
ছবি: সংগৃহীত
টালিউডের জনপ্রিয় জুটি দেব-শুভশ্রী তাদের পর্দার বাইরের সম্পর্ক নিয়ে অনেকেই জানেন, তবে সেই সম্পর্কের ভাঙন আর তার পরবর্তী সময়ের কথা শুভশ্রী সম্প্রতি এক রিয়েলিটি শোতে স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন। দীর্ঘ প্রেমের পরে বিচ্ছেদের যন্ত্রণায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন এই অভিনেত্রী। তিনি প্রকাশ্যে নিজের জীবনের সেই কঠিন সময়ের কথা শেয়ার করেছেন, যা ভক্ত এবং টালিউড মহলকে গভীরভাবে স্পর্শ করেছে।
শুভশ্রী জানান, খুব ছোট বয়সেই জীবনের অন্যতম খারাপ সময়ের মুখোমুখি হতে হয়েছিল তাকে। দীর্ঘদিন ধরে দেবের সঙ্গে প্রেম করলেও সেই সম্পর্ক বিচ্ছেদ হয়ে গেলে তিনি মানসিকভাবে খুব একটা কষ্ট পেয়েছিলেন। তিনি নিজেই কাজ থেকে দূরে সরে গিয়েছিলেন কিছু সময়ের জন্য। জি বাংলার জনপ্রিয় রিয়েলিটি শো ‘হ্যাপি প্যারেন্টস ডে’ অনুষ্ঠানে এসে সে সময়ের কথা স্মরণ করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘আমি যখন একদম ছোট ছিলাম, তখনই জীবনের খারাপ সময় দেখেছি। এক সময় কাজ থেকে আমার মন উঠে গিয়েছিল। নিজেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম কাজ ছেড়ে দেব। পরাণ যায় জ্বলিয়া রে ছবির পর একসময় কাজ করাই বন্ধ করে দিয়েছিলাম।’
শুভশ্রীর ভাষায়, বিচ্ছেদের পর তার চারটি বছর নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। সেই মানসিক যন্ত্রণার কথা বাবা-মায়ের সঙ্গে ভাগাভাগি করতে পারেননি তিনি। বাইরে থেকে হাসিখুশি থাকলেও পাঁচ মিনিট অন্তর বাথরুমে গিয়ে কেঁদে ফিরে আসতেন।
তবুও জীবনের সেই কঠিন সময় শুভশ্রীকে ভেঙে দিতে পারেনি। তিনি বলেন, ‘যখন আমার আর কিছু হারানোর ছিল না, তখনই আমি সিদ্ধান্ত নিলাম, যা পাব সেটাই আমার প্রাপ্তি। সেই সময় থেকেই ঈশ্বরের আশীর্বাদে জীবনে সাফল্যের দুয়ার খুলে যায়।’
এই সময় তিনি নিজের শক্তি ও ধৈর্যের সঙ্গে জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু করেন। ভালোবাসা সম্পর্কে তার বিশ্বাস আজও অটুট। শুভশ্রী বলেন, ‘আমি ভালোবাসাকে কখনও অস্বীকার করিনি। ভালোবাসা খুবই সুন্দর একটি অনুভূতি, যদিও কখনও কখনও খারাপ অভিজ্ঞতাও হয়। পৃথিবীর সবাই ভালোবাসার খোঁজে আসে, পেশা, টাকা সব পরে আসে। ভালোবাসা থাকলে সবকিছু সহজ হয়ে যায়।’
বর্তমানে শুভশ্রী পরিচালক রাজ চক্রবর্তীকে বিয়ে করে সুখে সংসার করছেন। ছেলে ইউভানকে নিয়ে তার জীবন এখন আনন্দে ভরা। তবে সম্প্রতি প্রাক্তন প্রেমিক দেবের সঙ্গে ‘ধুমকেতু’ নামের একটি নতুন সিনেমায় কাজ করে ফের একবার পর্দায় হাজির হচ্ছেন এই অভিনেত্রী।
শুভশ্রীর এই জীবনের গল্প যে অসংখ্য মানুষের জন্য প্রেরণা, তা স্পষ্ট। কঠিন সময়কে পরাস্ত করে নিজের জায়গা করে নেওয়া, ভালোবাসার প্রতি অটল থাকা এবং নতুন করে জীবনের পথে হাঁটা—এসবই তার গল্পের মূল মন্ত্র।
শুভশ্রীর অভিজ্ঞতা মনে করিয়ে দেয়, জীবনে যখন মনে হয় আর হারানোর কিছু নেই, ঠিক তখনি সাফল্যের নতুন সূচনা হয়।
বাংলাবার্তা/এমএইচ