
ছবি: সংগৃহীত
ঢাকায় আজ থেকে শুরু হচ্ছে দুদিনব্যাপী এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (এসিসি) বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম), যা ঘিরে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে নানা ধূম্রজাল ও অচলাবস্থা দেখা দিয়েছিল। ভারতের পক্ষ থেকে আসা বয়কট হুমকি এবং অন্য দেশের অনিশ্চয়তার কারণে সভাটি স্থগিত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত সমস্যাগুলো কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছে ক্রিকেটবিষয়ক সংশ্লিষ্টরা এবং আজ সকালে ঢাকা শহরের একটি পাঁচতারা হোটেলে আনুষ্ঠানিকভাবে সভার উদ্বোধন হবে।
এসিসির চেয়ারম্যান মহসিন নকভি, যিনি একই সঙ্গে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) প্রধান এবং পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, ইতোমধ্যে ঢাকায় পৌঁছে সভায় সভাপতিত্বের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। মহসিন নকভি এসিসির বর্তমান অবস্থান ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎও করেছেন।
ক্রিকেটবিশ্বের জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ক্রিকবাজের তথ্য মতে, ভারতের বয়কটের হুমকির পরেও টেস্ট খেলার দেশগুলোর মধ্যে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সমঝোতা হয়েছে। এতে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, শ্রীলংকা, আফগানিস্তানসহ অন্য অনেক সহযোগী দেশের ক্রিকেট বোর্ডের প্রতিনিধিরা রয়েছে। বিশেষ তথ্য অনুযায়ী, ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের একজন প্রতিনিধি ভার্চুয়াল মাধ্যমে সভায় যোগ দেবেন, যদিও তারা সরাসরি উপস্থিত থাকছেন না।
এর আগে ভারত, শ্রীলংকা ও আফগানিস্তান পাকিস্তানের ঢাকায় এজিএম আয়োজনের বিরোধিতা জানিয়ে বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। ভারতের সঙ্গে সমর্থন প্রকাশ করেছিল ওমানও। তবে চূড়ান্ত পর্যায়ে এসিসির সভাপতি মহসিন নকভি ও বিসিবির মধ্যকার কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় এই অচলাবস্থা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়েছে এবং আজ দুপুর ২টায় আনুষ্ঠানিকভাবে সভা শুরু হবে।
মহসিন নকভির সঙ্গে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সৌজন্য সাক্ষাতে দুই দেশের ক্রীড়া সম্পর্ক আরো জোরদার করার পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বিশেষ করে ক্রিকেট, হকি এবং কাবাডি ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধি ও উন্নয়নের ব্যাপারে গুরুত্ব আরোপ করা হয়। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের পক্ষ থেকেও মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিমান দুর্ঘটনায় হতাহতদের প্রতি গভীর শোক ও সমবেদনা জানানো হয়েছে।
এসিসির চেয়ারম্যান মহসিন নকভি ঢাকায় পৌঁছানোর সময় বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল ফুলের তোড়া দিয়ে তাকে স্বাগত জানান। বিসিবির সভাপতি সাংবাদিকদের বলেন, “এসিসি একটি এশিয়ার ক্রিকেট সংগঠন যেখানে পাঁচটি পূর্ণ সদস্য দেশ এবং ২৫টি সহযোগী দেশ রয়েছে। তারা আমাদের কাছে বার্ষিক সাধারণ সভা আয়োজনের প্রস্তাব এনেছিল এবং আমরা লজিস্টিক সাপোর্ট দিয়ে সাহায্য করছি।”
সভা চলাকালীন এবং শেষে মহসিন নকভির সঙ্গে বিসিবি সভাপতির পৃথক বৈঠকও অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ বৃদ্ধি এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেট বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে। আমিনুল ইসলাম বুলবুল জানান, “যেহেতু মহসিন নকভি পিসিবি প্রধান এবং এসিসিরও সভাপতি, তাই তার সঙ্গে আমাদের আলাদা আলোচনা হবে যাতে দুই দেশের ক্রিকেট সম্পর্ক উন্নত করা যায়।”
সমগ্র দুনিয়ার ক্রিকেটপ্রেমীরা এখন gespannt এই সভার ফলাফল ও সিদ্ধান্তের দিকে নজর রেখেছেন, যা এশিয়ান ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ রূপরেখায় ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে। এসিসি বার্ষিক সাধারণ সভা কেবল ক্রীড়া নয়, রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ এক মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
বিশ্ব ক্রিকেটে দক্ষিণ এশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ এ সংগঠন আগামী দুদিনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে যা আঞ্চলিক ক্রিকেটের গতিপথ নির্ধারণে সহায়ক হবে। বাংলাদেশে সফলভাবে এজিএম আয়োজন ক্রিকেট অঙ্গনের জন্যও একটি ইতিবাচক বার্তা বয়ে আনবে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ