
ছবি: সংগৃহীত
দেশের স্বাস্থ্যখাতে জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসক নিয়োগের লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) উদ্যোগে আজ অনুষ্ঠিত হচ্ছে ৪৮তম বিশেষ বিসিএস পরীক্ষা। শুক্রবার (১৮ জুলাই) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত রাজধানী ঢাকার ২০টি কেন্দ্রে একযোগে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। দুই ঘণ্টার এ পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন ৪১ হাজার ২৫ জন প্রার্থী, যাদের মধ্যে থেকে নির্বাচিত হবেন তিন হাজার চিকিৎসক।
পিএসসি সূত্রে জানা গেছে, এই বিশেষ বিসিএসের মাধ্যমে দুই হাজার ৭০০ জন সহকারী সার্জন এবং ৩০০ জন সহকারী ডেন্টাল সার্জন নিয়োগ দেওয়া হবে। পরীক্ষাটি হবে এমসিকিউ পদ্ধতিতে, যেখানে মোট ২০০ নম্বরের প্রশ্ন থাকবে। প্রার্থীদের এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য, যা হবে অতিরিক্ত ১০০ নম্বরের।
লিখিত পরীক্ষায় মেডিকেল সায়েন্স থেকে ১০০ নম্বর এবং সাধারণ বিষয়ের উপর ১০০ নম্বর প্রশ্ন থাকবে। সাধারণ বিষয়ের অন্তর্ভুক্ত থাকবে বাংলা (২০), ইংরেজি (২০), বাংলাদেশ বিষয়াবলি (২০), আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি (২০), মানসিক দক্ষতা (১০), এবং গাণিতিক যুক্তি (১০) নম্বর। প্রতিটি সঠিক উত্তরের জন্য ১ নম্বর দেওয়া হবে, আর ভুল উত্তরের জন্য কাটা যাবে ০.৫০ নম্বর।
পিএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য তিনটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা জারি করেছে, যেগুলো কঠোরভাবে মানা বাধ্যতামূলক:
১. সকাল ৮টা থেকে ৯টা ৩০ মিনিটের মধ্যে প্রবেশ করতে হবে পরীক্ষার হলে। এ সময়ের মধ্যেই পরীক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র ও কালো কালির বলপেনসহ নির্ধারিত কেন্দ্রে উপস্থিত থাকতে হবে। সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে হলের প্রধান গেট বন্ধ করে দেওয়া হবে এবং এরপর কোনো পরীক্ষার্থীকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।
২. কোনো ধরনের নিষিদ্ধ সামগ্রী যেমন মোবাইল ফোন, ঘড়ি, ইলেকট্রনিক ডিভাইস বা বই-পত্র সঙ্গে আনা যাবে না। কেবল প্রবেশপত্র ও কালো কালির বলপেন সঙ্গে রাখা যাবে। নিষিদ্ধ সামগ্রী বহনের প্রমাণ পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সতর্ক করেছে কমিশন।
৩. প্রবেশপত্রে উল্লিখিত কেন্দ্রের নাম দেখে নির্ধারিত হলে সঠিকভাবে উপস্থিত হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সুষ্ঠু পরিবেশে পরীক্ষা গ্রহণ নিশ্চিত করতে সকলকে যথাযথ সময় হাতে নিয়ে কেন্দ্রে আসতে অনুরোধ করা হয়েছে।
প্রতি তিন হাজার পদের বিপরীতে ৪১ হাজার ২৫ জন প্রার্থী অংশগ্রহণ করায় প্রতি আসনের জন্য লড়ছেন প্রায় ১৪ জন প্রার্থী। ফলে প্রতিযোগিতা অত্যন্ত কঠিন হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ঢাকায় একযোগে ২০টি কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। পরীক্ষার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন রয়েছে এবং পরীক্ষা চলাকালীন সময় সার্বক্ষণিক তদারকি করবে পিএসসি ও প্রশাসনের মনিটরিং টিম।
এই পরীক্ষার মাধ্যমে দেশের চিকিৎসা সেবা খাতে একটি বড় ধরনের শূন্যতা পূরণ হতে যাচ্ছে। বর্তমানে দেশের সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে চিকিৎসক সংকট চরমে, বিশেষ করে উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে। সেই প্রেক্ষাপটেই সরকার জরুরি ভিত্তিতে এই বিশেষ বিসিএসের উদ্যোগ নেয়।
স্বাস্থ্যসেবা খাতে নবনিযুক্ত চিকিৎসকদের দ্রুত নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করে দেশব্যাপী চিকিৎসাসেবা আরও সহজলভ্য ও কার্যকর করা হবে—এমনটাই প্রত্যাশা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের।
প্রার্থীদের উদ্দেশে কমিশন আরও একবার শৃঙ্খলা বজায় রেখে এবং সততার সঙ্গে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানিয়েছে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ