
ছবি: সংগৃহীত
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের অভিযোগ করেছেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে যারা ক্ষমতা ও প্রভাবের শীর্ষে অবস্থান করছে, তারা কখনোই নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে নয়। তাদের জন্য নির্বাচন বিলম্বিত হওয়া যতটা সম্ভব লাভজনক, কারণ তাতে তারা অবাধ ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারে এবং জনগণের মতামতকে উপেক্ষা করতে পারে।
বুধবার (১৩ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর জাতীয় পার্টি কেন্দ্রীয় কার্যালয় মিলনায়তনে ঢাকা জেলা শাখার মতবিনিময়সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
জিএম কাদের বলেন, “জনগণের জন্য জীবন দিতেও আমি প্রস্তুত। অন্যায় ও অনিয়ম দেখলে প্রতিবাদ করবই। আজ দেশের মানুষ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। যারা যা খুশি করতে পারে, তারা তো নির্বাচন চায় না। নির্বাচন যত পিছিয়ে যাবে, ততই তাদের লাভ হবে। জনগণের স্বার্থ তাদের কাছে কোনো বিষয় নয়।”
তিনি বর্তমান সরকারের সমালোচনা করে বলেন, “আমরা ঝুঁকি নিয়ে সরকারের অপকর্মের বিরোধিতা করছি। জুলুম-নির্যাতনের ভয়ে আমরা থেমে থাকব না। আমাদের ‘লাঙ্গল’ প্রতীক অন্য কাউকে দিতে চাইলে আমরা রাস্তায় নেমে আন্দোলন করব। যারা জনগণের পক্ষে কথা বলবে, তারাই প্রকৃত নেতা। আমরা সত্য ও ন্যায়ের পথে থাকব।”
গণতন্ত্রের প্রশ্নে তিনি বলেন, “আপনি কে যে বলবেন নির্বাচন চাই না? সবাইকে কথা বলার সুযোগ দিতে হবে। এটা গণতন্ত্রের মৌলিক নীতি। স্বৈরাচারী মনোভাব নিয়ে ক্ষমতায় থাকা যাবে না, কারণ এ দেশের মানুষ কখনো স্বৈরতন্ত্র মেনে নেয় না।”
তিনি দলের অতীত রাজনীতি নিয়েও আত্মসমালোচনা করে বলেন, “জাতীয় পার্টির রাজনীতি আগে পরিষ্কার ছিল না। নেতাকর্মী এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ছিল। এখন থেকে আমরা স্পষ্টভাবে জনগণের পক্ষের রাজনীতি করব।”
জিএম কাদের ছাত্র আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “ছাত্রদের ওপর যখন জুলুম শুরু হয়েছিল, তখন বৈষম্যের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষও আন্দোলনে যোগ দেয়। শুধু ছাত্ররা আন্দোলন করেছে বলা ঠিক নয়; তাদের নেতৃত্বে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণেই আন্দোলন সফল হয়েছে। কিন্তু আজও সারা দেশে বৈষম্য চলছে। মানুষের ঘরবাড়ি ও কলকারখানায় আগুন দেওয়া হচ্ছে, মিথ্যা অপবাদ দেওয়া হচ্ছে।”
জুলাই মাসের সহিংসতার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “অনেক নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা হত্যা মামলা দেওয়া হয়েছে, জামিন দেওয়া হচ্ছে না। আমরা যেমন একসময় বিএনপিকে মজলুম দল হিসেবে দেখেছি, এখন আমরাও সেই অবস্থায় আছি। জনগণের সমর্থন অর্জন করব।”
সভায় দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য, উপদেষ্টা, যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদকসহ কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাবার্তা/এমএইচ