
ছবি: সংগৃহীত
জনপ্রিয় অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়া তার ব্যক্তিজীবনের কঠিন সময় নিয়ে প্রকাশ্যে কথা বলেছেন। দীর্ঘ দিনের সম্পর্কের ইতি টানা, মানসিক চাপে থাকা এবং পেশাদার জীবনে ফিরে আসার সংগ্রামের বর্ণনা দিয়েছেন তিনি। ফারিয়া জানিয়েছেন, মানসিক অবসাদ ও ব্যক্তিগত দুশ্চিন্তার কারণে বর্তমানে তিনি চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খাচ্ছেন।
নুসরাত ফারিয়ার দশ বছরের প্রেমের সম্পর্ক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের মাধ্যমে শেষ হয়। ২০২০ সালের মার্চে তিনি ও তার প্রেমিক রনি রিয়াদ রশিদ আনুষ্ঠানিকভাবে বাগদান সম্পন্ন করেছিলেন। কিন্তু সেই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক খুব বেশি দিন টিকেনি। কিছুদিন পর নুসরাত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্পর্কের ইতি টানার ঘোষণা দেন। সেই সময় তিনি লিখেছিলেন, “আমরা তিন বছর আগে বাগদানের ঘোষণা দিয়েছিলাম। অনেক ভেবে আমি ও রনি আমাদের ৯ বছরের সম্পর্কের ইতি টানছি। আমাদের মধ্যে যে বোঝাপড়া ও বন্ধুত্ব ছিল, তা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।”
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে নুসরাত ফারিয়া জানিয়েছেন, বাগদান ভাঙা তার জীবনের সবচেয়ে বড় ও কঠিন সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে একটি। তিনি বলেন, “মা-বাবা আর রনি—এই ছিল আমার পৃথিবী। ওকে ছাড়া আর কিছু ভাবতে পারতাম না। ছোটবেলা থেকে আমাদের সম্পর্ক। একসাথে থাকা, সময় কাটানো—এসবের সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছিলাম। তাই রনির সঙ্গে বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত ছিল আমার কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
অভিনেত্রী জানান, চার বছরের বেশি সময় ধরে তিনি এই বিষয়টি প্রকাশ করার মানসিক সাহস জোগাড় করার চেষ্টা করেছেন। নুসরাত বলেন, “১০ বছরের সম্পর্ক খুব দীর্ঘ সময়। এত দিনের সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে হলে মনের শক্তি লাগে। কীভাবে সবাইকে বলব, তা ঠিকমত বুঝতে পারছিলাম না। রনি জানতে চেয়েছিল, আমরা কি একসাথে থাকতে চাই কিনা, কিন্তু আমাদের সম্পর্কের কোনো বাস্তব ভবিষ্যৎ ছিল না।”
সম্পর্ক ভাঙার পর অভিনেত্রী মানসিকভাবে গভীরভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। তিনি স্মরণ করলেন, “মানসিক অবসাদের কারণে তিন মাস কাজ করিনি। এখনও ওষুধ খাচ্ছি অবসাদ কাটানোর জন্য। ধীরে ধীরে পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছি।”
এছাড়া নুসরাত ফারিয়া সম্প্রতি এক বিতর্কিত কারণে একদিনের জন্য জেল হেফাজতেও থাকতে হয়েছিল। তবে বর্তমানে তিনি নিজেকে পুনরায় জীবনের ছন্দে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হচ্ছেন। তিনি তার ভক্ত ও মিডিয়াকে আশ্বস্ত করেছেন যে ধীরে ধীরে সব কিছু নিয়ন্ত্রণে আনছেন এবং পেশাগত জীবনেও পুনরায় মনোযোগ দিতে শুরু করেছেন।
নুসরাত ফারিয়ার এই খোলাখুলি সাক্ষাৎকার দর্শক এবং ভক্তদের কাছে তার ব্যক্তিগত সংগ্রাম, মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা এবং মানসিক সুস্থতার গুরুত্বের ওপর নতুন আলোকপাত করেছে। তিনি স্পষ্ট করেছেন যে ব্যক্তিগত সম্পর্কের অবসাদ কাটিয়ে ওঠা এবং জীবনের নানামুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা একজন মানুষের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রয়োজনীয়।
বাংলাবার্তা/এমএইচ