
ছবি: সংগৃহীত
রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনার পথ খুলে দিতে যাচ্ছে কক্সবাজারে আয়োজিত একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলন। এ আয়োজনকে বাংলাদেশের জন্য ‘ঐতিহাসিক সুযোগ’ বলে উল্লেখ করেছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা (এনএসএ) এবং প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা বিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. খলিলুর রহমান।
তিনি জানান, জাতিসংঘের উদ্যোগে আগামী ২৫ আগস্ট কক্সবাজারে অনুষ্ঠিত হবে ‘অংশীজন সংলাপ: রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের সম্মেলনে আলোচনার জন্য প্রাপ্ত বার্তা’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সভা। এ সম্মেলনকে ৩০ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের বৃহত্তর রোহিঙ্গা সম্মেলনের প্রস্তুতিমূলক অধিবেশন হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ড. খলিলুর রহমান মনে করিয়ে দেন, কিছুদিন আগে পর্যন্ত রোহিঙ্গা ইস্যু আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রায় উপেক্ষিত হয়ে যাচ্ছিল। বিশ্বের বড় বড় সম্মেলনের এজেন্ডা থেকে বিষয়টি বাদ পড়ে যাচ্ছিল। ঠিক সেই সময়ে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বিশ্ব নেতাদের উদ্দেশে স্পষ্ট ভাষায় আহ্বান জানান, রোহিঙ্গা সংকটের একটি স্থায়ী সমাধান খুঁজে বের করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজন করতে হবে।
বাংলাদেশের এ উদ্যোগকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করে। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হয় সম্মেলন আয়োজনের। ইতোমধ্যে ১০৬টি দেশ এ সম্মেলনের পক্ষে সমর্থন দিয়েছে। ফলে বলা যায়, আন্তর্জাতিক সমর্থনের ক্ষেত্রে এটি একটি শক্তিশালী ভিত্তি তৈরি করেছে বাংলাদেশ।
গতকাল ঢাকায় বিদেশি কূটনীতিকদের উদ্দেশে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে ড. খলিলুর রহমান রোহিঙ্গা পরিস্থিতির সর্বশেষ অবস্থা তুলে ধরেন। ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
এক রাষ্ট্রদূত জানান, “আমরা ইতোমধ্যেই কক্সবাজার সম্মেলনের শিডিউল হাতে পেয়েছি। অংশগ্রহণের জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। এই আলোচনার মাধ্যমে আমরা বুঝতে পারি বাংলাদেশ কতটা গুরুত্ব দিয়ে রোহিঙ্গা ইস্যুটি সমাধান করতে চাইছে।”
জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা আরও বলেন, “যেহেতু রোহিঙ্গারা জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র নয়, তাই তাদের পক্ষে কেউ না কেউ আন্তর্জাতিক পরিসরে তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষা তুলে ধরতে হবে। বাংলাদেশ সেই ভূমিকা পালন করছে। কক্সবাজারের সম্মেলনে আমরা তাদের কণ্ঠস্বর পৌঁছে দেবো।”
তিনি জোর দিয়ে বলেন, কক্সবাজারের সম্মেলন শুধু কূটনৈতিক আয়োজন নয়; এটি ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনা ঠিক করে দেবে। এখান থেকে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের পথ খুঁজে বের করার আন্তর্জাতিক রূপরেখা তৈরি হবে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ