
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুরোধে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক তিন গভর্নর এবং ছয় ডেপুটি গভর্নরের ব্যাংক হিসাবের তথ্য তলব করেছে। বুধবার, ১৩ আগস্ট ব্যাংকগুলোকে এই সংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হয়েছে। ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তিন কার্যদিবসের মধ্যে তাদের অ্যাকাউন্ট খোলার ফরম, লেনদেনের বিবরণ, কেওয়াইসি তথ্য এবং যাবতীয় তথ্য পাঠাতে। কোনো অ্যাকাউন্ট যদি বন্ধ থাকে, তার তথ্যও জানাতে হবে।
তলবকৃত গভর্নরদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান, ফজলে কবির ও আব্দুর রউফ তালুকদার। জানা যায়, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আতিউর রহমান বিদেশে চলে যান। অন্যদিকে, আব্দুর রউফ তালুকদার গত বছরের ৭ আগস্ট পলাতক অবস্থায় ই-মেইলের মাধ্যমে পদত্যাগপত্র পাঠান।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বিক্ষোভে অংশ নিয়ে গভর্নর, ডেপুটি গভর্নর, বিএফআইইউ প্রধান ও পলিসি অ্যাডভাইজরের পদত্যাগ দাবি করেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকে অস্থিরতার পর আব্দুর রউফ তালুকদার গভর্নরের পদ ছাড়েন। তিনি ২০২২ সালের জুলাইতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব থেকে চার বছরের জন্য গভর্নরের দায়িত্ব নেন। চাকরির মেয়াদের এক বছর আগে তিনি অবসর নিতে সচিব পদ থেকে পদত্যাগ করেছিলেন।
অন্য সাবেক গভর্নর আতিউর রহমান ২০০৯ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের দায়িত্ব পালন করেন। তার সময়েই ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রিজার্ভ চুরির ঘটনা ঘটে। এই ঘটনার খবর ফিলিপাইনের সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার এক মাস পর বাংলাদেশে তা আলোড়ন সৃষ্টি করে। ফজলে কবির ২০১৬ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত গভর্নরের দায়িত্বে ছিলেন।
তালিকাভুক্ত ছয় ডেপুটি গভর্নরের মধ্যে আছেন সরকার পতনের পর দুদকের মামলায় কারাবন্দী এস কে সুর চৌধুরী, এবং বিএফআইইউ প্রধানের পদ থেকে পদত্যাগে বাধ্য হওয়া মো. মাসুদ বিশ্বাস। এছাড়া তালিকায় রয়েছেন মাসুদ বিশ্বাসের আগে দীর্ঘদিন বিএফআইইউ প্রধান আবু হেনা মো. রাজী হাসান, সাবেক ডেপুটি গভর্নর এসএম মনিরুজ্জামান, কাজী ছাইদুর রহমান ও আবু ফরাহ মো. নাছের।
বিএফআইইউর চিঠিতে বলা হয়েছে, প্রত্যেকের অ্যাকাউন্ট খোলার ফরম, লেনদেনের বিবরণ, কেওয়াইসি এবং সংশ্লিষ্ট সব তথ্য তিন কার্যদিবসের মধ্যে জমা দিতে হবে। কোনো অ্যাকাউন্ট বন্ধ থাকলে সেই তথ্যও ব্যাংকগুলোকে জানাতে হবে।
এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দুদক ও বিএফআইইউ মূলত সাবেক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের আর্থিক লেনদেন ও সম্পদের হিসাব খতিয়ে দেখতে চায়। এটি দেশের আর্থিক স্বচ্ছতা এবং দুর্নীতি দমন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ