তেজনার মিশ্রণ নিয়ে আসবে। পরীক্ষার কঠিনতা, বিপুলসংখ্যক অংশগ্রহণকারী এবং সরকারি কর্ম কমিশনের নির্দিষ্ট রোডম্যাপ অনুসরণ—সব মিলিয়ে এটি প্রার্থীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। ২৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যেই ফল প্রকাশের সঙ্গে সাথে প্রার্থীরা লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি শুরু করতে পারবেন।