
ছবি: সংগৃহীত
সংসদীয় আসনের সীমানা পুনঃনির্ধারণ নিয়ে চলমান প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে দাবি-আপত্তি নিষ্পত্তির পর আগামী ২০ অক্টোবর চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। তিনি বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানান।
ইসি সচিব বলেন, “ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে কমিশন ইতোমধ্যেই আসনসীমা পুনর্বিন্যাসের খসড়া প্রণয়ন করেছে। এখন রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ এবং সাধারণ ভোটারদের পক্ষ থেকে দেওয়া দাবি-আপত্তি যাচাই-বাছাই চলছে। সবকিছু সম্পন্ন হওয়ার পর ২০ অক্টোবর আমরা চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করব।”
তিনি জানান, এবারের খসড়ায় সারাদেশে মোট ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪২ হাজার ৬১৮টি, আর ভোটকক্ষ নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ৪৪ হাজার ৪৬টি। প্রতিটি ৩৫ হাজার ভোটারের জন্য একটি ভোটকেন্দ্র নির্ধারণের নীতি অনুসরণ করা হয়েছে। তার ভাষায়, “ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা বাড়ানো বা কমানো নয়, বরং জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে সঠিকভাবে ভারসাম্য রক্ষা করাই আমাদের মূল লক্ষ্য।”
এর আগে রোববার (৩১ আগস্ট) কমিশন এক বছরে দ্বিতীয়বারের মতো হালনাগাদ ভোটার তালিকা প্রকাশ করে। নতুন তালিকা অনুযায়ী দেশে এখন মোট ভোটার সংখ্যা ১২ কোটি ৬৩ লাখ ৭ হাজার ৫০৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ কোটি ৪১ লাখ ৪৫৫ জন, নারী ভোটার ৬ কোটি ২২ লাখ ৫ হাজার ৮১৯ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার আছেন ১ হাজার ২৩০ জন।
আখতার আহমেদ আরও জানান, নির্বাচনের আগে সর্বশেষ ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে আগামী ৩১ অক্টোবর। এতে নতুনভাবে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার আবেদনকারী এবং বাদ দেওয়ার আবেদনকারীদের তথ্য যাচাই শেষে হালনাগাদ তালিকা অন্তর্ভুক্ত করা হবে। তিনি বলেন, “সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য স্বচ্ছ ভোটার তালিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কমিশন সে লক্ষ্যেই কাজ করছে।”
ইসি সূত্রে জানা গেছে, ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর আগে সব ধরনের প্রশাসনিক ও কারিগরি প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে কমিশন কাজ করছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, আসনসীমা পুনর্নির্ধারণ নির্বাচনের প্রেক্ষাপটকে সরাসরি প্রভাবিত করবে। কারণ অনেক আসনে ভৌগোলিক সীমানা পরিবর্তনের কারণে প্রার্থীদের নির্বাচনী কৌশলে বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে। এ বিষয়ে সচিব বলেন, “আমরা আইনের আওতায় কাজ করছি। সবার মতামত শুনে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। জনগণের আস্থা অর্জনই আমাদের লক্ষ্য।”
সব মিলিয়ে, অক্টোবরের শেষ নাগাদ ভোটার তালিকা ও আসনসীমা দুই ক্ষেত্রেই স্পষ্ট রূপরেখা প্রকাশ করবে নির্বাচন কমিশন। এরপর থেকেই মূলত ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রস্তুতি শুরু হবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহল।
বাংলাবার্তা/এমএইচ