
ছবি: সংগৃহীত
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি এগিয়ে যাচ্ছে প্রতিটি দিকে। এরই মধ্যে নির্বাচন কমিশনে দেশের ৩৩১টি স্থানীয় পর্যবেক্ষক সংস্থা নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছে, যা দেশের রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় দেশীয় পর্যবেক্ষকদের চাহিদা ও গুরুত্বের সুস্পষ্ট প্রতিফলন।
২০২৩ সালের ‘নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নীতিমালা’ অনুসারে গতবারের ৯৬টি নিবন্ধিত সংস্থার নিবন্ধন বাতিল হয়ে নতুন করে যোগ্যতা নির্ণয় করে নিবন্ধন দেওয়া হবে। নতুন নীতিমালায় মনোযোগ দেয়া হয়েছে প্রাতিষ্ঠানিক স্বচ্ছতা, পর্যবেক্ষকদের সক্ষমতা, এবং তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিতকরণে। নির্বাচন কমিশনের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বলেন, “আমরা চাই দেশের পর্যবেক্ষকরা আরও বেশি দক্ষ ও স্বচ্ছভাবে দায়িত্ব পালন করুক। সেজন্য কঠোর মানদণ্ড আরোপ করা হয়েছে।”
দেশীয় পর্যবেক্ষকরা ভোটগ্রহণের প্রতিটি ধাপে নির্বাচনী প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে সহায়তা করে। তারা ভোট কেন্দ্রের অবস্থা মনিটর করেন, ভোটারদের অধিকার ও কর্তব্য সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করেন এবং ভোটাভুটি সুষ্ঠু হচ্ছে কিনা তা নিশ্চিত করেন। নির্বাচনী বিশ্লেষক ও রাজনৈতিক বিজ্ঞানী ড. নিশাত আরা বলেন, “দেশীয় পর্যবেক্ষকরা শুধু ভোটের দিন নয়, নির্বাচনের যাবতীয় ধাপে দায়িত্ব পালন করে নির্বাচনের বৈধতা ও গ্রহণযোগ্যতা বাড়ায়। এটা আমাদের গণতন্ত্রের জন্য ইতিবাচক।”
নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ১৩৮টি সংস্থা নিবন্ধিত হয়েছিল। দশম নির্বাচনে এই সংখ্যা কমে ৩৫টি হয়। তবে একাদশ নির্বাচনে আবার বাড়ে ১১৮-এ, যেখানে ২৫ হাজারের বেশি দেশীয় পর্যবেক্ষক ছিল। সর্বশেষ দ্বাদশ নির্বাচনে ছিল ৯৬টি সংস্থা, ২০ হাজার ২৫৬ জন পর্যবেক্ষক। এই তথ্য থেকে দেখা যায় দেশের নির্বাচন প্রক্রিয়ায় পর্যবেক্ষকের ভূমিকা বারবার বেড়েই চলেছে।
নির্বাচন কমিশন আশা করে, নিবন্ধিত ৩৩১ সংস্থা নির্বাচনের দিনকে আরও স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য করবে। তবে পর্যবেক্ষকদের প্রশিক্ষণ, প্রযুক্তি ব্যবহারের প্রশিক্ষণ, এবং কেন্দ্রসমূহে মনিটরিংয়ের জন্য যথাযথ সহায়তা প্রদান জরুরি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. আফসানা রহমান মন্তব্য করেছেন, “নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করতে পর্যবেক্ষকরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাদের সক্ষমতা বাড়ানো ও স্বাধীনতা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।”
বাংলাবার্তা/এমএইচ