
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশের আকাশপথে নতুন এক ইতিহাস লিখতে যাচ্ছে কক্সবাজার। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর সমুদ্র উপকূলবর্তী এই পর্যটন শহরের বিমানবন্দর আনুষ্ঠানিকভাবে আন্তর্জাতিক রূপ পাচ্ছে। আগামী ২ অক্টোবর থেকেই এখান থেকে সমুদ্র ছুঁয়ে আকাশে উঠবে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট। দেশের সবচেয়ে দীর্ঘ রানওয়ের সুবাদে এখানে অবতরণ করতে পারবে বোয়িং ৭৭৭ কিংবা এয়ারবাস এ৩৮০–এর মতো ওয়াইডবডি উড়োজাহাজ।
বিমানবন্দরের সম্প্রসারণ প্রকল্পে রানওয়েতে যোগ হয়েছে নতুন ১,৭০০ ফুট অংশ, যা সম্পূর্ণভাবে নির্মিত হয়েছে সমুদ্রের বুকের ওপর। ফলে রানওয়ের মোট দৈর্ঘ্য দাঁড়িয়েছে ১০,৭০০ ফুট, যা শাহজালাল, শাহ আমানত কিংবা ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের চেয়েও দীর্ঘ।
প্রকল্প কো-অর্ডিনেটর এম. মোশাররফ হোসেন জানিয়েছেন, “রানওয়ের সব ধরনের কাজ শেষ পর্যায়ে। ইতোমধ্যে পেইন্টিং কাজ প্রায় সমাপ্ত। নির্ধারিত সময়ের আগেই এগুলো সম্পন্ন করা সম্ভব হবে।”
যদিও রানওয়ে প্রস্তুত, তবে টার্মিনাল ভবনের কাজ এখনও শেষ হয়নি। যাত্রী অভ্যর্থনা এলাকা, ইমিগ্রেশন ডেস্ক, কনভেয়ার বেল্টসহ গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোর কাজ দ্রুত গতিতে চলছে। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মঈনুদ্দিন জানিয়েছেন, “পুরো কাজ শেষ করতে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় লাগবে। তবে যত দ্রুত সম্ভব তা শেষ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।”
এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ নাফীস ইমতিয়াজ উদ্দিন বলেন, “প্রকল্পের ফলে কক্সবাজার আন্তর্জাতিক মানের এয়ারপোর্টে রূপ নিচ্ছে। তবে শুধু ফ্লাইট চালু করলেই হবে না, সমগ্র কক্সবাজার জুড়ে বিশেষ করে ইনানি ও টেকনাফে নিরাপত্তা ব্যবস্থা শক্তিশালী করা জরুরি।”
কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী খোকা মনে করেন, দ্রুত উদ্বোধন করা হলে পর্যটন শিল্পে বিপ্লব ঘটবে। “শুধু রানওয়ে বা টার্মিনাল নয়, কাস্টমস, ইমিগ্রেশন ও বন্ডেড ওয়্যারহাউস সুবিধা নিশ্চিত করা হলে কক্সবাজার হবে নতুন অর্থনৈতিক হাব।”
২০২১ সালে শুরু হওয়া এই প্রকল্পের মাধ্যমে কক্সবাজার হয়ে উঠছে দেশের চতুর্থ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। এটি চালু হলে সরাসরি আন্তর্জাতিক পর্যটকরা আসতে পারবেন বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকতের শহরে। এর মাধ্যমে পর্যটন, হোটেল-রিসোর্ট ব্যবসা, মৎস্য রপ্তানি, এমনকি আঞ্চলিক বাণিজ্যেও আসবে নতুন দিগন্ত।
বাংলাবার্তা/এমএইচ