
ছবি: সংগৃহীত
সিলেটের অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অন্যতম কেন্দ্র সাদাপাথর ও জাফলং এলাকা এখন লুটপাটের হুমকিতে। দীর্ঘদিন ধরে প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় এবং প্রশাসনিক উদাসীনতার সুযোগে গড়ে ওঠা ‘পাথর খেকোচক্র’ এ এলাকা থেকে বিপুল পরিমাণ পাথর সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এই অবৈধ কর্মকাণ্ডে শুধু প্রকৃতিই নয়, স্থানীয় অর্থনীতিও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ নিয়ে একের পর এক প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর ব্যাপক জনমত তৈরি হয় এবং প্রশাসনের ওপর চাপ বাড়ে।
এই প্রেক্ষাপটে বুধবার (১৩ আগস্ট) সন্ধ্যায় সিলেট জেলা ও বিভাগীয় প্রশাসনের উদ্যোগে সার্কিট হাউসে এক জরুরি সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসক শের মাহবুব মুরাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় সিলেট অঞ্চলের ঊর্ধ্বতন প্রশাসনিক কর্মকর্তা, পুলিশ, বিজিবি, র্যাবসহ বিভিন্ন বাহিনীর প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
দীর্ঘ আলোচনার পর পাথর লুটপাট ঠেকাতে এবং চুরি যাওয়া পাথর পুনঃস্থাপনে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়—
জাফলং ইসিএ ও সাদাপাথর এলাকায় ২৪ ঘণ্টা যৌথ বাহিনীর দায়িত্ব পালন – যেন দিন-রাত কোনো সময়েই লুটপাটের সুযোগ না থাকে।
গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জে পুলিশের চেকপোস্টে যৌথ বাহিনীর সার্বক্ষণিক অবস্থান – পাথর পাচারের রুটগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখতে।
অবৈধ ক্রাশিং মেশিন বন্ধে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নসহ অভিযান অব্যাহত রাখা – অবৈধভাবে উত্তোলিত পাথর প্রক্রিয়াজাতকরণ থামাতে।
পাথর চুরিতে জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার ও আইনের আওতায় আনা – যাতে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়।
চুরি হওয়া পাথর উদ্ধার করে পূর্বের স্থানে ফিরিয়ে নেওয়া – প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পুনরুদ্ধারের জন্য।
প্রশাসন জানিয়েছে, এই পদক্ষেপগুলো শুধু সাদাপাথর নয়, পুরো সিলেটের ইসিএ (Ecologically Critical Area) ঘোষিত অঞ্চলগুলোকেই সুরক্ষা দেবে।
স্থানীয় পরিবেশবিদদের মতে, সাদাপাথরের মতো পর্যটনকেন্দ্র শুধু পর্যটন আয়ের উৎস নয়, বরং এটি স্থানীয় জীববৈচিত্র্য ও নদীভিত্তিক অর্থনীতির মূল অংশ। অবৈধ পাথর উত্তোলন বন্ধ না হলে এ অঞ্চলের ভূ-প্রকৃতি স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ