
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশে মুসলমানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদের সঠিক তারিখ নির্ধারণের জন্য আজ সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় (বাদ মাগরিব) গুরুত্বপূর্ণ সভা অনুষ্ঠিত হবে। দেশের সর্বোচ্চ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ইসলামিক ফাউন্ডেশনের আয়োজনে বায়তুল মোকাররমের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় ১৪৪৬ হিজরি সনের জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা নিশ্চিত করা হবে এবং সেই অনুযায়ী পবিত্র ঈদুল আজহার দিন ঘোষণা করা হবে।
গতকাল (২৭ মে) ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়। সভার সভাপতিত্ব করবেন ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন। দেশের আকাশে জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা গেলে তা জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটিকে অবহিত করার জন্য ইসলামিক ফাউন্ডেশন বিভিন্ন টেলিফোন ও ফ্যাক্স নম্বর প্রকাশ করেছে। এছাড়া সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারদেরও এ বিষয়ে রিপোর্ট করার আহ্বান জানানো হয়েছে। যোগাযোগের জন্য নির্ধারিত নম্বরগুলো হলো: ০২-২২৩৩৮১৭২৫, ০২-৪১০৫০৯১২, ০২-৪১০৫০৯১৬, ০২-৪১০৫০৯১৭, এবং ফ্যাক্স নম্বর: ০২-২২৩৩৮৩৩৯৭ ও ০২-৯৫৫৫৯৫১।
বিশেষজ্ঞদের মতে, জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা গেলে বৃহস্পতিবার (২৯ মে) থেকে জিলহজ মাস গণনা শুরু হবে এবং সেই ভিত্তিতে বাংলাদেশে ঈদুল আজহা অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৭ জুন, যা ১০ জিলহজ ১৪৪৬ হিজরি। তবে যদি আজকের সভায় চাঁদ দেখা না যায়, তাহলে জিলকদ মাসের ৩০ দিন পূর্ণ ধরা হবে এবং বৃহস্পতিবার (৩০ মে) থেকে জিলহজ মাস গণনা শুরু হবে। সেই ক্ষেত্রে ঈদুল আজহা পালন হবে আগামী ৮ জুন।
ইসলাম ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী, জিলহজ মাসের ১০ তারিখ মুসলমানরা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে পশু কোরবানি করেন। এ কারণে ঈদুল আজহার সঠিক দিন নির্ধারণের বিষয়টি সবার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এদিকে, সৌদি আরবে ইতোমধ্যে পবিত্র জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা গেছে বলে ঘোষণা করা হয়েছে। ফলে সেখানে আগামী ৬ জুন পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে। এই বছর সৌদি আরবের মক্কায় পবিত্র হজও অনুষ্ঠিত হবে ৫ জুন। সৌদি আরবের এই ঘোষণা মুসলমানদের জন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকে, তবে বাংলাদেশে ধর্মীয় প্রথা মেনে নিজস্ব চাঁদ দেখা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঈদ উদযাপন হয়।
বিশেষজ্ঞ ধর্মগুরু ও মাসিক জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বলেন, “বাংলাদেশের আকাশে চাঁদ দেখা না গেলে ঈদ উদযাপনের তারিখ পিছিয়ে যায়, যা স্থানীয় আবহাওয়া ও আকাশের অবস্থার উপর নির্ভরশীল। দেশীয় পবিত্র দিনের সঠিকতা নিশ্চিত করাই জাতীয় কমিটির প্রধান দায়িত্ব।”
অতীতেও চাঁদ দেখা না যাওয়ার কারণে ঈদ উদযাপনের তারিখ পরিবর্তন হয়েছে। তবে এ বছরেও একই নিয়ম মেনে দেশের সর্বত্র সুষ্ঠু ও ঐক্যমত্যপূর্ণভাবে ঈদ উদযাপন নিশ্চিত করা হবে।
জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভা শেষে ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে সর্বশেষ চাঁদ দেখা এবং ঈদের তারিখ ঘোষণা করা হবে। সকল ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের অনুরোধ জানানো হয়েছে, সভার ঘোষণা এবং পরবর্তী নির্দেশনা সম্পর্কে সর্বক্ষণ নজর রাখার জন্য।
এবারের ঈদ উদযাপন যেন শান্তি, ভ্রাতৃত্ব ও ঈমানের শক্তি নিয়ে আসে—এমন প্রত্যাশা রয়েছে দেশবাসীর। দেশের সব মুসলমান এক সঙ্গে ঈদ উদযাপন করে ধর্মীয় ঐক্য ও সামাজিক বন্ধন আরও মজবুত করবে বলে ধর্মীয় বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।
ঈদুল আজহার সঠিক দিন নির্ধারণের ঘোষণার অপেক্ষায় এখন গোটা দেশের মুসলিম সম্প্রদায়। আজকের সন্ধ্যায় এই ঘোষণা পাওয়ার পর থেকে শুরু হবে কোরবানির পশু কেনাকাটা এবং ঈদের অন্যান্য প্রস্তুতি, যা মুসলমানদের জীবনের অন্যতম আনন্দঘন মুহূর্ত।
বাংলাবার্তা/এমএইচ