
ছবি: সংগৃহীত
ফুটবলের ইতিহাসে এক অনন্য মুহূর্তের সাক্ষী হতে চলেছে বিশ্ববাসী। আগামী ২০২৬ সালের ১১ জুন থেকে শুরু হচ্ছে ফিফা বিশ্বকাপ, যা ইতিহাসে প্রথমবার একসঙ্গে তিনটি দেশ—আমেরিকা, কানাডা এবং মেক্সিকো যৌথভাবে আয়োজন করবে। এ বছরের সবচেয়ে বড় চমক হলো ৪৮টি দেশের অংশগ্রহণ, যা এখনো পর্যন্ত বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ। সেই সঙ্গে, ফুটবলপ্রেমীদের জন্য উন্মোচিত হয়েছে টুর্নামেন্টের অফিসিয়াল ম্যাচ বল ‘ট্রাইওন্ডা’, যা ফুটবলের ইতিহাসে নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।
নিউ ইয়র্কের ব্রুকলিন পার্কে অনুষ্ঠিত একটি জমকালো অনুষ্ঠানে প্রথমবারের মতো প্রদর্শিত হলো ‘ট্রাইওন্ডা’। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ফুটবল বিশ্বের পাঁচ কিংবদন্তি— জার্মানির ইয়ুরগেন ক্লিন্সম্যান, ব্রাজিলের কাফু, ইতালির দেল পিয়েরো, স্পেনের জাভি এবং ফ্রান্সের জিনেদিন জিদান। অনুষ্ঠান চলাকালীন জিদানের হাতে ধরানো হয়েছিল নতুন বল ‘ট্রাইওন্ডা’, আর অন্য কিংবদন্তিরা নিজেদের সেই বছরের অফিসিয়াল বিশ্বকাপ বল হাতে ধরেছিলেন, যেসময় তারা বিশ্বকাপ জিতেছিলেন।
বলটি তৈরি করেছে ক্রীড়া সরঞ্জাম প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান অ্যাডিডাস, যারা টানা ১৫তমবার বিশ্বকাপের অফিসিয়াল বল তৈরি করল। ১৯৭০ সাল থেকে অ্যাডিডাসই বিশ্বকাপের অফিসিয়াল বল সরবরাহ করে আসছে। ফিফার সভাপতি জিয়ান্নি ইনফ্যান্টিনো জানিয়েছেন, ‘২০২৬ সালের বিশ্বকাপের বলের নকশায় তিনটি আয়োজক দেশকে একত্রে তুলে ধরা হয়েছে।’
নতুন বলের নাম ‘ট্রাইওন্ডা’। এখানে ‘ট্রাই’ শব্দটির অর্থ ‘তিন’ এবং ‘ওন্ডা’ মানে ‘ঢেউ’। বলটিতে তিনটি রং ব্যবহার করা হয়েছে— লাল আমেরিকার প্রতীক, নীল কানাডার প্রতীক এবং সবুজ মেক্সিকোর প্রতীক। পাশাপাশি, বলের নকশায় প্রতিটি দেশের বিশেষ চিহ্ন ফুটে উঠেছে— আমেরিকার তারা, কানাডার ম্যাপল লিফ এবং মেক্সিকোর ঈগল।
‘ট্রাইওন্ডা’তে রয়েছে অত্যাধুনিক সেন্সর সিস্টেম, যা ভিএআর (VAR) প্রযুক্তি-কে আরও নিখুঁত করবে। বলের ভিতরে থাকা সেন্সরগুলো অফসাইড, গোল বা হ্যান্ডবলের মতো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত দ্রুত ও সহজভাবে নেওয়ার সুবিধা দেবে। ফিফা জানিয়েছে, নতুন বলের গঠন ও লোগো খোদাই এমনভাবে করা হয়েছে যাতে গোলরক্ষকদের বল ধরতে কোনো সমস্যা না হয় এবং খেলার স্বাভাবিক গতিপ্রবাহ বজায় থাকে।
২০২৬ বিশ্বকাপের প্রারম্ভিক ম্যাচ ১১ জুন এবং ফাইনাল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে ১৯ জুলাই। তিন দেশের যৌথ আয়োজনে এটি হবে ইতিহাসে এক অভূতপূর্ব টুর্নামেন্ট। নতুন প্রযুক্তি সম্বলিত, রঙিন ও প্রতীকপূর্ণ ‘ট্রাইওন্ডা’ বলের মাধ্যমে ফুটবলপ্রেমীরা আশা করছেন এক নতুন অভিজ্ঞতা, যা মাঠে উত্তেজনা ও দর্শকদের উচ্ছ্বাস আরও বৃদ্ধি করবে।
বিশ্বকাপের এই বিশেষ মুহূর্ত ফুটবলের দুনিয়ায় নতুন ইতিহাস রচনা করবে—চূড়ান্ত উত্তেজনা, আধুনিক প্রযুক্তি, নতুন রঙের বল এবং তিন দেশের সমন্বয়িত আয়োজন সব মিলিয়ে ফুটবলপ্রেমীদের জন্য এক অবিস্মরণীয় অধ্যায় অপেক্ষা করছে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ