
ছবি: সংগৃহীত
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ পাথর কোয়ারি থেকে ব্যাপক হারে পাথর লুট ও চুরির ঘটনায় অবশেষে মামলা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাতনামা ১ হাজার ৫০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। তবে কারও নাম-পরিচয় নির্দিষ্ট করা যায়নি। এতে সারাদেশে আলোচিত এ পাথর লুটের ঘটনায় নতুন করে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উজায়ের আল মাহমুদ আদনান সাংবাদিকদের জানান, খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরোর মহাপরিচালক মোহাম্মদ আনোয়ারুল হাবীব বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। এজাহারে বলা হয়েছে, গত বছরের ৫ আগস্ট থেকে পরবর্তী সময়ে ভোলাগঞ্জের গেজেটভুক্ত সরকারি কোয়ারি থেকে অজ্ঞাত দুষ্কৃতকারীরা কোটি কোটি টাকার পাথর লুট করে নিয়ে যায়। এই ঘটনাগুলো নিয়ে জাতীয় গণমাধ্যমে একাধিক প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়। তবে এ পর্যন্ত জড়িতদের পরিচয় নির্দিষ্টভাবে শনাক্ত করা যায়নি।
লুটের ঘটনায় ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হলে হাইকোর্ট হস্তক্ষেপ করে। আদালত লুট হওয়া পাথর উদ্ধার করে যথাস্থানে প্রতিস্থাপনের নির্দেশ দেন। পাশাপাশি দুষ্কৃতকারীদের তালিকা প্রস্তুত করে আদালতে দাখিল করারও নির্দেশনা দেন। এর পরই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সিলেটসহ বিভিন্ন জেলায় অভিযান শুরু করে।
গত তিন দিনে যৌথ বাহিনীর অভিযানে সিলেটের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রায় ১ লাখ ৯ হাজার ঘনফুট পাথর উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার হওয়া এসব পাথরের মধ্যে শুধু নারায়ণগঞ্জ থেকেই বৃহস্পতিবার রাতে প্রায় ৪০ হাজার মেট্রিক টন পাথর উদ্ধার হয়। এছাড়া জাফলং ও ভোলাগঞ্জ থেকেও বড় আকারের পাথর উদ্ধার করা হয়েছে।
খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরোর একাধিক কর্মকর্তার দাবি, এসব পাথর লুটের কারণে সরকারের কোটি কোটি টাকা রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে। সরকারি কোয়ারি থেকে অনুমতি ছাড়া পাথর উত্তোলন ও পাচার করায় রাষ্ট্রীয় সম্পদ চরমভাবে লুট হয়েছে।
স্থানীয়রা বলছেন, ভোলাগঞ্জ ও জাফলং অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরেই প্রভাবশালী চক্র সরকারি সম্পদ লুট করে আসছে। মামলায় এত বিপুল সংখ্যক আসামি থাকলেও এখনো মূল হোতারা ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে।
মামলা হলেও তদন্ত কতদূর এগোয় এবং প্রকৃত লুটেরারা কতটা আইনের আওতায় আসে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সক্রিয়তা এবং আদালতের তদারকি থাকলে চক্রটির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বাংলাবার্তা/এমএইচ