
ছবি: সংগৃহীত
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ বা চাকসু নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও নির্বাচন কমিশন। দীর্ঘদিন পর আয়োজিত হতে যাওয়া এই বহুল প্রত্যাশিত নির্বাচনের দিন-তারিখ ঘিরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে যেমন উৎসাহ-উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে, তেমনি বিভিন্ন প্রশ্ন ও বিতর্কও উঠেছে। পরিবর্তিত সূচি অনুযায়ী আগামী ১৫ অক্টোবর চাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে এই নির্বাচন ১২ অক্টোবর আয়োজনের কথা ছিল।
মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নির্বাচন কমিশনার আরিফুল হক সিদ্দিকী সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, প্রার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে কমিশন সময়সূচিতে পরিবর্তন আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কমিশনের দাবি, নির্বাচন সুষ্ঠু ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করতে হলে সব পক্ষকে সমান সুযোগ দেওয়া জরুরি। সে কারণেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এর আগে সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) সমাজবিজ্ঞান অনুষদে প্রার্থীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় অনেক প্রার্থী অভিযোগ করেন, তাদের হাতে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা চালানোর জন্য যথেষ্ট সময় নেই। প্রচারণার সময় সংকট থাকলে ভোটারদের কাছে নিজেদের বার্তা পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে না বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তারা। উপস্থিত প্রার্থীরা একযোগে দাবি করেন, নির্বাচনের দিন পেছানো হোক, যাতে তারা প্রচারণার জন্য পর্যাপ্ত সময় পান।
প্রার্থীদের এই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন বৈঠকে বসে এবং পর্যালোচনা শেষে নির্বাচনের দিন তিন দিন পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। কমিশনের মতে, ভোটের আগে সময় বাড়ানো হলে প্রার্থীরা তাদের নির্বাচনী কর্মসূচি সুচারুভাবে পরিচালনা করতে পারবেন। এতে নির্বাচন আরও অংশগ্রহণমূলক হবে।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, শুধু চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় নয়, এর আগেও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনের তারিখ পিছিয়ে ১৬ অক্টোবর নির্ধারণ করা হয়। ফলে দেশের দুই বড় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচন প্রায় একই সময়ে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। শিক্ষার্থীরা বলছেন, এই দুই নির্বাচন দেশের ছাত্র রাজনীতির ভবিষ্যৎ গতিপথ নির্ধারণে বড় ভূমিকা রাখবে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দীর্ঘদিন ধরে স্থগিত থাকা ছাত্র সংসদ নির্বাচনগুলো শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক চর্চা ও নেতৃত্ব গড়ে তোলার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তবে এ ধরনের নির্বাচনে তারিখ পরিবর্তন বা বিলম্ব হওয়া অনেক সময় নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। আবার একইসঙ্গে প্রার্থীদের যুক্তিসঙ্গত দাবিকে সম্মান জানানো হলে নির্বাচনের বৈধতা ও গ্রহণযোগ্যতা বেড়ে যায়।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্ররা বলছেন, চাকসু নির্বাচনকে ঘিরে ক্যাম্পাসে দীর্ঘদিন পর এক ধরনের গণতান্ত্রিক আবহ তৈরি হয়েছে। নতুন নেতৃত্ব উঠে আসার সুযোগ তৈরি হয়েছে। তবে নির্বাচনের আগে সময় বাড়ানোতে প্রার্থীরা কিছুটা স্বস্তি পেলেও, সাধারণ শিক্ষার্থীরা আশা করছেন নির্ধারিত নতুন তারিখে যেন কোনো অজুহাতে নির্বাচন আর পেছানো না হয়।
সব মিলিয়ে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকসু নির্বাচন এখন অনুষ্ঠিত হবে ১৫ অক্টোবর। প্রার্থীরা বাড়তি তিন দিনের সময় কাজে লাগিয়ে নিজেদের প্রচারণা জোরদার করবেন, আর শিক্ষার্থীরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন ভোটের দিনটির জন্য।
বাংলাবার্তা/এমএইচ