
ছবি: সংগৃহীত
ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেতা জিয়াউল ফারুক অপূর্ব সম্প্রতি অন্তর্জালে ঘটে যাওয়া এক অভিজ্ঞতার কথা জানালেন। ছেলে আয়াশকে নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য ছড়িয়ে পড়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে তিনি খোলামেলা আলোচনা করেন। শুধু একজন অভিনেতা নয়, বরং একজন বাবা হিসেবেও এই বিষয়টি তাকে গভীরভাবে আঘাত করেছে। একই সঙ্গে তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের নেতিবাচক দিকগুলো তুলে ধরেন এবং মানুষ কীভাবে তারকাদের প্রতি আচরণ করে, সেই বাস্তবতাও প্রকাশ করেন।
অপূর্ব বলেন, “আমার ক্যারিয়ারের বিভিন্ন সময়ে দেখেছি, একটি তথ্য বা ঘটনা একভাবে ঘটলেও সেটিকে অন্যভাবে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। এতে অযথা ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয়, মানসিক চাপ তৈরি হয়। আমি বহুবার ভেবেছি এ ধরনের ঘটনার বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় নেব, কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিষয়গুলোকে এড়িয়ে গেছি। তবে ছেলেকে নিয়ে যখন নেতিবাচক মন্তব্য ছড়ানো হলো, তখন প্রথমেই আমি আইনি ব্যবস্থা নিয়েছি। এরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি জানিয়েছি।”
আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সহযোগিতায় যেসব তরুণকে ধরা হয়েছিল, তাদের প্রতি মায়া জন্মেছিল অপূর্বর। তিনি বলেন, “সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুল তথ্য ছড়ানোর জন্য যাদের ধরা হয়েছিল, তারা বয়সে অনেক ছোট। কারও কারও কথা বলার ভঙ্গিও ছিল খুব সরল, অপরিণত। তখন তাদের প্রতি মায়া লাগল। তারা যখন ক্ষমা চাইল, তখন মনে হলো ওদের ছেড়ে দেওয়া উচিত। পরে আমি তাই করেছি। একভাবে দেখলে মনে হয়, এই আক্রমণাত্মক মন্তব্যগুলোও এক ধরনের আবেগ থেকে আসে—কখনও সেটা ভুল বোঝাবুঝির ফল, কখনও অতিরিক্ত ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ।”
অপূর্বর মতে, অনেক তারকাকে কাজের প্রয়োজনে বিদেশে থাকতে হয়। কিন্তু সেটা সবাই বোঝেন না। তিনি বলেন, “প্রবাসীদের মতো আমাদেরও অনেক সময় দেশের বাইরে থাকতে হয়। তখন অনেকেই ভেবে বসেন, আমরা হয়তো ইচ্ছাকৃতভাবে কিছু করছি। বিষয়টি না বুঝেই আবেগ থেকে নানা কথা বলেন। এসব মন্তব্য আমাদের অশান্তি তৈরি করে, বিব্রত করে।”
সবশেষে তিনি বলেন, “আপনাদের ভালোবাসা পেতে আমাদের অনেক পরিশ্রম করতে হয়। সম্মান অর্জন করতে দীর্ঘ সময় লাগে। কিন্তু সেই ভালোবাসা হারাতে বা ভালোবাসা ঘৃণায় পরিণত হতে মাত্র কয়েক সেকেন্ডই যথেষ্ট। আমরা সব সময় চেষ্টা করি আপনাদের সম্মান ও ভালোবাসা ধরে রাখতে। তাই বলছি, দয়া করে ভুল বুঝবেন না।”
যারা গুজব, মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য ছড়ান তাদের উদ্দেশে অপূর্বর মন্তব্য ছিল স্পষ্ট—“ওদের কিছু বলা বা উপদেশ দেওয়া কোনো কাজে আসে না। কারণ এটি অভ্যাসের ব্যাপার। হয়তো তাদেরও কোনো ব্যক্তিগত কারণ আছে। তবে আমি শুধু এটুকু জানি, সত্যই সত্যি থাকবে।”
অপূর্বর এই অভিজ্ঞতা আবারও প্রমাণ করল, জনপ্রিয়তা যেমন মানুষের ভালোবাসা এনে দেয়, তেমনি মুহূর্তেই সেই ভালোবাসা ঘৃণায় পরিণত হতে পারে। আর এর মাঝেই তারকাদের প্রতিদিন মানসিক লড়াই চালিয়ে যেতে হয়।
বাংলাবার্তা/এমএইচ