
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) আসন্ন পরিচালনা পর্ষদ নির্বাচনের উত্তাপ দিন দিন বেড়েই চলেছে। নির্বাচনী প্রক্রিয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ধাপ, অর্থাৎ ভোটার তালিকা নিয়েও চলছিল বিতর্ক ও জল্পনা। অবশেষে বাংলাদেশের ক্রিকেট প্রশাসনের জন্য বহুল প্রতীক্ষিত চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। এতে স্থান পেয়েছেন মোট ১৯১ জন কাউন্সিলর। আগামী ৬ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে নির্বাচিত কাউন্সিলরদের মধ্য দিয়ে নতুন পরিচালনা পর্ষদ গঠন।
প্রাথমিক তালিকায় বাদ পড়লেও ঢাকার ১৫টি ক্লাবের কাউন্সিলররা শেষ পর্যন্ত চূড়ান্ত তালিকায় জায়গা পেয়েছেন। এর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হলো ভাইকিংস একাডেমি থেকে কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচিত ইফতেখার রহমান মিঠু। জানা গেছে, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধানে উঠে আসা একাধিক অনিয়মের কারণে এই ক্লাবগুলোকে প্রথমে খসড়া তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল। তবে কমিশনের যাচাই-বাছাই ও পুনঃমূল্যায়নের পর অবশেষে তারা ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ হোসেনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের নির্বাচন কমিশন আজ (শুক্রবার) ভার্চুয়াল বৈঠকে বসে চূড়ান্ত তালিকা অনুমোদন ও প্রকাশের কাজ সম্পন্ন করে। কমিশনের এই পদক্ষেপকে বিসিবি নির্বাচনের স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ঢাকার ১৫ ক্লাবের মধ্যে যেগুলো এবার চূড়ান্ত তালিকায় জায়গা পেয়েছে, সেগুলো হলো: এক্সিউম ক্রিকেটার্স, ঢাকা ক্রিকেট একাডেমি, মোহাম্মদ ক্রিকেট ক্লাব, নবাবগঞ্জ ক্রিকেট কোচিং একাডেমি, পূর্বাচল স্পোর্টিং ক্লাব, গুলশান ক্রিকেট ক্লাব, ওল্ড ঢাকা ক্রিকেটার্স, ভাইকিংস ক্রিকেট একাডেমি, বনানী ক্রিকেট ক্লাব, নাখালপাড়া ক্রিকেটার্স, মহাখালী ক্রিকেট একাডেমি, ধানমন্ডি ক্রিকেট ক্লাব, প্যাসিফিক ক্রিকেট ক্লাব, স্যাফায়ার স্পোর্টিং ক্লাব এবং আলফা স্পোর্টিং ক্লাব।
ঢাকার ক্লাবগুলো ছাড়াও পাঁচটি জেলার কাউন্সিলরশিপও চূড়ান্ত তালিকায় স্থান পেয়েছে। এ জেলার মধ্যে রয়েছে—সিলেট, বগুড়া, পাবনা, সিরাজগঞ্জ ও নওগাঁ। তবে নরসিংদী জেলার আসন আবারও শূন্য রাখা হয়েছে। ২৩ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত খসড়া তালিকাতেও এই জেলার নাম ছিল না।
চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের মধ্য দিয়ে নির্বাচনী উত্তাপ আরও বেড়ে গেছে। এখন পুরো ক্রিকেট প্রেক্ষাপটের নজর ৬ অক্টোবরের দিকে, যখন এই ভোটাররাই নির্ধারণ করবেন বিসিবির নতুন পরিচালনা পর্ষদের রূপরেখা। নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়া কাউন্সিলররা বলছেন, এটি কেবল ভোট নয়, বরং বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভবিষ্যত ও প্রশাসনিক স্বচ্ছতার সঙ্গে সম্পর্কিত একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিযোগিতা।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, নির্বাচনী তালিকা প্রকাশ হওয়ায় মাঠের রাজনীতি ও নির্বাচনী পরিকল্পনা আরও দৃশ্যমান হবে। সব ক্লাব ও জেলার প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হওয়ায় এবারের বিসিবি নির্বাচন হতে যাচ্ছে দেশের ক্রিকেট প্রশাসনের জন্য এক অন্যতম প্রাসঙ্গিক ও আলোচিত ইভেন্ট। নির্বাচনের প্রস্তুতি ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে কমিশন ইতোমধ্যে বিভিন্ন নির্দেশনা জারি করেছে, যা নতুন নির্বাচিত পরিচালনা পর্ষদের দায়িত্ব কার্যকরভাবে পালন করতে সহায়ক হবে।
সার্বিকভাবে, চূড়ান্ত ভোটার তালিকার প্রকাশের মাধ্যমে বিসিবি নির্বাচন আরও স্বচ্ছ ও সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়ায় এগোচ্ছে। ভোটার ও নির্বাচিত কাউন্সিলরদের জন্য এটি একটি নতুন দিক নির্দেশনার সূচনা, যা আগামী দিনে বাংলাদেশের ক্রিকেট প্রশাসনে প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ