
ছবি: সংগৃহীত
ডেঙ্গু পরিস্থিতি আবারও আলোচনায় এসেছে। কারণ একদিকে হাসপাতালে নতুন রোগী ভর্তির প্রবাহ অব্যাহত থাকলেও, অন্যদিকে শুক্রবার থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দেশে এ রোগে নতুন করে কোনো মৃত্যু ঘটেনি। স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুম থেকে শনিবার (১৬ আগস্ট) পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে—এই সময়ে নতুন করে ২০২ জন ডেঙ্গুরোগী বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের তুলনায় ছাড়পত্র পাওয়া রোগীর সংখ্যা কিছুটা বেশি। এ সময়ে ২৪২ জন সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ঘরে ফিরেছেন। চলতি বছর জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে ছাড়পত্র পেয়েছেন মোট ২৪ হাজার ৫৭০ জন।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, এ বছর ১৬ আগস্ট পর্যন্ত দেশে মোট ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৫ হাজার ৯১২। এর মধ্যে পুরুষ রোগীর সংখ্যা ৫৯ শতাংশ এবং নারী রোগীর সংখ্যা ৪১ শতাংশ। অর্থাৎ, ডেঙ্গুতে পুরুষের আক্রান্ত হওয়ার হার নারীর তুলনায় বেশি।
ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে চলতি বছর এখন পর্যন্ত ১০৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। যদিও গত বছর একই সময়ের চিত্র ছিল ভয়াবহ। ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ১ হাজার ৭০৫ জন প্রাণ হারান। সেই সময় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন রোগী, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে ডেঙ্গু মহামারির সর্বোচ্চ রেকর্ড হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
এদিকে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ আগের বছরের তুলনায় কিছুটা নিয়ন্ত্রণে থাকলেও ঝুঁকি এখনো শেষ হয়নি। বিশেষ করে আগস্ট-সেপ্টেম্বরকে ডেঙ্গুর উচ্চ মৌসুম ধরা হয়। বর্ষা মৌসুমে জমে থাকা পানি ও অপরিকল্পিত শহর ব্যবস্থাপনা এডিস মশার প্রজনন বাড়িয়ে দেয়।
২০২৪ সালের পূর্ণাঙ্গ হিসাব অনুসারে, জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে ১ লাখ ১ হাজার ২১৪ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন এবং মৃত্যুবরণ করেছিলেন ৫৭৫ জন। তুলনামূলকভাবে এ বছর এখনো পরিস্থিতি কিছুটা সহনীয় হলেও জনস্বাস্থ্যবিদরা সতর্ক করেছেন—এডিস মশার নিয়ন্ত্রণে সিটি করপোরেশনসহ স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগ আরও জোরদার করতে হবে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ