
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের অন্যতম পেসার তাসকিন আহমেদের বিরুদ্ধে বন্ধুকে মারধর ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ উঠেছে। রোববার (২৭ জুলাই) রাজধানীর মিরপুর-১ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে ওই দিন রাতেই মিরপুর মডেল থানায় এ বিষয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন ভুক্তভোগী ব্যক্তি সিফাতুর রহমান সৌরভ।
ভুক্তভোগী সৌরভ দাবি করেছেন, তাসকিন তাকে ফোন করে দেখা করার কথা বলেন। বন্ধুত্বের সুবাদে তিনি কোনো সন্দেহ না করেই নির্ধারিত স্থানে পৌঁছান। কিন্তু সেখানে পৌঁছানোর পর আচমকাই তাসকিন তার ওপর চড়াও হন। অভিযোগে বলা হয়েছে, তাসকিন সৌরভকে একা পেয়ে কিল-ঘুষি মারেন এবং শারীরিকভাবে আঘাত করেন। এরপর তাকে প্রাণনাশের হুমকিও দেন।
ঘটনার পর রাতেই সৌরভ মিরপুর মডেল থানায় হাজির হয়ে বিস্তারিত লিখিত অভিযোগ দেন। থানার একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছে যে, জাতীয় দলের এই ক্রিকেটারের বিরুদ্ধে অভিযোগ সত্য, এবং বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
তবে আনুষ্ঠানিকভাবে থানার কোনো কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি। তারা বলছেন, অভিযোগটি এখনো তদন্তাধীন এবং এ বিষয়ে প্রাথমিক অনুসন্ধান চলছে।
অভিযোগ ওঠার পর তাসকিন আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়। তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। এ বিষয়ে এখনও তার পক্ষ থেকে কোনো বিবৃতি বা প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
পুলিশ সূত্র জানায়, তাসকিন ও সৌরভের মধ্যে পূর্বে ব্যক্তিগত ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। তবে কী কারণে এমন মারধরের ঘটনা ঘটেছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, ব্যক্তিগত কোনো বিরোধ বা ভুল বোঝাবুঝির জেরে এই ঘটনা ঘটতে পারে।
তাসকিন আহমেদ দেশের একজন জনপ্রিয় ক্রিকেটার। বাংলাদেশ জাতীয় দলের হয়ে একাধিক ম্যাচে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখিয়ে তিনি ভক্তদের প্রশংসা কুড়িয়েছেন। মাঠের বাইরে সাধারণত শান্ত-সৌম্য হিসেবে পরিচিত এই পেসারের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠায় অনেকেই বিস্মিত।
তাসকিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠার পরপরই বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। অনেকে হতাশা প্রকাশ করে বলেন, জাতীয় দলের একজন প্রতিনিধির কাছ থেকে এমন আচরণ কাম্য নয়। কেউ কেউ আবার পূর্ণ তদন্ত ছাড়া মন্তব্য করতে নারাজ, তবে তাসকিনের নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, জিডির পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য নেওয়া শুরু হয়েছে। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে বিষয়টি নিয়ম অনুযায়ী পরবর্তী আইনি ধাপে যাবে।
এই ঘটনায় এখনো তাসকিনের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া বা কোনো ব্যাখ্যা না আসায় ধোঁয়াশা রয়ে গেছে। তবে ক্রিকেটার হিসেবে তার ভবিষ্যতের ওপর এর প্রভাব কতটা পড়বে, সেটি নির্ভর করবে তদন্তের ফলাফলের ওপর।
এই মুহূর্তে পুরো ঘটনা ক্রিকেটাঙ্গন থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ, গণমাধ্যম ও প্রশাসনের নজর কেড়েছে। তদন্তে সত্যতা প্রমাণিত হলে তা শুধু তাসকিনের ব্যক্তিগত ইমেজ নয়, জাতীয় দলের ভাবমূর্তিতেও প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
তাসকিন আহমেদ বর্তমানে জাতীয় দলের একটি সফরে না থাকায় ব্যক্তিগত সময় কাটাচ্ছেন বলে জানা গেছে। তবে এই সময়েই এমন একটি গুরুতর অভিযোগ উঠায় বিষয়টি দ্রুত স্পষ্ট করার দাবি উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ