
ছবি: সংগৃহীত
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ৩০ জুলাই ৩৯টি আসনের সীমানায় পরিবর্তন এনে খসড়া তালিকা প্রকাশ করে। খসড়া প্রকাশের পর থেকে শুরু হয়েছে দাবিনামা ও আপত্তির বন্যা। ইসি সূত্রে জানা গেছে, খসড়া তালিকা প্রকাশের পর ৮২টি আসনকে ঘিরে এক হাজার ৫৯৬টি আবেদন জমা পড়েছে।
ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, সংখ্যাটি আরও কিছুটা বাড়তে পারে। কারণ কিছু আবেদন সরাসরি ইসির সিনিয়র সচিবের দপ্তরে জমা দেওয়া হয়েছে। ফলে আগস্টের শেষ নাগাদ সঠিক হিসাব দাঁড়াবে।
খসড়া তালিকা প্রকাশের পরদিন থেকেই আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে ভিড় জমতে থাকে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীদের সমর্থকদের। বাগেরহাট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, গাজীপুরসহ বেশ কিছু জেলায় আপত্তি বেশি।
বাগেরহাট-৪ আসন বহাল রাখার দাবি তুলেছে বিএনপি নেতারা। তাঁতীদল কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী মনিরুজ্জামান মনির এ বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) সঙ্গে বৈঠকও করেছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলাকে আলাদা আসন না করে আগের মতো ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ এ রাখার দাবি জানিয়ে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা লিখিত আবেদন জমা দিয়েছেন।
ইসির ব্যাখ্যানুযায়ী, দুই আসনবিশিষ্ট জেলা অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে, কারণ ভোটার সংখ্যা বাড়ালে জাতীয় গড় কমে যায়, আবার কমালে অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়।
তিন আসনের জেলা অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে—এক্ষেত্রেও অনুপাতে অসামঞ্জস্য তৈরি হতো।
নতুন বা বিলুপ্ত প্রশাসনিক এলাকা খসড়ায় অন্তর্ভুক্ত বা কর্তন করা হয়েছে।
ভোটার সংখ্যার ব্যবধান সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছে।
গাজীপুর–বাগেরহাটের ভারসাম্য
ইসির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ভোটারের গড় ধরা হয়েছে ৪ লাখ ২০ হাজার ৫০০। গাজীপুরের জনসংখ্যা এ গড়ের অনেক ওপরে চলে যাওয়ায় একটি নতুন আসন বাড়ানো হয়েছে। অন্যদিকে বাগেরহাটে গড়ের নিচে চলে যাওয়ায় একটি আসন কমানো হয়েছে।
এ সিদ্ধান্তে অনেক রাজনৈতিক দল আপত্তি তুলেছে। বিএনপি, আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি—সব দলেরই স্থানীয় নেতারা নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় কমিশনের কাছে দরখাস্ত জমা দিচ্ছেন। বিশ্লেষকদের মতে, আপত্তির এই স্রোত আসন্ন নির্বাচনে সীমানা ইস্যুকে বড় রাজনৈতিক বিতর্কে পরিণত করবে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ