
ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে ভোট চাওয়ার অভিযোগে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের (ছাত্রদল) এক নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। শনিবার কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের কোনও নির্দেশনা না থাকা সত্ত্বেও আসন্ন ডাকসু নির্বাচনে ভোটারদের কাছে অযাচিতভাবে ভোট চাওয়ার মাধ্যমে সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করা এবং সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগের ভিত্তিতে খুলনা জেলার পূর্ব রূপসা থানা ছাত্রদলের সদস্য সচিব ইমতিয়াজ আলী সুজনকে তার সাংগঠনিক পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বহিষ্কারের সিদ্ধান্তে স্বাক্ষর করেছেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির।
এই বিতর্কের সূত্রপাত ঘটে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া এক ভিডিও থেকে। ভিডিওতে দেখা যায়, ইমতিয়াজ আলী সুজন নিজেকে রূপসা উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব হিসেবে পরিচয় দিয়ে একটি ভোটারকে ফোন করেন এবং বলেন, “হ্যালো, আসসালামু আলাইকুম, চৈতি আপু বলছেন? আমি রূপসা উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব ইমতিয়াজ আলী সুজন। আমরা মূলত আপনার বাসায় গেছি, কারণ আপনি অবগত আছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচন চলতেছে। আমাদের ছাত্রদলের পক্ষ থেকে একটি প্যানেল আছে—আবিদ-হামিম-মায়েদ পরিষদ। আমরা এ পরিষদের পক্ষ থেকে আপনার পরিবারকে শুভেচ্ছা জানিয়েছি। জিএস পদে যিনি নির্বাচন করছেন তিনি খুলনার রূপসার ছেলে ও আজিজুল বারী হেলালের ভাইপো।”
ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর বিষয়টি ছাত্রদল কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের দৃষ্টিগোচর হয় এবং শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়। তদন্তের পরে ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটি বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়।
জানা গেছে, ইমতিয়াজ আলী সুজন রূপসা সরকারি কলেজের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী এবং রূপসা উত্তর উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব। তিনি নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে জিএস পদপ্রার্থী শেখ তানভীর বারী হামিমের পক্ষে প্রচারণা চালিয়েছেন এবং তার নির্বাচনী স্ট্যাটাস শেয়ার করেছেন।
ছাত্রদলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কোনো ধরনের সাংগঠনিক অনুমোদন বা সিদ্ধান্ত ছাড়াই এই ধরনের প্রচারণা দলীয় শৃঙ্খলার পরিপন্থি। সংগঠনের স্বার্থে, শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এবং সকল সদস্যকে সমানভাবে দায়িত্বশীল রাখার জন্য তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ছাত্ররাজনীতিতে শৃঙ্খলা ও নৈতিকতার চর্চা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কোনও ব্যক্তিগত স্বার্থ বা নির্দিষ্ট প্রার্থীর পক্ষে অযাচিত প্রচারণা করলে তা সংগঠনের ভাবমূর্তিকে ক্ষুণ্ণ করে এবং সমগ্র নির্বাচন প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও ন্যায়নীতিকে হুমকির মুখে ফেলে। ছাত্রদলের এই পদক্ষেপকে একটি শক্তিশালী নীতি সংহতকরণের উদ্যোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে, যা ভবিষ্যতে দলীয় শৃঙ্খলা রক্ষায় দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ