
ছবি: সংগৃহীত
ইন্দোনেশিয়ার জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র বালি দ্বীপের কাছাকাছি গতকাল রাতের দিকে একটি ফেরি ডুবে যাওয়ার কারণে অন্তত ৪৩ জনের নিখোঁজ থাকার খবর পাওয়া গেছে। দেশটির জাতীয় উদ্ধারকারী সংস্থা বিএএসএআরএনএএসের তথ্য অনুযায়ী, ফেরিটিতে মোট ৬৫ জন আরোহী ছিলেন, যাদের মধ্যে ৫৩ জন যাত্রী, ১২ জন কর্মী এবং ২২টি যানবাহন ছিল। ফেরিটি পূর্ব জাভার কেতাপাং বন্দর থেকে বালি দ্বীপের গিলিমানুক বন্দরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয় এবং মাত্র আধাঘণ্টার মধ্যে সাগরে ডুবে যায়।
ফেরিটির নাম ‘কেএমপি তুনু প্রতমা জয়া’। বুধবার (২ জুলাই) রাতে যখন ফেরিটি কেতাপাং থেকে গিলিমানুকের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে, তখন এর ভেতর ছিল নানা ধরনের যানবাহন, যার মধ্যে ১৪টি ট্রাক ছিল। জাতীয় অনুসন্ধান ও উদ্ধার সংস্থা জানায়, সাগরের ঢেউ ছিল দুই মিটার পর্যন্ত উচ্চ, যা উদ্ধার কাজকে অত্যন্ত কঠিন করে তোলে।
বানিউয়াঙ্গি জেলার পুলিশপ্রধান রামা সামতামা পুত্রা জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত ২০ জন যাত্রীকে উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে অনেকেই দীর্ঘ সময় সাগরে ভাসার কারণে অচেতন অবস্থায় রয়েছেন। এছাড়াও উদ্ধারকারী দল দুটি মৃতদেহ উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে।
রাত থেকে ইন্দোনেশিয়ার নয়টি উদ্ধারকারী নৌযান ও কর্মী উদ্ধার তৎপরতায় নিয়োজিত রয়েছে। ঘন অন্ধকার এবং উচ্চ ঢেউয়ের কারণে উদ্ধারকাজ জটিলতা ও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এই কারণেই নিখোঁজদের সন্ধান করতে কাজ কিছুটা ধীরগতিতে এগোচ্ছে।
ইন্দোনেশিয়া দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একটি দ্বীপ রাষ্ট্র, যার সীমানায় রয়েছে প্রায় ১৭ হাজার দ্বীপ। এই কারণে সাধারণ মানুষের দ্বীপ থেকে দ্বীপে যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম হচ্ছে ফেরি। তবে অনেক সময় নিরাপত্তার অভাবে ফেরি দুর্ঘটনা ঘটছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতা, অতিরিক্ত যাত্রীবোঝাই এবং আবহাওয়া পরিস্থিতি ফেরি ডুবির কারণ হয়ে থাকে।
ইন্দোনেশিয়ায় নিয়মিত ফেরি দুর্ঘটনার খবর আসে। অতীতে এই ধরনের দুর্ঘটনায় বহু মানুষ নিহত ও নিখোঁজ হয়েছে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ফেরি নিরাপত্তা বৃদ্ধির ওপর চাপ থাকলেও বাস্তবে তা যথেষ্ট বাস্তবায়ন হয় না। ফলে জনসাধারণের নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিত করতে ফেরি সেবা উন্নয়নে বড় ধরনের সংস্কারের প্রয়োজন রয়েছে।
এখন পর্যন্ত উদ্ধারকাজ অব্যাহত রয়েছে এবং নিখোঁজদের সন্ধান তল্লাশির মাধ্যমে চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। সরকার ও উদ্ধার সংস্থা জানিয়েছে, পরিস্থিতি শান্ত হলে এবং আবহাওয়া অনুকূলে এলে আরও দ্রুত উদ্ধার অভিযান চালানো সম্ভব হবে। এছাড়াও, ভবিষ্যতে ফেরি নিরাপত্তা ও পরিচালনায় উন্নয়নের জন্য নতুন নীতিমালা গ্রহণ ও কার্যকর করার পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ