
ছবি: বাংলাবার্তা
দুজন একসাথে বসে খাচ্ছিল। একজনের কাছে ছিল পাঁচটা রুটি আর অন্যজনের কাছে ছিল তিনটা রুটি। তারা যখন খেতে শুরু করল, তৃতীয় একজনও তাদের খাবারে এসে শরীক হয়ে গেল।
খাবার থেকে অবসর হয়ে তৃতীয় ব্যক্তি তার পকেট থেকে আট দিরহাম বের করে তাদের সামনে রাখল এবং বলল, এটা আমার পক্ষ থেকে খাবারের মজুরি, গ্রহণ করুন। তাদের সামনে দিরহাম দেখে তাদের মুখে খুশির চিহ্ন ফুটে উঠল। যখন তারা বণ্টন করতে গেল, যার কাছে পাঁচটি রুটি ছিল সে বলল, পাঁচ দিরহাম আমার এবং তিনটি তোমার। দ্বিতীয় ব্যক্তি বলল, এই আট দিরহাম আমাদের মধ্যে সমানভাবে ভাগ করতে হবে। ন্যায়বিচারের দাবী হলো আপনি চারটি রাখুন এবং চারটি দিন আমাকে। এবিষয়ে উভয়ের মাঝে ঝগড়া হয়।
আরও পড়ুন : উচ্চ আওয়াজে মাইক বাজানো সম্পর্কে ইসলাম যা বলে
বিষয়টি হযরত আলী আল-মুরতাযা রা.-এর দরবারে পেশ করা হয়। কারণ তারা কেউই তাদের অবস্থান ছাড়তে প্রস্তুত ছিল না। তাদের উভয়ের বক্তব্য শুনে আলী রা. তিন রুটির মালিককে বললেন, তোমার সঙ্গী তোমাকে যা দিচ্ছে তা সানন্দে গ্রহণ কর, তাতে তোমারই লাভ। তিনি বললেন, আমার ভাগে চার দিরহাম আসে, তাই আমার প্রাপ্য পাওয়া উচিত। আমি আপনার কাছে ন্যায়বিচার আশা করছি।
আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, তুমি যদি ন্যায়বিচার ও ন্যায্য সিদ্ধান্ত চাও তবে শোনো, তোমার আসল অধিকার মাত্র এক দিরহাম। একথা শুনে সে একটা বড় ধাক্কা খেল এবং কাঁপতে কাঁপতে বলল, আমার অধিকার মাত্র এক দিরহাম, এটা কিভাবে হতে পারে?
হযরত আলী রা. বললেন শোনো! মোট আটটি রুটি ছিল? সে বলল হ্যাঁ। তোমরা আহারকারী কি তিনজন ছিলে? সে বলল হ্যাঁ ঠিক। প্রতিটি রুটিকে তিন টুকরো করে বিভক্ত করলে মোট চব্বিশটি টুকরা হবে। একজনের ভাগে আটটি টুকরো আসবে। যার মালিকানায় পাঁচটি রুটি ছিল সে পনেরো টুকরোর মালিক হল এবং সে তার অংশ থেকে আট ভাগ খেয়ে ফেলল এবং সাত ভাগ বাকী রয়ে যায়, যার মূল্য উসুল করার অধিকার রয়েছে তার। তোমার তিনটি রুটি সর্বমোট নয় টুকরা হলো, আর তুমি আট টুকরা খেয়ে ফেলেছ, শুধুমাত্র একটি টুকরো অবশিষ্ট আছে যার জন্য তুমি মূল্য পাওয়ার অধিকারী। তাই এক দিরহাম নিয়ে যাও!
লোকটি ফয়সালার পুরা বিবরণ শুনে হতবাক হয়ে যায়। তখন সে বুঝতে পারল আমার আসল হক মাত্র এক দিরহাম। এক দিরহাম পেয়ে তার পথে চলে গেল।
বাংলাবার্তা/জেডএইচ