সোমবার নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কথা বলছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের সহকারী প্রেস সচিব বেদান্ত প্যাটেল।
বিএনপির হরতাল-অবরোধে চলমান সহিংসতা গ্রহণযোগ্য নয় বলে জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের সহকারী প্রেস সচিব বেদান্ত প্যাটেল। যুক্তরাষ্ট্র এসব ঘটনাকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছে বলে জানান তিনি। সোমবার (৬ নভেম্বর) নিয়মিত ব্রিফিংয়ে তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, নির্দিষ্ট কোনো রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করে না যুক্তরাষ্ট্র।
গেল ২৮ অক্টোবর বিএনপির সমাবেশ থেকে প্রধান বিচারপতির বাড়িতে হামলা, পুলিশ হত্যার মাধ্যমে সহিংসতা শুরু করেন দলটির নেতাকর্মীরা। এরই ধারাবাহিকতায় টানা হরতাল-অবরোধ কর্মসূচি পালন করে আসছে বিএনপি। এসব কর্মসূচিতে অবরোধকারীরা আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছে অনেক যানবাহন এবং পুড়ে মারা গেছেন পরিবহন শ্রমিক। বিএনপির অনেক নেতাকর্মী এসব আগুন দেয়াসহ সহিংসতার ঘটনায় সরাসরি জড়িত - এমন প্রমাণ এরই মধ্যে পেয়েছে পুলিশ।
সোমবার মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে সময় সংবাদের করা প্রশ্নের জবাবে সহকারী প্রেসসচিব বেদান্ত প্যাটেল জানান, বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক সহিংসতা গ্রহণযোগ্য নয়। এসব ঘটনা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়া জানুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে সৃষ্টি হওয়া পরিস্থিতি নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে বলেও জানান প্যাটেল।
তিনি বলেন, ‘আমরা জানুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় বাংলাদেশের নির্বাচন পরিস্থিতি প্রতিনিয়ত পর্যবেক্ষণ করছি। আমরা যেকোনো সহিংসতার ঘটনাকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। নিয়মিত সরকার, বিরোধী দল, সুশীল সমাজ এবং সংশ্লিষ্ট অন্যদের সঙ্গে কাজ করছি। বাংলাদেশের মানুষের ভালোর জন্য কাজ করতে আমরা তাদের আহ্বান জানাই।’
বেগম খালেদা জিয়ার সাবেক সহকারী প্রেস সচিব মুশফিক ফজল আনসারী বিএনপির পক্ষে প্রশ্ন করলেও বেদান্ত স্পষ্ট করেই বলেন, নির্দিষ্ট কোনো রাজনৈতিক দলকে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন করে না। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে সরকার, বিরোধী দলসহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে ওয়াশিংটন কাজ করছে।
বেদান্ত প্যাটেল বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের কোনো রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করে না। আমরা কোনো দলকে বাড়তি সুবিধা দিই না। এ মুহূর্তে আমরা আসন্ন জানুয়ারির নির্বাচনী পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। আমরা সরকার, বিরোধী দলের নেতা, সুশীল সমাজসহ সব পক্ষের সঙ্গে একযোগে কাজ করার জন্য আলোচনা করছি; যাতে বাংলাদেশের মানুষ উপকৃত হতে পারে।’
যুক্তরাষ্ট্র বরাবরই বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা বলে আসছে। দেশের মানুষের স্বার্থে সব দলকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানানো হয় এ সংবাদ ব্রিফিংয়ে।
এদিকে, সোমবার (৬ নভেম্বর) প্রধানমন্ত্রীর পরিবেশ ও জলবায়ু-বিষয়ক বিশেষ দূত ও ঢাকা-৯ আসনের সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস।
সাবের হোসেন চৌধুরীর বাসায় প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী এই বৈঠকে কী আলোচনা হয়েছে, কোনো পক্ষই তা খোলাসা করেনি।
এর আগে, ৩ নভেম্বর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে ‘রুদ্ধদ্বার’ বৈঠক করেন পিটার হাস। তাদের আলোচনার বিষয়বস্তুও খোলাসা করা হয়নি।
এছাড়া ৩১ অক্টোবর রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে ইসির সঙ্গে বৈঠক করেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত। পরে গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, নির্বাচন ঘিরে রাজনৈতিক সহিংসতা কোনোভাবেই কাম্য নয়। নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলোকে শর্তহীন সংলাপে বসার আহ্বানও জানান তিনি।