
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশি নাগরিকদের জন্য আয়কর রিটার্ন দাখিলে নতুন সুবিধা ঘোষণা করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ২০২৫-২৬ করবর্ষ থেকে এ শ্রেণির করদাতাদের অনলাইনে বা ই-রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাধকতা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ, তারা চাইলে অনলাইনে রিটার্ন জমা দিতে পারবেন, তবে তা বাধ্যতামূলক নয়।
এনবিআরের বিশেষ এই সিদ্ধান্ত গত ৪ আগস্ট থেকে কার্যকর হয়েছে, যা দেওয়া হয়েছে আয়কর আইন, ২০২৩-এর ধারা ৩২৮(৪) অনুযায়ী প্রদত্ত ক্ষমতাবলে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, অনলাইনে রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাধকতা থেকে অব্যাহতি পাওয়া করদাতারা কাগজে রিটার্ন জমা দিতে পারবেন এবং চাইলে ই-রিটার্নের সুবিধাও গ্রহণ করতে পারবেন।
এনবিআরের নতুন বিশেষ আদেশে অনলাইনে রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাধকতা থেকে অব্যাহতি পাওয়া করদাতাদের তালিকায় শুধু বিদেশি নাগরিকই নন, আরও কয়েকটি শ্রেণি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে— ৬৫ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সের প্রবীণ করদাতা, শারীরিকভাবে অক্ষম বা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন করদাতা (যাদের সরকারি স্বীকৃত সনদপত্র রয়েছে), বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি করদাতা, মৃত করদাতার পক্ষে আইনগত প্রতিনিধি, বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশি নাগরিক।
এদের কেউই বাধ্যতামূলকভাবে ই-রিটার্ন দাখিল করতে হবে না, তবে ইচ্ছা করলে অনলাইনে তা জমা দেওয়া যাবে।
এনবিআরের নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, যদি কোনো করদাতা প্রযুক্তিগত বা নিবন্ধনজনিত কারণে ই-রিটার্ন দাখিল করতে না পারেন, তবে ৩১ অক্টোবরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট উপকর কমিশনারের কাছে আবেদন করতে হবে। আবেদনপত্রে যৌক্তিক কারণ উল্লেখ করতে হবে এবং অনুমোদন পেতে হবে অতিরিক্ত বা যুগ্ম কর কমিশনারের কাছ থেকে। অনুমোদন পেলে ওই করদাতা কাগজে রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন।
গত কয়েক বছরে এনবিআর করদাতাদের জন্য ই-রিটার্ন ব্যবস্থা বাধ্যতামূলক করার পদক্ষেপ নিয়েছিল, যাতে কর ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা, গতি এবং জটিলতা কমানো যায়। তবে কিছু শ্রেণির করদাতাদের জন্য এ প্রক্রিয়া প্রযুক্তিগত বা বাস্তবিক কারণে জটিল হয়ে দাঁড়ায়। বিশেষ করে বিদেশি নাগরিকদের ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) না থাকার কারণে ই-রিটার্ন নিবন্ধন প্রক্রিয়া অনেক সময় দীর্ঘ ও জটিল হয়ে যায়। এ বিষয়গুলো বিবেচনা করেই এনবিআর এ ধরনের করদাতাদের জন্য বিশেষ ছাড় ঘোষণা করেছে।
কর বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এ পদক্ষেপ বিদেশি বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের পরিবেশকে আরও সহায়ক করবে, কারণ বিদেশি পেশাজীবীদের জন্য কর দাখিল প্রক্রিয়ায় অপ্রয়োজনীয় জটিলতা কমে আসবে। একইসঙ্গে, প্রবীণ ও শারীরিকভাবে অক্ষম করদাতাদের জন্যও এটি এক ধরনের স্বস্তির খবর।
বাংলাবার্তা/এসজে