
ছবি: সংগৃহীত
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় লঘুচাপ সৃষ্টি হওয়ায় সমুদ্র উত্তাল হয়ে উঠেছে। এ কারণে সাগরে সঞ্চালনশীল মেঘমালার সৃষ্টি হয়েছে এবং উপকূলীয় এলাকায় দমকা কিংবা ঝড়ো হাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় দেশের চারটি প্রধান সমুদ্রবন্দর—চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা—কে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত প্রদর্শনের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।
সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) সকালে এক বিশেষ সতর্কবার্তায় আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, উত্তর বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপ ক্রমশ সক্রিয় হচ্ছে। এর ফলে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চল ও সন্নিহিত সমুদ্র এলাকায় বায়ুচাপের তারতম্য তৈরি হয়েছে। এর প্রভাবে সমুদ্র উত্তাল অবস্থায় রয়েছে এবং সাগরে অবস্থানরত জাহাজ, মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারের জন্য ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব ধরনের মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে হবে। গভীর সাগরে যাওয়া সম্পূর্ণভাবে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। কারণ, লঘুচাপের প্রভাবে দমকা কিংবা ঝড়ো হাওয়া যে কোনো মুহূর্তে নৌযান চলাচলে বিপদ ডেকে আনতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী,
-
চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর,
-
কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর,
-
মোংলা সমুদ্রবন্দর এবং
-
পায়রা সমুদ্রবন্দরকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত প্রদর্শন করতে বলা হয়েছে।
তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত সাধারণত ঘূর্ণিঝড় নয়, বরং সাগরে সৃষ্ট লঘুচাপ বা গভীর নিম্নচাপজনিত অবস্থার সময় জারি করা হয়। এ অবস্থায় উপকূলীয় এলাকা ও সমুদ্রবন্দরের ওপর দিয়ে দমকা বা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে, ফলে ছোট নৌযান ও ট্রলারের জন্য ঝুঁকি থাকে।
আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, সাগরে সৃষ্ট লঘুচাপ যদি শক্তিশালী হয় তবে তা আরও সুসংগঠিত হয়ে নিম্নচাপে রূপ নিতে পারে। এ অবস্থায় উপকূলীয় অঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাত, নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি এবং জলোচ্ছ্বাসের মতো পরিস্থিতি দেখা দিতে পারে। তবে আপাতত লঘুচাপটি স্থিতিশীল আছে এবং এর অগ্রগতি পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
অন্যদিকে, লঘুচাপের প্রভাবে দেশের দক্ষিণাঞ্চল ও উপকূলীয় জেলাগুলোতে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মেঘলা আকাশ ও মাঝেমধ্যে হালকা বৃষ্টিও হতে পারে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
সমুদ্রবন্দরে জারি করা সংকেতের কারণে উপকূলীয় এলাকার প্রশাসন ইতোমধ্যে জেলেদের সতর্ক করেছে। মৎস্য বিভাগ ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদগুলো মাছ ধরার নৌকাগুলোকে নিরাপদে উপকূলে রাখার নির্দেশ দিয়েছে। এছাড়া উপকূলীয় জনগণকে অযথা আতঙ্কিত না হয়ে সরকারি নির্দেশনা মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, সাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের পরিস্থিতি প্রতিনিয়ত পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। প্রয়োজনে নতুন নির্দেশনা জারি করা হবে। উপকূলীয় অঞ্চলের বাসিন্দাদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে যাতে তারা আবহাওয়া অধিদপ্তরের আপডেট নিয়মিত অনুসরণ করেন এবং গুজব কিংবা ভুয়া তথ্যের ওপর নির্ভর না করেন।
বাংলাবার্তা/এমএইচ