
ছবি: সংগৃহীত
ঢাকার উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। ২১ জুলাই দুপুরে সংঘটিত এই দুর্ঘটনায় স্কুল ভবনে আগুন লেগে বহু শিক্ষার্থী নিহত ও আহত হয়েছেন। এই ভয়াবহ ঘটনার পর দেশজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও চলছে শোক এবং ক্ষোভ। এরই মাঝে, জনপ্রিয় কনটেন্ট ক্রিয়েটর ও কার্টুনিস্ট সালমান মুক্তাদির তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) সালমান মুক্তাদির তার ফেসবুক পেজে একটি ভিডিও রিলস শেয়ার করেন, যেখানে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রধান উপদেষ্টা কর্তৃক প্রকাশিত এক অর্থসাহায্যের পোস্ট নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেন। ওই পোস্টটি হতাহতদের জন্য আর্থিক সহায়তা চেয়ে দেওয়া হয়েছিল, তবে পরবর্তীতে সেটি ভেরিফায়েড পেজ থেকে সরিয়ে নেয়া হয়। যদিও কেন পোস্টটি সরিয়ে নেয়া হয়েছে, সে বিষয়ে কোনো বিস্তারিত বিবরণ দেয়া হয়নি।
ভিডিও বার্তায় মুক্তাদির প্রশ্ন তোলেন, “পার্লামেন্টের চেয়ারে যেই বসেন, কি কমন সেন্স হারিয়ে ফেলেন?” তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “কেউ কি সরকারের কাছে কোনো রকম আর্থিক সহায়তা চেয়েছে? কোনো একজন বাবা-মা কি বলেছেন ‘আমাদের টাকা লাগবে’?”
সালমান মুক্তাদির আরও বলেন, “ঘটনার সময় পুরো ব্যবস্থাপনা জনগন নিজেদের ফান্ডিংয়ে করেছে, কেউ কোনো পোস্টের জন্য বসে ছিল না।” তিনি অভিযোগ করেন, “এই কার্টুনিস্ট পার্লামেন্টের কেউ একজন পোস্ট করার আগে একবারও ভাবেননি কেন এবং কী কারণে এই পোস্টটি করা হচ্ছে।”
তিনি এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, “মানুষ আসলে টাকা চেয়েছিল না। মানুষ চেয়েছিল জবাবদিহিতা, স্বচ্ছতা এবং তাৎক্ষণিক কার্যক্রম।”
মুক্তাদির আরও বলেন, “সম্পূর্ণ বিষয়টাকে পাশ কাটিয়ে ৫০ বছরের পুরোনো কথাবার্তা পুনরায় উঠেছে—তহবিল গঠন, তদন্ত কমিটি গঠন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনো সেমিনার হয়নি, কোনো পর্যালোচনা হয়নি যে এই দুর্ঘটনা কেন ঘটলো।”
মাইলস্টোন স্কুলে ঘটে যাওয়া এই বিমান বিধ্বস্ত দুর্ঘটনার কারণে সাধারণ মানুষের মধ্যে গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। দুর্ঘটনার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত পরিবারগুলো সরকারের কাছে সঠিক তথ্য, দ্রুত সহযোগিতা ও দায়বদ্ধতা দাবি করেছেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত ওইসব দাবির বাস্তবায়নে ধীরগতি থাকায় জনমনে হতাশা দেখা দিয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, সরকারী পর্যায়ে ঘটনার যথাযথ জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নেই।
বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টার অফিস থেকে অর্থসাহায্যের জন্য পোস্ট দেওয়ার বিষয়টি অনেকের সমালোচনার ঝড় তুলেছে। তারা প্রশ্ন তুলছেন, এত বিপদ-আপদে মানুষ চায় অর্থ নয়, বরং সঠিক তথ্য ও দোষীদের বিচারের দাবিই তাদের প্রাথমিক দাবি।
বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও সাধারণ নাগরিকরাও এই বিষয় নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন, এই ধরনের ভয়াবহ দুর্ঘটনায় সাধারণ মানুষের অনুভূতি ও দাবি বুঝতে হবে এবং সরকারকে তার দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে হবে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ