
ছবি: সংগৃহীত
ত্রিদেশীয় অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট সিরিজের গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশের যুবা দল একঝাঁক দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের মাধ্যমে দক্ষিণ আফ্রিকা অনূর্ধ্ব-১৯ দলকে ৫ উইকেটে পরাজিত করেছে। বুধবার হারারেতে অনুষ্ঠিত ম্যাচে বাংলাদেশের তরুণ ক্রিকেটাররা দক্ষতা ও একাগ্রতার প্রদর্শনী দিয়ে মাত্র ৩৭.২ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকাকে অলআউট করে মাত্র ১৪৭ রানে গুটিয়ে ফেলে। বাংলাদেশ দলের জয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৪৮ রান, যা তারা মাত্র ১২৩ বল হাতে রেখে সহজেই পূরণ করে।
এই ম্যাচটিকে সিরিজের ফাইনালের রিহার্সেল হিসেবেই দেখা হচ্ছে। কারণ ইতোমধ্যেই ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনাল নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশের অনূর্ধ্ব-১৯ দল ও দক্ষিণ আফ্রিকা। গ্রুপ পর্বের এই লড়াইয়ে দুই দলই নিজেদের শক্তি প্রমাণ করার পাশাপাশি পরবর্তী চূড়ান্ত খেলায় কৌশল পর্যালোচনা করছিল।
টস জিতে ব্যাট করার সুযোগ পায় দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে ম্যাচের শুরু থেকেই বাংলাদেশের বোলাররা খেলা নিয়ন্ত্রণে আনে। মাত্র ৪৫ রানের মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকা পাঁচ উইকেট হারায়, যা তাদের ব্যাটিং লাইনে বড় ধাক্কা বসায়। প্রোটিয়া দলের ব্যাটসম্যানরা শুরুতেই বাংলাদেশি বোলারদের তোপের সামনে নতজানু হয়।
দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে একাই লড়াই করেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান বান্দিলে এমবাথা, যিনি ৫৯ বল খেলে সংগ্রহ করেন ৩৯ রান। এই ইনিংসের মাধ্যমে দলের সংগ্রহকে প্রায় ১৫০ রানের কাছাকাছি নিয়ে যান তিনি, যা দলের জন্য প্রয়োজনীয় রান ছিল। অন্যদিকে, পল জেমস ৩৩ রান করেন।
তবে শেষ পর্যন্ত পুরো দল মাত্র ১৪৭ রানে অলআউট হয় ৩৭.২ ওভার শেষে। এই সময় বাঁহাতি স্পিনার সঞ্জিত মজুমদার ছিলেন ম্যাচের সেরা বোলার, তিনি মাত্র ৩৯ রানে ৪ উইকেট শিকার করেন। এছাড়া আল ফাহাদ ও সামিউন বশির ২টি করে উইকেট নেন।
টার্গেট তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশের তরুণরা শানান তাদের দক্ষতা। বিশেষ করে সামিউন বশিরের অসাধারণ ব্যাটিং ছিল দলের জয়ের প্রধান চালিকা শক্তি। মাত্র ৩৬ বল খেলে ৬টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৫২ রান করে জয়ের পথ সুগম করেন তিনি। এছাড়া রিফাত বেগ ৪৭ বল খেলে ৪৩ রান করে তার সঙ্গ দেয়।
এই জয়ে বাংলাদেশের অনূর্ধ্ব-১৯ দল ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালের জন্য নিজেদের মনোবল অনেকটা বাড়িয়ে নিয়েছে। প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা এক শক্তিশালী দল, যাদের বিরুদ্ধে এত বড় ব্যবধানে জয় আসা বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য দারুণ সুখবর।
বাংলাদেশি তরুণ ক্রিকেটাররা স্পষ্টতই নিজেরাই প্রমাণ করেছেন যে, তারা সামনের দিনগুলোতে আন্তর্জাতিক মঞ্চেও তাদের ছাপ রাখতে সক্ষম। স্পিন বোলিং ও ব্যাটিংয়ের দিক থেকে দল বেশ সঠিক সমন্বয় ও আত্মবিশ্বাস দেখিয়েছে।
ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকা দুই দলই আরও মনযোগী ও সতর্ক হবে। এই ম্যাচে দুই দল নিজেদের শক্তি ও দুর্বলতা পর্যালোচনা করেছে। টাইগার যুবাদের খেলায় মেধা ও কৌশলের মেলবন্ধন চোখে পড়েছে, যা ভবিষ্যতে বড় জয় এনে দিতে পারে।
ফাইনালের দিনক্ষণ ঘোষণার অপেক্ষায় ক্রিকেট মহল, যেখানে প্রত্যাশিত হবে বাংলাদেশের তরুণরা আবারও নিজেদের সেরাটা দিয়ে মাঠ মাতাবেন।
এই ম্যাচের মাধ্যমে আবারও প্রমাণিত হলো বাংলাদেশের অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট দল আন্তর্জাতিক মানের প্রতিদ্বন্দ্বিতা উপস্থাপন করতে সক্ষম এবং শিগগিরই তাদের থেকে বড় রকমের সাফল্যের প্রত্যাশা করা যায়।
বাংলাবার্তা/এমএইচ