
ছবি: সংগৃহীত
২০২৬ সালের ফুটবল বিশ্বকাপ ঘিরে সমর্থকদের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটলো। অবশেষে ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা আনুষ্ঠানিকভাবে টিকিট বিক্রির কার্যক্রম শুরু করেছে। আগামী তিন ধাপে চলবে টিকিট বিক্রি, আর এর প্রথম ধাপ শুরু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় ১০ সেপ্টেম্বর সকাল ১১টায়। এই ধাপে বিশেষ সুবিধা পাচ্ছেন শুধুমাত্র ভিসা কার্ডধারীরা। তারা ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত টিকিট বুকিংয়ের আবেদন করতে পারবেন।
ফিফার টিকিট বিক্রির ওয়েবসাইট FIFA.com/tickets-এ গিয়ে আবেদন করতে হবে সমর্থকদের। তবে শর্ত হলো, অবশ্যই ভিসা কার্ড থাকতে হবে। যারা ভিসা কার্ডধারী নন, তাদের আবেদন সরাসরি বাতিল হবে। এই ধাপের টিকিট বরাদ্দ সীমিত রাখা হয়েছে, তাই আবেদনকারীদের মধ্য থেকে যাচাই-বাছাই করে নির্দিষ্ট সংখ্যক সমর্থককে টিকিট কেনার সুযোগ দেওয়া হবে।
আবেদন করার শেষ দিন ১৯ সেপ্টেম্বর। এরপর ফিফা আবেদনগুলো পর্যালোচনা করে ২৯ সেপ্টেম্বর আবেদনকারীদের জানাবে কারা নির্বাচিত হয়েছেন। নির্বাচিত সমর্থকরা ১ অক্টোবর থেকে টিকিট সংগ্রহ করতে পারবেন। সেদিন থেকেই আনুষ্ঠানিকভাবে বিক্রি শুরু হবে।
ফিফা জানিয়েছে, বিশ্বকাপের টিকিট নিয়ে সবসময়ই বিপুল চাহিদা থাকে। তাই সমর্থকদের সঠিকভাবে যাচাই করেই টিকিট বিতরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এতে করে যারা সত্যিই বিশ্বকাপের ম্যাচ দেখতে ভ্রমণ করবেন, তারা আগে থেকেই ভিসা, ফ্লাইট, হোটেল বুকিংসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারবেন।
২০২৬ বিশ্বকাপকে সামনে রেখে টিকিট বিক্রির তিন ধাপ নির্ধারণ করেছে ফিফা।
-
প্রথম ধাপ: শুধুমাত্র ভিসা কার্ডধারীদের জন্য (১০–১৯ সেপ্টেম্বর আবেদন, ১ অক্টোবর থেকে টিকিট সংগ্রহ)।
-
দ্বিতীয় ধাপ: নির্দিষ্ট সময় পর ফিফার ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সবার জন্য উন্মুক্ত করা হবে।
-
তৃতীয় ধাপ: বিশ্বকাপ শুরুর আগে শেষ মুহূর্তে সীমিত সংখ্যক টিকিট বিক্রি করা হবে।
এবারের বিশ্বকাপের টিকিটের দাম আগের আসরের তুলনায় কিছুটা বেশি হলেও ফিফা জানিয়েছে, বিভিন্ন ধাপ ও ভেন্যু অনুযায়ী মূল্য ভিন্ন হবে। গ্রুপপর্ব, নকআউট রাউন্ড এবং ফাইনাল ম্যাচের টিকিটের দামের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য রাখা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, সর্বনিম্ন টিকিটের দাম কয়েকশো মার্কিন ডলার থেকে শুরু হবে, আর ফাইনালের টিকিটের দাম কয়েক হাজার ডলারে পৌঁছাতে পারে।
প্রথমবারের মতো তিন দেশ—যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকো যৌথভাবে আয়োজন করছে বিশ্বকাপ। এই কারণে ভেন্যুর সংখ্যাও বেশি। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের শহরগুলো ছাড়াও কানাডার ভ্যাঙ্কুভার ও টরোন্টো এবং মেক্সিকোর মেক্সিকো সিটি, গুয়াদালাহারা ও মন্টেরে শহরে ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। ফলে টিকিটের পাশাপাশি সমর্থকদের ভ্রমণ পরিকল্পনা ও ব্যয়ও বাড়বে।
ঘোষণার পর থেকেই বিশ্বব্যাপী সমর্থকদের মধ্যে উন্মাদনা শুরু হয়েছে। বিশেষ করে ভিসা কার্ডধারীরা দ্রুত টিকিটের আবেদন করতে শুরু করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমর্থকরা লিখছেন, দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর টিকিট বিক্রি শুরু হওয়ায় তারা দারুণ উচ্ছ্বসিত। অনেকেই বলছেন, টিকিট পাওয়া কঠিন হলেও আবেদন করার সুযোগটুকুই বড় আনন্দের।
২০২৬ বিশ্বকাপ হতে যাচ্ছে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় আয়োজন, কারণ এবার অংশ নিচ্ছে ৪৮টি দল। ম্যাচের সংখ্যা ১০৪টি, যা পূর্বের আসরের তুলনায় অনেক বেশি। এর ফলে বিশ্বকাপের টিকিটের চাহিদা হবে অভূতপূর্ব। তাই সমর্থকদের এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে, নাহলে শেষ মুহূর্তে সুযোগ পাওয়া কঠিন হয়ে যাবে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ