
ছবি: সংগৃহীত
জাতীয় পার্টির (জাপা) কো-চেয়ারম্যান ও রংপুর সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেছেন, মামলাবিহীন ক্লিন ইমেজের আওয়ামী সমর্থনকারী কেউ যদি জাপার হয়ে নির্বাচনে অংশ নেয়, তবে তাতে তাঁর কোনো আপত্তি নেই। তিনি দাবি করেন, জাতীয় পার্টি বর্তমানে কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে গেলেও আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সব আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মতো প্রার্থী প্রস্তুত রেখেছে।
শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রংপুর মহানগর ও জেলা শাখার উদ্যোগে দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বিভাগীয় প্রতিনিধি সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা অভিযোগ করে বলেন, “আমরা যখন নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি, তখনই একটি সংঘবদ্ধ কুচক্রী গোষ্ঠী আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। আওয়ামী শূন্যতায় জাতীয় পার্টির জনপ্রিয়তা বেড়ে যাওয়ায় তা রুখে দিতে দলীয় কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তিগুলোকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য এক মহল অব্যাহত ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। তবে সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে ‘ভোটের ঘাঁটি’ রংপুরে জাতীয় পার্টি শক্ত অবস্থানে রয়েছে। নির্বাচন যদি সুষ্ঠু পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়, তবে দেশের প্রতিটি আসনে আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মতো প্রার্থী রয়েছে।”
মোস্তাফিজার রহমান মনে করেন, সরকার যদি চলমান ‘মব সন্ত্রাস’ নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়, তবে সামনে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়বে। তিনি বলেন, “জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের ঘটনা প্রমাণ করে, সরকার এ ধরনের সন্ত্রাসের প্রশ্রয় দিচ্ছে। সরকারের প্রশ্রয়ে আমাদের ওপর হামলা হচ্ছে, যা গণতান্ত্রিক পরিবেশকে নষ্ট করছে।”
একইসঙ্গে তিনি মামলাবিহীন ও সৎ-ইমেজের আওয়ামী সমর্থকরা জাপার হয়ে নির্বাচনে অংশ নিলে তাঁর আপত্তি নেই বলে স্পষ্ট মত দেন।
কেন্দ্রীয় ভাইস-চেয়ারম্যান ও মহানগর সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসির অভিযোগ করে বলেন, “যখনই আমরা বিরোধী পদক্ষেপ গ্রহণ করি, তখনই জাপা অফিসে হামলা হয়। শুক্রবার পুলিশের উপস্থিতিতেই আমাদের কার্যালয় ভাঙচুর করা হয়েছে। সরকার যদি প্রশ্রয় না দিতো, তাহলে এ ঘটনা ঘটত না।”
তিনি আরও বলেন, “সরকারের ছত্রছায়ায় জামায়াত ইসলামী, এনসিপি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, নুরের গণঅধিকার পরিষদ আমাদের ওপর হামলা চালাচ্ছে। আসলে জাতীয় পার্টিকে ধ্বংস ও বাতিল করার পাঁয়তারা করা হচ্ছে। রুমিন ফারহানা বলেছেন, এখন যদি নির্বাচন হয় তাহলে জাতীয় পার্টিই হবে বিরোধী দল। এই আশঙ্কাতেই আমাদের উপর একের পর এক হামলা হচ্ছে।”
সভায় উপস্থিত রংপুর মহানগর ও জেলার জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা জানান, সব ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে তারা সর্বদা প্রস্তুত রয়েছেন। রংপুরে জাপার অবস্থান আগের চেয়ে আরও শক্তিশালী বলে দাবি করেন তারা।
জাতীয় পার্টি নেতাদের অভিযোগ—সরকারি প্রশ্রয়ে তাদের কার্যালয়ে হামলা চালানো হচ্ছে এবং বিভিন্ন সংগঠন একত্র হয়ে জাপাকে দুর্বল করার ষড়যন্ত্র করছে। তবে এসব বাধা মোকাবিলা করে আসন্ন নির্বাচনে তারা সর্বশক্তি দিয়ে লড়াই করার অঙ্গীকার করেছে। আর মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, যদি প্রার্থী মামলাবিহীন ও ক্লিন ইমেজের হয়, তবে আওয়ামী সমর্থক হলেও জাতীয় পার্টির ব্যানারে নির্বাচনে আসায় কোনো সমস্যা নেই।
বাংলাবার্তা/এমএইচ