
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশে ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারী স্যাটেলাইট প্রতিষ্ঠান স্টারলিংক সার্ভিসেস বাংলাদেশ লিমিটেডকে দুটি গুরুত্বপূর্ণ লাইসেন্স প্রদান করেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। এর মাধ্যমে, স্টারলিংক তাদের বাণিজ্যিক কার্যক্রম বাংলাদেশে শুরু করার অনুমতি পেলো। মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানী ঢাকার আগারগাঁওয়ের বিটিআরসি ভবনে আনুষ্ঠানিকভাবে এই দুটি লাইসেন্স হস্তান্তর করা হয়।
বিটিআরসি থেকে প্রকাশিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই দুটি লাইসেন্সের মধ্যে একটি হলো ‘নন-জিওস্টেশনারি স্যাটেলাইট অরবিট অপারেটর লাইসেন্স’, এবং অন্যটি হলো ‘রেডিও কমিউনিকেশন অ্যাপারেটরের লাইসেন্স’। দুটি লাইসেন্সই ১০ বছর মেয়াদী এবং স্টারলিংককে বাংলাদেশে তাদের বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনার সুযোগ প্রদান করবে।
প্রথম লাইসেন্সটি বিটিআরসির লাইসেন্সিং বিভাগ থেকে হস্তান্তর করা হয়, যা স্টারলিংককে বাংলাদেশে তাদের স্যাটেলাইট-ভিত্তিক ইন্টারনেট সেবা চালু করার অনুমতি দেবে। এই লাইসেন্সের মাধ্যমে স্টারলিংক দেশে ইন্টারনেট সেবা প্রদান করতে পারবে, এবং এ সংক্রান্ত সব ধরনের আইনি সুবিধা পাবেন তারা।
দ্বিতীয় লাইসেন্সটি হস্তান্তর করা হয় বিটিআরসির স্পেকট্রাম বিভাগ থেকে। এই লাইসেন্সের অধীনে স্টারলিংক ইন্টারনেট সেবা প্রদান করতে ব্যবহৃত তরঙ্গ ব্যবহার এবং বেতার যন্ত্র ও সংশ্লিষ্ট যন্ত্রাংশ আমদানি ও ব্যবহারের অনুমতি পাবে। এই অনুমোদন স্টারলিংককে তাদের সেবার মান উন্নত করার এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ইন্টারনেট সেবা সম্প্রসারণের সুযোগ করে দেবে।
স্টারলিংকের এই কার্যক্রম বাংলাদেশে চালু হওয়ায় আশা করা হচ্ছে, এটি দেশের ইন্টারনেট সেবার বাজারে নতুন এক যুগের সূচনা করবে। স্যাটেলাইট প্রযুক্তির মাধ্যমে স্টারলিংক দেশের এমনসব অঞ্চলে ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দিতে সক্ষম হবে, যেখানে বর্তমানে কেবল ল্যান্ডলাইন বা মোবাইল নেটওয়ার্ক সেবা পাওয়া সম্ভব নয়।
এছাড়াও, এটি বাংলাদেশের ডিজিটাল নেটওয়ার্কের উন্নয়ন এবং ইন্টারনেট ব্যবহারের উন্নতিতে একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। স্টারলিংকের অন্তর্ভুক্তি বাংলাদেশের জনগণকে দ্রুত ও নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সেবা পাওয়ার সুযোগ দেবে এবং এর মাধ্যমে দেশের ডিজিটাল অর্থনীতি আরও শক্তিশালী হবে।
বিটিআরসি-এর ঘোষণার পর, স্টারলিংক কর্তৃপক্ষ জানায়, তারা দ্রুত তাদের সেবা চালু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং শীঘ্রই দেশের গ্রাহকদের জন্য সেবা প্রদান শুরু করবে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই উদ্যোগ দেশের ডিজিটাল রূপান্তরের অংশ হিসেবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
এছাড়া, স্টারলিংককে এই লাইসেন্স দেওয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ সেক্টরে বিদেশী বিনিয়োগের প্রবাহ বাড়ানোর জন্য একটি ইতিবাচক সিগন্যাল পাঠাল। দেশে আন্তর্জাতিক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবা পৌঁছানোর ফলে ভবিষ্যতে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিকভাবে আরও প্রতিযোগিতামূলক হয়ে উঠবে বলে আশা করা হচ্ছে।
স্টারলিংকের সেবা দেশের গ্রামীণ ও শহুরে এলাকায় ইন্টারনেটের দ্রুত সম্প্রসারণের সুযোগ তৈরি করবে, যা একদিকে যেমন ডিজিটাল শিক্ষা ও তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারে সহযোগিতা করবে, তেমনি অন্যদিকে সারা দেশে ই-কমার্স, ডিজিটাল ব্যাংকিংসহ বিভিন্ন ই-সেবা সুবিধা উন্নত করবে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ