
ছবি: সংগৃহীত
কিশোরগঞ্জ জেলা পুলিশের এক অফিস আদেশে সাবেক জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্য মতিউর রহমানকে অনৈতিক সুবিধা দেওয়ার অভিযোগে এক এসআইসহ ১০ কনস্টেবলকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বরখাস্তের সিদ্ধান্ত শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) কার্যকর করা হয়েছে। বিষয়টি কিশোরগঞ্জ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
বরখাস্ত হওয়া পুলিশ সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন: এসআই আবুল কাশেম, কনস্টেবল মনিরুজ্জামান, মো. কবির হোসেন, ইমরান, নির্জন খান, শামীম আলম, মো. রনি হোসেন, শরীফুল ইসলাম, তানভির রহমান, মো. আবু সাইদ মিয়া এবং রবীন্দ্র দাস।
পুলিশ অফিস আদেশে বলা হয়েছে, গত ১২ আগস্ট মতিউর রহমানকে কিশোরগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলার শুনানির জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। আদালতে হাজিরার পর ফেরত নেওয়ার পথে পুলিশ সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত স্কর্ট দল যাত্রাবিরতির সময় খাবারের ব্যবস্থাপনা করেন। গোপন সূত্রে জানা যায়, ওই সময়ে হাজতিকে বিভিন্ন সুবিধা দিয়ে উৎকোচ নেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করার জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপারসহ তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়।
কমিটি প্রতিবেদন দাখিল করে জানায়, হাজতিকে আলাদা কক্ষে বসিয়ে খাবার খাওয়ানো হয়েছে এবং অন্যান্য পুলিশ সদস্যরা বাইরে সাধারণ স্থানে খাবার গ্রহণ করেন। এই ব্যবস্থা স্কর্ট ডিউটির শৃঙ্খলার পরিপন্থি এবং ইনচার্জের দায়িত্ব পালনে শৈথিল্যের প্রমাণ বহন করে। এছাড়া উপস্থিত থাকা পুলিশ সদস্যরা এই অনিয়ম প্রতিরোধে উদ্যোগ নেননি, যা তাদের দায়িত্ব অবহেলার পরিচায়ক।
অফিস আদেশে আরও বলা হয়েছে, বরখাস্ত হওয়া পুলিশ সদস্যদের কার্যকলাপ বিভাগীয় নিয়ম-শৃঙ্খলার পরিপন্থি, অসৎ উদ্দেশ্যপূর্ণ ও জনসম্মুখে পুলিশের ভাবমূর্তিকে ক্ষুণ্ন করেছে। তাই তাদেরকে পুলিশ রেগুলেশন অব বেঙ্গল ১৯৪৩-এর প্রবিধান ৮৮০ মোতাবেক সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বরখাস্ত থাকাকালীন তারা বিধি মোতাবেক বেতন ও ভাতাদি পাবেন। এছাড়া পুলিশ লাইন্সে সার্বক্ষণিক হাজির থেকে সাদা পোশাকে নিয়মিত রোলকল ও প্যারেডে উপস্থিত থাকতে হবে।
প্রসঙ্গত, মতিউর রহমান গত বছরের কোরবানির ঈদের আগে ছেলের জন্য ১৫ লাখ টাকায় ছাগল কেনার ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে আলোচিত হয়। এরপর মতিউর রহমান ও তার স্ত্রী উপজেলা চেয়ারম্যান পদে থাকা অবস্থায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় গ্রেফতার হন।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ধরনের বিভাগীয় ব্যবস্থা পুলিশ প্রশাসনে স্বচ্ছতা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এর মাধ্যমে ভবিষ্যতে পুলিশের দায়িত্ব পালনে নিয়মের প্রতি মনোযোগ বৃদ্ধি পাবে এবং জনসাধারণের মধ্যে পুলিশের ভাবমূর্তি উন্নয়নের সুযোগ তৈরি হবে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ